মহেন্দ্র সিং পানসিংহ ধোনি: জীবন, পুরস্কার, কেরিয়ার এক ঝলকে
পুরো নাম
মহেন্দ্র সিং পানসিংহ ধোনি
জন্ম
৭ জুলাই, ১৯৮১
জন্মস্থান
রাঁচি, বিহার
উচ্চতা
১.৭৮ মিটার
জাতীয়তা
ভারতীয়
ক্রীড়াবিদ
ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার
ডানহাতি (ব্যাটিং)
ডানহাতি মিডিয়াম (বোলিং)
পরিবার
স্ত্রী: সাক্ষী ধোনি
কন্যা: জিভা ধোনি
কেরিয়ারের সূচনা
প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক এমএস ধোনি ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
১৯৯৮ সালে তিনি সেন্ট্রাল কোল ফিল্ডস লিমিটেড (সিসিএল) দলের জন্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত তিনি স্কুল ক্রিকেট দল এবং ক্লাব ক্রিকেটের হয়ে খেলেছেন। তাঁর দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সাহায্যে তিনি সিসিএল-এর জন্য নির্বাচিত হন। দেবল সহায় তাঁর নিষ্ঠা ও ক্রিকেটীয় দক্ষতায় মুগ্ধ হয়ে বিহার দলে তাঁর নির্বাচনের জন্য চাপ দেন। ১৯৯৯-২০০০ মরসুমের জন্য তিনি ১৮ বছর বয়সে সিনিয়র বিহার রঞ্জি দলে নির্বাচিত হন।
তবে এরপরও তিনি পূর্বাঞ্চলের অনূর্ধ্ব-১৯ স্কোয়াড (সিকে নাইডু ট্রফি) বা ভারতের বাকি স্কোয়াড (এমএ চিদাম্বরম ট্রফি) এর জন্য নির্বাচিত হননি।
খেলার প্রেক্ষাপট
ক্রিকেটের ইতিহাসে এমএস ধোনিই একমাত্র অধিনায়ক যিনি সমস্ত আইসিসি ট্রফি জিতেছেন। কিংবদন্তী এই ক্রিকেটারের জন্ম ৭ জুলাই, ১৯৮১ সালে বিহারের রাঁচিতে (বর্তমান ঝাড়খণ্ড) এক হিন্দু রাজপুত পরিবারে।
তাঁর বাবা পান সিং উত্তরাখণ্ড থেকে রাঁচিতে চলে আসেন এবং মেকনে জুনিয়র ম্যানেজমেন্ট পদে কাজ করেন। রাঁচিতে তাঁর স্কুলে পড়ার সময় থেকেই তিনি ব্যাডমিন্টন, ফুটবল এবং ক্রিকেটের মতো একাধিক খেলায় দক্ষতা অর্জন করেন।
ধোনি ১৯৯৫-৯৮ সালে কমান্ডো ক্রিকেট ক্লাবে দুর্দান্ত উইকেট-রক্ষক হিসেবে দক্ষতা দেখিয়েছিলেন। ১৯৯৭-৯৮ সেশনের জন্য ভিনু মানকদ ট্রফি অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য তাকে মনোনীত করা হয়। হাই স্কুল শেষ করার পর ধোনি ক্রিকেটে মনোযোগ দেন।
এরই মাঝে তিনি ২০০১-২০০৩ সালে পশ্চিমবঙ্গে দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ের অধীনে খড়গপুর রেলওয়ে স্টেশনে টিকিট পরীক্ষক হিসেবেও কাজ করেন।
অভিষেক
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার দীপ দাশগুপ্তের জায়গায় ডাক পড়ে ধোনির। সেটা দলীপ ট্রফির ফাইনাল। টিআরডিডব্লিউ-এর মাধ্যমে প্রকাশ পোদ্দার জাতীয় ক্রিকেট একাডেমিতে ধোনির নির্বাচনের জন্য একটি রিপোর্টও পাঠান।
উত্থান
এরপর জিম্বাবোয়ে এবং কেনিয়া সফরের জন্য ধোনিকে ভারত-এ দলে নির্বাচন করা হয়। কেনিয়া, ভারত-এ এবং পাকিস্তান-এ দলের ত্রিদেশীয় প্রতিযোগিতায় তাঁর পারফরম্যান্স ছিল দেখার মতো। পাকিস্তান-এ দলের বিরুদ্ধে তাঁর অর্ধ-শত রান ধোনির ক্রিকেট জীবনের উত্থানে সাহায্য করে। ওই ম্যাচে ভারতীয় দলকে ২২৩ রানের লক্ষ্য পূরণে সাহায্য করেছিলেন ধোনি। তাঁর চমৎকার পারফরম্যান্স ভারতীয় ক্রিকেট দলের তৎকালীন ক্যাপ্টেন- সৌরভ গাঙ্গুলী, রবি শাস্ত্রী প্রমুখের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল।
পরে ২০০৪-০৫ সালে ভারত-এ দলের হয়ে ধোনি বাংলাদেশ সফরের জন্য একদিনের আন্তর্জাতিক দলে নির্বাচিত হন। অভিষেক ম্যাচ অবশ্য তাঁকে শূন্য রানে ফিরতে হয়। বাংলাদেশের বিপক্ষে তেমন ভাল খেলা না দেখাতে পারলেও ধোনিকে পাকিস্তানের বিপক্ষে একদিনের সিরিজের জন্য শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করা হয়। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে, ধোনি ১২৩ বলে ১৪৮ রান করেন এবং ভারতীয় উইকেট-রক্ষকের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েন।
এরপর আর তাঁকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ধোনিকে ওয়ানডে দলের সহ-অধিনায়ক মনোনীত করা হয়েছিল। ২০০৭ সালের জুনে ধোনি বিসিসিআই থেকে এ গ্রেডের মনোনয়ন পান। ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টি ম্যাচের জন্য ধোনি ভারতীয় দলের অধিনায়ক নির্বাচিত হন। ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে, ধোনি তাঁর অনুপ্রেরণা অ্যাডাম গিলক্রিস্টের সঙ্গে একদিনের আন্তর্জাতিক এক ইনিংসে সর্বাধিক উইকেট নেওয়ার রেকর্ড গড়েন। বিশ্বকাপ এবং টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ধোনির অধিনায়কত্ব সমগ্র বিশ্ব ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে এক স্মরণীয় মুহূর্ত হিসেবে আজও অটুট রয়েছে।