মাস খানেক আগে প্রায় প্রতিটি বাড়ির সামনে পানীয় জলের কল বসানো হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল, গ্রামবাসীদের হাতের নাগালে বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, সেই কলগুলি দীর্ঘদিন ধরেই অচল হয়ে পড়ে রয়েছে। গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বহু কলের মুখে জং ধরে গিয়েছে। কোথাও আবার দীর্ঘদিন ব্যবহার না হওয়ায় কলের মুখ বস্তা বা কাপড় দিয়ে বাঁধা রয়েছে, যাতে ময়লা-আবর্জনা ভিতরে না ঢোকে।
advertisement
এই বিষয়ে গ্রামবাসী কমল পাল জানিয়েছেন, “প্রায় দেড় বছর ধরে এই সমস্যা হচ্ছে। জল আনতে অনেক দূরে যেতে হয়। এই সমস্যার সমাধান হলে ভাল হয়।” পানীয় জলের তীব্র অভাবে গ্রামবাসীদের প্রতিদিন এক থেকে দেড় কিলোমিটার দূর থেকে জল বয়ে আনতে হচ্ছে। সকাল-সন্ধ্যা কলসি ও বালতি হাতে জল সংগ্রহই এখন গ্রামের মানুষের দৈনন্দিন রুটিন। বয়স্ক মানুষ, মহিলা ও পড়ুয়াদের এই জল সংগ্রহ করতে গিয়ে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
গ্রীষ্মকাল এলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। তীব্র গরমের মধ্যে দূর থেকে জল আনা কার্যত অসহনীয় হয়ে পড়ে। স্নান, রান্না, কাপড় কাচা সব কিছুতেই জলের অভাব স্পষ্টভাবে প্রভাব ফেলছে। এই বিষয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য ডলি মুর্মু বলেন, “গ্রামবাসীরা বহুবার আমার কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। আমি বিষয়টি পঞ্চায়েত ও পিএইচই দফতরকে বারবার জানিয়েছি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও সুরাহা হয়নি।”
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
স্থানীয়দের অভিযোগ, এই সমস্যা নিয়ে বহুবার পঞ্চায়েত ও সংশ্লিষ্ট দফতরে জানানো হয়েছে। কিন্তু এতদিন পেরিয়ে গেলেও সমস্যার কোনও স্থায়ী সমাধান মেলেনি। ফলে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা। গ্রামবাসীদের একাংশের বক্তব্য, বাড়ি বাড়ি কল বসিয়ে দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়নি। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও জল সরবরাহ নিশ্চিত না হলে এই পরিকাঠামো শুধুমাত্র নামেই থেকে যায়। দ্রুত সমস্যার সমাধান না হলে আগামী দিনে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন হাটগাছার মানুষজন।
পিএইচই দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, যে সংস্থা এই কাজটি করছিল, সরকারি পেমেন্ট আটকে থাকায় তারা তাদের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। তবে পেমেন্ট মিললেই দ্রুত কাজ শুরু হবে। এখন দেখার বিষয়, কবে প্রশাসনের নজরে পড়ে হাটগাছা গ্রামের এই দীর্ঘদিনের জলসঙ্কটের উপর এবং কবে হয় পানীয় জলের স্থায়ী সমাধান।





