advertisement

কংগ্রেস খবর | ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস

ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস

ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস সংক্ষেপে কংগ্রেস পার্টি বা কংগ্রেস ভারতের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল। ১৮৮৫ সালে এই দল প্রতিষ্ঠা করেন অ্যালান অক্টাভিয়ান হিউম। পরবর্তীকালে কংগ্রেস ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। শুধু তাই নয়, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের অন্যান্য ঔপনিবেশিক বিরোধী জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করে।

কংগ্রেস ভারতের দুটি প্রধান রাজনৈতিক দলের একটি। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি। কংগ্রেস একটা ‘বড় তাঁবু’র মতো। ভারতের বিভিন্ন ছোট আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল এর সঙ্গে জোটবদ্ধ। কংগ্রেসের নীতিগত অবস্থান কিছুটা মধ্যপন্থী এবং বাম ঘেঁষা বলে মনে করা হয়। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর কংগ্রেস একটি ক্যাচ-অল এবং ধর্মনিরপেক্ষ দল হিসেবে আবির্ভূত হয়। পরবর্তী ২০ বছর ধরে ভারতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেসেরই আধিপত্য ছিল। পার্টির প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু, পরিকল্পনা কমিশন তৈরি, পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রবর্তন, একটি মিশ্র অর্থনীতি বাস্তবায়ন এবং ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমাজতান্ত্রিক নীতিগুলিকে সামনে রেখে কংগ্রেসকে নেতৃত্ব দেন। নেহরুর মৃত্যুর পর লাল বাহাদুর শাস্ত্রী স্বল্প মেয়াদে দায়িত্ব সামলান।

স্বাধীনতার পর থেকে ১৭টি লোকসভা নির্বাচনে ৭ বার একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে কংগ্রেস। ৫৪ বছরেরও বেশি সময় দেশের ক্ষমতা ছিল তাদের হাতে। কংগ্রেস পার্টি থেকে ৬ জন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। প্রথমজন জওহরলাল নেহরু (১৯৪৭ থেকে ১৯৬৪) এবং শেষতম মনমোহন সিং (২০০৪ থেকে ২০১৪)।

১৯৬৯ সালে কংগ্রেসে ভাঙন শুরু হয়। পছন্দের নেতা নিয়ে কংগ্রেস (আর) গঠন করেন ইন্দিরা গান্ধি। বাকি কংগ্রেস পরিচিত হয় কংগ্রেস (ও) নামে। ১৯৭১ সালের লোকসভা ভোটে বিপুল আসনে জয়ী হয় ইন্দিরা গান্ধির কংগ্রেস (আর)। কিন্তু ভাঙন রোধ করা যায়নি। ১৯৭৯ সালে তৈরি হয় কংগ্রেস (আই)। ১৯৮১ সালে এই দলটাকেই নির্বাচন কমিশন কংগ্রেস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। রাজীব গান্ধির নেতৃত্বে ১৯৮৪ সালের লোকসভা ভোটে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে কংগ্রেস। কিন্তু ১৯৮৯ সালে ন্যাশনাল ফ্রন্টের কাছে হেরে যায়। পরবর্তীকালে পিভি নরসিমা রাও-এর নেতৃত্বে ফের ক্ষমতা দখল করে কংগ্রেস। তাঁর হাত ধরেই উদার অর্থনীতির দিকে যাত্রা করে দেশ।

এরপর থেকে কংগ্রেসের ওঠা-নামা চলতেই থাকে। ১৯৯৬ সালের লোকসভা ভোটে ফের হারের মুখ দেখতে হয়। ক্ষমতা দখল করে ন্যাশনাল ফ্রন্ট। দীর্ঘ ৮ বছর পর ২০০৪ সালে মনমোহন সিংয়ের নেতৃত্বে লোকসভা ভোটে জয় হাসিল করে ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স (ইউপিএ)। ২০০৯-এর লোকসভা ভোটেও জয় ধরে রাখে কংগ্রেস। সঙ্গে তৈরি হয় রেকর্ড। ১৯৬২ সালে নেহরুর পর মনমোহন সিংই একমাত্র কংগ্রেসি প্রধানমন্ত্রী যিনি সম্পূর্ণ পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ করার পরে পুনরায় নির্বাচিত হন। তবে ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে রীতিমতো ভরাডুবি হয় কংগ্রেসের। ৫৪৩ লোকসভা সিটের মাত্র ৪৮ আসনে জেতেন কংগ্রেস সাংসদরা।

কংগ্রেস ধর্মনিরপেক্ষ দল। সামাজিক ইস্যুতে তারা সমান সুযোগ, স্বাস্থ্যের অধিকার, নাগরিক স্বাধীনতা, মিশ্র-বাজার অর্থনীতি এবং একটি শক্তিশালী কল্যাণকর রাষ্ট্র নির্মাণের পক্ষে। কংগ্রেস সমসাময়িক অর্থনৈতিক সংস্কারকে সমর্থন করে যেমন উদারীকরণ, বিশ্বায়ন এবং কৌশলগত বিনিয়োগ। আইএনসি গঠনের পর থেকে মোট ৬১ জন এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এঁদের মধ্যে সোনিয়া গান্ধি সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদে সভাপতি ছিলেন।

আরো দেখুন …

সব খবর

advertisement
advertisement