গত ৩৫-৪০ বছর ধরে কবিগুরুর পাহাড় ভ্রমণ ও উত্তরবঙ্গে তাঁর পদচিহ্ন নিয়ে নিরলস গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন রতনবাবু। এই দীর্ঘ সাধনার ফসল তাঁর লেখা বই “পাহাড়ে রবীন্দ্রনাথ”, যার প্রতিটি পাতায় লুকিয়ে রয়েছে কবির পাহাড় সফরের ইতিহাস, সময়কাল, অবস্থান ও সৃষ্টি। একান্ত নিজ উদ্যোগে এবং নিজের খরচে প্রকাশ করেছেন বইটি, তাও এক নয়, দুটি পর্যায়ে। চলেছে তৃতীয় তথা অন্তিম পর্যায়ের প্রকাশনার কাজও।
advertisement
আরও পড়ুন : বাঙালির আবেগ, স্বাধীনতা দিবসেই উদ্বোধন নেতাজির বিশাল মূর্তি! কোথায় হচ্ছে জানেন?
বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে দার্জিলিং, কার্শিয়াং, মংপু, তিনধারিয়া, কালিম্পং-সহ একাধিক পাহাড়ি অঞ্চলে কবিগুরুর বারবার সফর এবং সেইসব সফরের নানান না জানা গল্প। বিশেষ করে কালিম্পং-এর গৌরীপুর ভবনের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে, যেখানে মৃত্যুর কয়েকবছর আগে শেষবারের মতো কবি অবস্থান করেছিলেন। সেখানেই বেতারে কবিতা আবৃত্তি করেছিলেন জন্মদিন উপলক্ষে। লিখেছিলেন গান, কবিতা, পাঠিয়েছিলেন অসংখ্য চিঠি।
রতনবাবুর এই চর্চা শুধু “পাহাড়ে রবীন্দ্রনাথ”-এ সীমাবদ্ধ নয়। উত্তরবঙ্গের স্থাননাম ও লোকসংস্কৃতি নিয়েও তিনি গবেষণাধর্মী বই রচনা করেছেন, যেগুলি ইতিমধ্যেই স্থান পেয়েছে রাজ্যের সরকারি গ্রন্থাগারে। তাঁর লেখা “উত্তরবঙ্গের ভাষা ও স্থাননাম” এবং “উত্তরবঙ্গের লোকগান” বইগুলি বিশেষ স্বীকৃতি লাভ করেছে।
আরও পড়ুন : নাটকের ফাঁদে পা দিয়ে ভুল করেছিল ব্রিটিশরা! ৮৮’র বৃদ্ধের স্মৃতিচারণে শিউরে উঠবে গা
লোকাল ১৮ বাংলার মুখোমুখি হয়ে রতনবাবু জানান, “রবীন্দ্রনাথ পাহাড়ে বহুবার এসেছেন। মংপুর রবীন্দ্রনাথ ভবন, দার্জিলিঙের জিমখানা ক্লাব, কাসলটন হাউস, রোজভিলা, তিনধারিয়ার শান্তা ভবন, কার্শিয়াংয়ের ক্যাম্পসাইড, কালিম্পং, এইসব জায়গার প্রতিটি ইট-পাথরে আজও কবির ছোঁয়া লেগে আছে।”
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
ইতিহাস ঘেঁটে রতনবাবু তুলে এনেছেন বহু উপেক্ষিত প্রসঙ্গ, “উবের আমন্ত্রণ”, “ভুবন মনমোহনি দার্জিলিং”, “মেঘের ঘাঘর”, “ঝরনার ধারা তিনধারিয়া”, “পশ্চিমের আলো”, এবং আরও অনেক কাব্যিক স্মৃতি। তাঁর লেখা বই হয়ে উঠেছে এক জীবন্ত দলিল, যা নতুন প্রজন্মকে কবিগুরুর ‘উত্তরের রবীন্দ্রনাথ’-কে জানতে সাহায্য করছে। সত্যিই, বয়সকে হার মানিয়ে কবিগুরুর প্রতি এই প্রেম, এই নিষ্ঠা, আজও অনুপ্রেরণা জোগায় অসংখ্য রবীন্দ্রভক্তকে।