দক্ষিণবঙ্গে পরিযায়ী পাখি দেখা যায় যে সমস্ত জলাশয়গুলিতে সেগুলির অধিকাংশই অকৃত্রিম। সেই দিক থেকে ব্যতিক্রমী সাঁতরাগাছি ঝিল। এখানে নভেম্বর শুরুতে শীতের আমেজ গায়ে লাগতে শুরু হলেই একে একে পরিযায়ী পাখির দল দেখা যায় সাঁতরাগাছি ঝিলে। শত শত মাইল পেরিয়ে পরিযায়ী পাখির দল শীত পড়লেই ছুটে আসে হাওড়ার সাঁতরাগাছি ঝিলে।
আরও পড়ুন: মেলে বর্ষসেরা পড়ুয়ার পুরস্কার! এই প্রথামিক স্কুলে পড়াতে দারুন উৎসাহিত অভিভাবকরা
advertisement
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
তারপর যত জাঁকিয়ে শীত পড়ে পাখিদের সংখ্যা বেড়ে চলে। ফেব্রুয়ারি শেষ মার্চ মাসের শুরু পর্যন্ত সাঁতরাগাছি ঝিলে পরিযায়ী পাখি দেখা যায়। কিন্তু গত কয়েক বছর নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে সাঁতরাগাছি ঝিলে। তাতেই কমতে দেখা যাচ্ছে পাখির দল।
কখনও কচুরিপানায় ঢেকে থাকার কারণে সেভাবে পাখি নামতে দেখা যায়নি। আবার কখনও ঝিল পরিষ্কার করা হলেও শুকনো কচুরিপানার দ্বীপ না রাখার ফলে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা কম দেখা গিয়েছে। এবারও পাখির সংখ্যা ভীষণভাবে কমেছে। এবার ঝিলে বেশি সংখ্যক পাখি না দেখতে পাওয়ার কারণ কি? তারই উত্তর খুঁজছে মানুষ।
আরও পড়ুন: টিভি, স্মার্টফোনের যুগেও লাইভ নাটক দেখতে দর্শকদের মেলা! কি এমন যাদু করলেন উদ্যোক্তারা
এ প্রসঙ্গে প্রফেসর প্রসেনজিৎ দাঁ জানান, “নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্ত পরিযায়ী পাখি দেখা যায় সাঁতরাগাছি ঝিলে। সাঁতরাগাছি ঝিলের পরিবেশ নিরিবিলি না হলেও পরিযায়ী পাখিদের পছন্দের এই ঝিল। যে কারণে ট্রেন ও কলকারখানা, বাজার-হাটের শব্দ থাকলেও পাখিরা ভিড় জমায় এখানে। বংশপরম্পরায় এখানে আসা তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল। উপযুক্ত খাবার ও ঘোরাফেরার পরিবেশ খুঁজে পায় যে কারণে পাখিদের দল দূর দূরান্ত থেকে আসে।
তবে নানা কারণে সাঁতরাগাছি ঝিলে আসা পাখিদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এভাবে বারংবার সমস্যা দেখা দিলে বিদেশি পাখিদের আশার আরও প্রবণতা কমতে পারে বলে মনে করছে অনেকে। এবার মাত্র ১০ শতাংশ পাখি দেখা দিয়েছে। প্রতিবছর জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে সাঁতরাগাছি ঝিলের পাখির সমীক্ষা করা হয়। কিন্তু এবার ঝিল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার প্রক্রিয়া কাজ দেরিতে হওয়ার কারণে পাখির সংখ্যা কম। অন্যদিকে সময়ে শীত আসার কারণও হতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এখনও পুরস্কারের কাজ চলায়, নিশ্চিন্তে ঝিলে ঘোরাফেরা করতে পারছে না পাখির দল। যে কারণে পরিযায়ী পাখির দল ফিরে গেছে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। সাঁতরাগাছি ঝিলে হয়ত বিপুল সংখ্যক পাখি দেখা যাবেনা এবার।”
তিনি আরও জানান, “বর্তমান সময় থেকে সাঁতরাগাছি ঝিল নিয়ে প্রকৃত পদক্ষেপ না নেওয়া হলে আগামীদিনে আরও মারাত্ম সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে। ঝিলের দক্ষিণ-পূর্ব পার থেকে প্রচুর নোংরা আবর্জনা পড়ছে। পূর্ব পাড় দখল করে বসতি গড়ে উঠেছে। ফলে নানা দিক থেকে সমস্যা বাড়ছে সাঁতরাগাছি ঝিলে। ২০১১-২০১২ সাল নাগাদ প্রায় ১১-১২ হাজার পাখির দেখা গিয়েছিল। তারপর বিভিন্ন সময়ে সংখ্যার পরিবর্তন হয়ে ৫-৭ হাজার পাখি দেখা গিয়েছে। তবে এবার একেবারেই কম।”
রাকেশ মাইতি





