হুগলি জেলায় ব্যান্ডেল, রাজহাট, চন্দননগর, মানকুন্ডু ও বলাগড় জুড়ে আম উৎপাদন হয়। হুগলির হিমসাগরের জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। খেতে যেমন সুস্বাদু দেখতেও সুন্দর। এছাড়াও সরি, ল্যাংড়া, গোলাপখাস ও মোহন ভোগের রঙ বাহারি আমের বাজার রয়েছে এখানে। এই আমের এই রাজ্যেই নয় ভিন্ন রাজ্য ও বিদেশেও পাড়ি দেয়। মূলত পোলবার গোটু ও বলাগড়ের বাজার থেকে কয়েকশো টন আম রফতানি হয়। মালদার আমের আগে হুগলির আম উৎপাদন হওয়ার কারণে কলকাতার বাজারে চাহিদা থাকে প্রতি বছর। কিন্তু এবছর ফলনের তুলনায় আমের দাম কম রয়েছে বলে দাবি চাষি ও ব্যবসায়ীদের। বিশেষ করে ভিন্ন রাজ্যে ও চাহিদা কম রয়েছে এবছর।
advertisement
আরও পড়ুন: অপারেশন সিঁদুরে ঘুম উড়েছে পাকিস্তানের, এদিকে ৬৩ বছর বয়সী বৃদ্ধ যা করলেন, শুনলে স্যালুট জানাবেন
হুগলি জেলায় পোলবার সুগন্ধা বাজারে, গোটু পাইকারি বাজারে হিমসাগর ২৫ টাকা, চ্যাটার্জি ২০ টাকা, সরি ২৫, ল্যাংড়া ৩২ থেকে ৩৫ টাকা, আঁটির আম ১৫ টাকা থেকে ২০ টাকার মধ্যে। গোলাপ খাস ৫০ টাকা। শেওড়াফুলি নিয়ন্ত্রিত পাইকারি বাজারে ২০ টাকা থেকে ৪০ টাকার মধ্যেই বিভিন্ন জাতের আম বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও সিঙ্গুর ও বলাগড় বাজারে প্রায় একই দামে আম বিক্রি হচ্ছে। যদিও খুচরা বাজারে এই আমের দাম ২০ থেকে ৩০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে বর্তমানে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
রাজাহাটের এক চাষি বিদ্যুৎ কুমার ঘোষ বলেন, “এ বছর যেভাবে উৎপাদন হওয়ার কথা ছিল সেভাবে হয়নি। বর্তমানে পাইকারি ১০ টাকা করে কেজি কাঁচা আম এবং ২০ টাকায় পাকা আম বিক্রি হচ্ছে। এখানে সরকারি কোন সাহায্য পাওয়া যায় না। চাষিদের মার খাওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই। এবার বাইরের রাজ্যে আমের চাহিদা খুবই কম, স্থানীয় মার্কেটে ও চাহিদা নেই। আমের দাম কম হওয়ায় অর্থনীতির ওপর প্রভাব পড়েছে এখানের। সরকারি তরফেও আমাদের সাহায্যের প্রয়োজন।”
অন্যদিকে চাষি অসিত ঘোষ বলেন, যে পরিমাণের কম ফলন হয়েছে সেই তুলনায় দাম নেই আমের। হুগলি জেলায় পোলবা, চন্দননগর ও ব্যান্ডেল সহ ফলন কম হলেও জিরাট ও নদীয়ার শান্তিপুরের এলাকায় ফলন হয়েছে। এখানে দাম কম থাকায় ভিন্ন রাজ্যের ব্যবসায়ীরা ওখানেই ভিড় জমাচ্ছেন। পোলবা, চন্দননগর আমের কোয়ালিটি ভাল হলেও অন্যান্য জায়গায় দাম কম। তাই বিক্রি হচ্ছে না।
উত্তরপ্রদেশ, বিহার ট্রাকে করে নিয়ে যান বহু ব্যবসায়ী। চাহিদা কম থাকায় ভিন্ন রাজ্য থেকে ব্যবসায়ীরা আসছে না এখানে। বিহারের গয়ার এক ব্যবসায়ী মহম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “এবছর আমের চাহিদা অনেকটাই কম বিহারে। পিকআপ ভ্যান থেকে বড় ট্রাকের আম নিয়ে যাই। এক এক বারে ৫০০ ক্রেট আম নিয়ে যাওয়া হয়। এখান থেকে বিহারে সরি ও চ্যাটার্জি এই জাতের আম বিক্রি হয়। ওখানে আমদানি বেশি থাকলেও বিক্রি নেই বিহারের। ভাগলপুর ,পাটনার লোকাল আম বিক্রি হচ্ছে। সেই কারণে বাংলার আম বিক্রি নেই বিহারে।”
স্থানীয় এক ব্যবসাদার তাপস পাল জানান, “বর্তমানে হিমসাগর, সরি সহ আমের বাজার মোটামুটি ঠিকই রয়েছে। এ বছরে উত্তরপ্রদেশের বাজারে আম ওঠার ফলে চাহিদা কম রয়েছে। হুগলি বাজারে ব্যবসায়ীরা সেভাবে আসছে না। এই আম ইউপি, বিহার ও দক্ষিণ ভারতের বেশকিছু রাজ্যে পাঠানো হচ্ছে। আমাদের গোটু বাজার থেকেই ভিন রাজ্যে ও আমাদের রাজ্য মিলিয়ে ৫০ টন আম বাইরে যাচ্ছে।”
রাহী হালদার