advertisement

তৃণমূল কংগ্রেস

তৃণমূল কংগ্রেস

অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস বা তৃণমূল ভারতীয় রাজনৈতিক দল। তৃণমূলের প্রভাব প্রতিপত্তি মূলত পশ্চিমবঙ্গে। তবে দেশের অন্যান্য রাজ্যেও সংগঠন বিস্তারের চেষ্টা করছে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ২০১১ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গে সরকার চালাচ্ছে তৃণমূল। বর্তমানে লোকসভায় ২৩, রাজ্যসভায় ১৩ এবং রাজ্য বিধানসভায় ২৩৫ বিধায়ক নিয়ে তারাই সংসদের তৃতীয় বৃহত্তম দল। বিজেপি এবং কংগ্রেসের ঠিক পরেই। ২০১৬ সালে নির্বাচন কমিশন তৃণমূলকে জাতীয় রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

প্রতিষ্ঠা পর্ব: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২৬ বছরেরও বেশি সময় কংগ্রেসের সদস্য ছিলেন। কিন্তু শেষ দিকে মনোমালিন্য হওয়ায় কংগ্রেস ত্যাগ করে ১৯৯৮ সালে তৃণমূল প্রতিষ্ঠা করেন। তৃণমূলের নির্বাচনি প্রতীক জোড়া ঘাসফুল (ঘাসের সঙ্গে দুটি ফুল)। ১৯৯৮ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল ৭টি আসন জিতেছিল। ১৯৯৯-এর নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে ৮টি আসন জেতে। ২০০০ সালে কলকাতা মিউনিসিপ্যাল নির্বাচনে জয়লাভ করে মমতার দল।

তৃণমূল গঠনের পর ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স বা এনডিএ-তে যোগ দেন মমতা। তৎকালীন বাজপেয়ী সরকারের অংশ হয় তৃণমূল। ১৯৯৮ সালের নির্বাচনে ৭টি লোকসভা আসন জেতে। পশ্চিমবঙ্গে ২০০১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে তৃণমূল। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে ৬০টি আসন জেতে। কিন্তু ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হয়।

নন্দীগ্রাম আন্দোলন: ২০০৬ সালের ডিসেম্বর। হলদিয়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ একটি নোটিস জারি করে। সেখানে বলা হয়, নন্দীগ্রামে রাসায়নিক প্ল্যান্ট তৈরির জন্য ৭০,০০০ মানুষকে জমি ছেড়ে দিতে হবে। তৃণমূলের নেতৃত্বে এই জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে সাধারণ মানুষ। তৈরি হয় ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি। ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ আন্দোলনরত গ্রামবাসীদের উপর গুলি চালায় পুলিশ। ১৪ জনের মৃত্যু হয়। নিখোঁজ আরও অনেক। বিভিন্ন সূত্রে দাবি করা হয়, সিপিআইএমের ক্যাডাররা পুলিশের সঙ্গে মিশে নন্দীগ্রামের বিক্ষোভে গুলি চালায়। এই ঘটনা নড়ে যায় গোটা বঙ্গসমাজ। বুদ্ধিজীবীরা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেন। এই ঘটনা তৎকালীন বাম সরকারের বিরুদ্ধে জনমত তৈরিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিল। পরবর্তী নির্বাচনে তৃণমূলের সাফল্যের প্রধান কারণও এটাই।

নন্দীগ্রাম পরবর্তী সিঙ্গুর নির্বাচন: ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বাঁধে তৃণমূল। ১৯টি আসন জেতে মমতার দল। মনমোহন সিং সরকারে রেলমন্ত্রী হন মমতা। এর পরের বছর অর্থাৎ ২০১০ সালের কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে ১৪১টি আসনের মধ্যে ৯৭টি আসন দখল করে তৃণমূল। অন্যান্য পুরসভাতেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা হাসিল করে।

এবার সরকারে: ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটে। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায় আসে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট। বিধানসভার ২৯৪টি আসনের মধ্যে ২২৭টিতে জয় হাসিল করে তারা। তৃণমূল একাই জেতে ১৮৪টি আসন। পরবর্তীকালে বসিরহাটের একটি উপনির্বাচনে জয় লাভ করে তৃণমূল। কংগ্রেসের ২ বিধায়ক তৃণমূলে চলে আসেন। ফলে মমতার দলের বিধায়ক সংখ্যা দাঁড়ায় ১৮৭। মমতা সেই সময় সাংসদ। বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেননি। তৃণমূলের বিপুল জয়ের পর তিনি ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে জিতে এসে মুখ্যমন্ত্রী হন।

আরো দেখুন …

সব খবর

advertisement
advertisement