পুরো নাম: যুবরাজ সিং
জন্ম: ১২ ডিসেম্বর, ১৯৮১
উচ্চতা: ৬ ফুট
জাতীয়তা: ভারতীয়
ক্রীড়াবিদ: অল রাউন্ডার / বাম-হাতি ব্যাটসম্যান এবং স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স
পিতা: যোগরাজ সিং
মাতা: শবনম সিং
স্ত্রী: হ্যাজেল কিচ
সন্তান: ওরিয়ন কিচ সিং (পুত্র)
যুবরাজ সিং হলেন এক জন ভারতীয় ক্রিকেটার, যিনি ১৯৮১ সালের ১২ ডিসেম্বর এক পঞ্জাবি শিখ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর বাবা যোগরাজ সিং হলেন প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার। ফলে বাবার কাছে খুব ছোট বয়স থেকেই কঠোর অনুশীলন এবং অধ্যবসায়ের মধ্যে দিয়েই শুরু হয় তাঁর প্রশিক্ষণ। মাত্র ১৩ বছর বয়সে তিনি পঞ্জাব অনূর্ধ্ব-১৬ দলে যোগ দেন এবং পরে পঞ্জাব অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে খেলার সুযোগ পান। ১৯৯৭ সালে ফার্স্ট-ক্লাস ক্রিকেটে তাঁর অভিষেক ঘটে। মূলত হার্ড-হিটিং ব্যাটিংয়ের জন্যই বিখ্যাত যুবরাজ সিং। এক সময় ভারতীয় দলের অন্যতম মূল স্তম্ভ ছিলেন তিনি। ব্যাটিং থেকে শুরু করে বোলিং – সবেতেই পারদর্শী ছিলেন যুবরাজ। তাঁর কেরিয়ার ছবির চিত্রনাট্যের চেয়ে কিছু কম নয়। ২০১১ সালের বিশ্বকাপে ম্যান অফ দ্য টুর্নামেন্ট অ্যাওয়ার্ড, ক্যানসার এবং মারণ রোগকে হারিয়ে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে ফের মাঠে নামা – এ যেন এক কিংবদন্তী আখ্যান।
শ্রীলঙ্কার অনূর্ধ্ব-১৯-এর বিপক্ষে ৫৫ বলে ৮৯ রান করে যুবরাজের কেরিয়ারের প্রথম সাফল্য আসে। ২০০০ সালে তিনি অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পান। এই টুর্নামেন্টে ভারত জয়ী হয় এবং যুবরাজ সিং তাঁর দুর্দান্ত অলরাউন্ড পারফরমেন্সের জন্য ম্যান অফ দ্য টুর্নামেন্টের শিরোপা লাভ করেন।
অনূর্ধ্ব-১৯ টুর্নামেন্টের পরেই তিনি আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের হয়ে খেলার সুযোগ পান। ২০০১ এবং ২০০২ সালে রান কম করার কারণে দল থেকে বাদ পড়ার পর যুবরাজ একই বছরে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে দুটি দুর্দান্ত ইনিংস খেলে ফের দলে জায়গা করে নেন।
২০০২ সালের ন্যাটওয়েস্ট সিরিজে বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়া খেলায় তিনি মাত্র ১৯ বলে ৪০ রান করেন। এই সিরিজের ফাইনালে ভারত ১৪৬ রানে ৫ উইকেট হারায়। এর পর মহম্মদ কাইফের সঙ্গে পার্টনারশিপে রান হাঁকাতে শুরু করেন যুবরাজ। এই জুটি ১২১ রান করে। যার ফলে ফাইনালে ভারতের জয় নিশ্চিত হয়। পল কলিংউডের হাতে ক্যাচ দিয়ে যুবরাজ ৬৯ (৬৩) রানে আউট হন। এই ফাইনালকে এখনও পর্যন্ত ভারতের অন্যতম সেরা ওয়ান-ডে বলে মনে করা হয়।
তাঁর বহুমুখী পারফরমেন্সের পর ২০০৭ সালের বিশ্বকাপের জন্য এমএস ধোনির ডেপুটি অর্থাৎ ভাইস-ক্যাপ্টেন হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। এই টুর্নামেন্টে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে একটি ম্যাচে স্টুয়ার্ট ব্রডকে এক ওভারে ৬টি ছক্কা মেরে রেকর্ড গড়ার পাশাপাশি দেশ-সহ গোটা বিশ্বকে চমকে দেন যুবরাজ। শক্তিশালী দল অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে মাত্র ৩০ বলে ৭০ রান করে ভারতকে ফাইনালের দোরগাোড়ায় পৌঁছে দিতে সাহায্য করেছিলেন। এই টুর্নামেন্টের পর ২০১১ সালের বিশ্বকাপে ৩০০ রান করে এবং ১৫টি উইকেট নিয়ে ভারতের জয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাঁকে ম্যান অফ দ্য টুর্নামেন্টের শিরোপা দেওয়া হয়।
যুবরাজ সিংয়ের ক্যানসার টিউমার ধরা পড়ে। ২০১১ সালের বিশ্বকাপ চালকালীনই আচমকা তাঁর রক্তবমি শুরু হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে কেমোথেরাপি নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি। ফের ব্লু জার্সিতে মাঠে নামলেও আগের সেই যুবরাজকে আর দেখা যায়নি।
২০১২ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতির হাত থেকে অর্জুন পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি।
২০১৪ সালে পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত হন যুবরাজ সিং।