পুরো নাম: ইরফান খান পাঠান
জন্ম: ২৭ অক্টোবর , ১৯৮৪
উচ্চতা: ৬ ফুট ১ ইঞ্চি
জাতীয়তা: ভারতীয়
ক্রীড়াবিদ: অল-রাউন্ডার / বাম-হাতি ব্যাটসম্যান এবং বাম-হাত মিডিয়াম ফাস্ট
পিতা: মেহমুদ খান পাঠান
মাতা: সামিয়াম্বানু পাঠান
স্ত্রী: সাফা বেগ
দাদা: ইউসুফ পাঠান
ইরফান পাঠান হলেন এক জন ভারতীয় ক্রিকেটার। ১৯৮৪ সালের ২৭ অক্টোবর গুজরাতের বরোদায় তার জন্ম হয় তাঁর। প্রাথমিক ভাবে একজন বোলার হলেও বেশ কয়েকটি ম্যাচে ব্যাট হাতেও বেশ কিছু দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছেন তিনি।
মাত্র ১৩ বছরে বয়সেই জুনিয়র ক্রিকেটে নির্বাচকদের নজরে পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। বরোদার হয়ে অনূর্ধ্ব-১৪, অনূর্ধ্ব-১৫, অনূর্ধ্ব-১৬ এবং অনূর্ধ্ব-১৯ দলে প্রতিনিধিত্ব করেছেন ইরফান। এমনকী তিনি ভারতের অনূর্ধ্ব-১৫ দলের হয়েও খেলেছেন। ব্যাট এবং বল উভয় ক্ষেত্রেই দুর্দান্ত দক্ষতার অধিকারী ছিলেন এবং দিন-দিন তাঁর পারফরমেন্স আরও ভাল হতে থাকে। এর পর তাঁকে অনূর্ধ্ব-২২ দলে সুযোগ দেওয়া হয়। সৌরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ৭১ রান দিয়ে ৪ উইকেট-সহ ৪৪ রান করেন ইরফান।
২০০৩ সালে ১২ ডিসেম্বর অ্যাডিলেডে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট ম্যাচে ইরফান পাঠানের আন্তর্জাতিক ময়দানে অভিষেক হয়। ওই ম্যাচে তিনি সে-রকম ভালো খেলতে পারেননি। ১৬০ রান দিয়ে মাত্র ১টি উইকেট নেন এবং ম্যাচে মাত্র ১ রান করেন। ফলে পরের ম্যাচে বাদ পড়েন তিনি। পরে আরও দুটি টেস্ট ম্যাচে খেলার সুযোগ পান, কিন্তু আবারও ১০৬ রান দিয়ে মাত্র ৩টি উইকেট নেন। এর পর অস্ট্রেলিয়া এবং জিম্বাবোয়ে-সহ ত্রি-দেশীয় ওয়ান-ডে সিরিজে ভারতের হয়ে খেলে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেন ইরফান পাঠান। এই সিরিজে তিনি ১৬টি উইকেট নিয়েছিলেন। জিম্বাবোয়ের বিপক্ষে ২৪ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেওয়ার পর তিনি তাঁর কেরিয়ারের প্রথম ম্যান অফ দ্য ম্যাচ-এর শিরোপা লাভ করেন।
ইরফান পাঠানের একাধিক রেকর্ড রয়েছে। ২০০৫ সালে জিম্বাবোয়ের বিপক্ষে ২ টেস্টের সিরিজে তিনি ২১টি উইকেট নিয়েছিলেন। ইরফান পাঠানই তৃতীয় ভারতীয় বোলার, যিনি এই রেকর্ড গড়েছেন। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে তাঁর ৮৩ রানের দ্রুত ফায়ার ইনিংস ভারতের মোট রানকে ৩৫০-এ নিয়ে যায়। এ-ছাড়াও এই সিরিজের অন্যান্য ম্যাচে তিনি ৩৭ রানে ৪ উইকেট এবং ৩৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন। দুটি ম্যাচেই তাঁকে ম্যান অফ দ্য ম্যাচ করা হয়। ২০০৭ সালের টি২০ বিশ্বকাপ জয়ী দলের ছিলেন ইরফান পাঠান।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকে তার পারফরমেন্স ধারাবাহিক ছিল না। দল থেকে বাদ পড়ার পর ফের নির্বাচকরা তাঁকে ডাকতে বাধ্য হয়। কিন্তু তাঁর খারাপ ফর্মের কারণে তাঁকে বারবার দলের বাইরেই থাকতে হয়। ইরফান ভারতীয় দলে কয়েক বার সুযোগ পেয়েছিলেন, কিন্তু তা বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। তাঁর ঘরোয়া পারফরমেন্সও তেমন দুর্দান্ত ছিল না। তিনি সর্বশেষ জাতীয় দলের হয়ে ২০১২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে একটি টি-টোয়েন্টি খেলেছিলেন।
২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি ইরফান পাঠান সমস্ত রকমের ক্রিকেট ফরম্যাট থেকে অবসর নেন। আর অবসরের পর তিনি ক্রিকেট বিশ্লেষক হিসেবে ক্রিকেট কমেন্ট্রি করেন। ইতিমধ্যেই তামিল অ্যাকশন-থ্রিলার ছবি কোবরা-য় অভিনেতা হিসেবে ডেবিউ করেছেন এই ক্রিকেটার।