মায়াবতী: জীবন, সাফল্য, কেরিয়ার একনজরে!
পুরো নাম
কুমারী মায়াবতী।
জন্ম
১৯৫৬ সালের ১৫ জানুয়ারি নয়াদিল্লিতে।
পরিবার
মায়াবতী অবিবাহিতা।
বাবা – শ্রী প্রভু দাস
মা – শ্রীমতী রাম রাঠি।
রাজনৈতিক দল
বহুজন সমাজ পার্টি।
মায়াবতী সম্পর্কে
রাজনৈতিক মহল তাঁকে চেনে ‘বহেনজি’ নামে। বর্তমানে বহুজন সমাজ পার্টির সুপ্রিমো। চারবার উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৮৪ সালে বসপা-র প্রতিষ্ঠা করেন কাঁসিরাম। সেই সময় থেকেই দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য মায়াবতী। পরবর্তীকালে দলের সভাপতির দায়িত্বও সামলেছেন। বহুজন সমাজ পার্টি অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং অনগ্রসর শ্রেণীর সঙ্গে বহুজন বা দলিতদের উন্নতি, উন্নয়ন এবং কল্যাণের জন্য তৈরি হয়েছিল।
২০১২ সালে উত্তর প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর ৭ মার্চ দলীয় নেতার পদ থেকে ইস্তফা দেন মায়াবতী। তারপর সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার সদস্য নির্বাচিত হন।
মায়াবতীই প্রথম দলিত মহিলা যিনি একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। তিনি দলিতদের আইকন। শুধু উত্তর প্রদেশবাসী নয় জাতীয় রাজনীতিতেও তাঁর পরিচয় ‘বহেনজি’ নামে। দলীয় নেত্রী হিসেবে বহুজন সমাজ পার্টির জন্য বিপুল তহবিল সংগ্রহ করার রেকর্ড রয়েছে তাঁর।
ব্যক্তিগত এবং পেশাদারি পরিচয়
১৯৫৬ সালের ১৫ জানুয়ারি মায়াবতী দিল্লির শ্রীমতী সুচেতা কৃপলানি হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা প্রভু দাস গৌতম বুদ্ধ নগরের বদলপুরে ডাক বিভাবের কর্মী ছিলেন। মা মায়া রাঠি গৃহবধূ। ১৯৭৫ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কালিন্দী মহিলা কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করেন মায়াবতী। ১৯৭৬ সালে গাজিয়াবাদের ভিএমএলজি কলেজ থেকে বিএড করেন। এরপর ১৯৮৩ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করেন এলএলবি।
রাজনীতিতে প্রবেশ
বিএড শেষ করার পর কিছুদিন প্রাইভেট টিউশনি করেছেন মায়াবতী। সেই সময় আইএএস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন। কিন্তু তাঁর জীবন বার বার বাঁক বদল করেছে। ১৯৭৭ সালের কোনও এক সময় মায়াবতীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন কাঁসিরাম। সেই সময় তিনি ছিলেন দলিত রাজনীতির প্রধান মুখ। মায়াবতীর স্বচ্ছ চিন্তাভাবনা এবং কথা বলার ধরনে আকৃষ্ট হন। কাঁসিরাম। বলা যায়, তিনিই মায়াবতীকে রাজনৈতিক গুরু। ১৯৮৪ সালে বহুজন সমাজ পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন কাঁসিরাম। তাঁর দলে যোগ দেন মায়াবতী। ভারতীয় রাজনীতিতে এটাই মায়াবতীর আনুষ্ঠানিক প্রবেশ। ১৯৮৯ সালে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মায়াবতী। ২০০৬ সালে প্রয়াত হন কাঁসিরাম। সন্তানের মতো তাঁর শেষকৃত্য করেন মায়াবতী। উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে এটা ছিল বহুল আলোচিত একটা ঘটনা। কারণ, হিন্দু ধর্মে প্রয়াত ব্যক্তির শেষকৃত্য করেন কোনও পুরুষ। সে দিক থেকে মায়াবতীর এই পদক্ষেপ ছিল লিঙ্গ বৈষম্যের বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদ।
রাজনৈতিক জীবন
১৯৯৫ সালে উত্তরপ্রদেশের তৃতীয় এবং ভারতের প্রথম দলিত মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হয়ে ইতিহাস তৈরি করেন মায়াবতী। ১৯৯৭ সালে দ্বিতীয়বারের জন্য উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হন। ২০০২ সালের ৩ মে তৃতীয়বার উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসেন মায়াবতী। ২০০৭ সালে চতুর্থবার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। একাধিকবার লোকসভা এবং রাজ্যসভার সদস্য হয়েছেন। ২০১২ সালের বিধানসভা ভোটে হারের মুখ দেখে বসপা। এরপর থেকেই ধীরে ধীরে উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে কমতে থাকা ‘মায়া ম্যাজিক’।