রিষড়ার ঐ তিন ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফারের অভিযোগ, পাঁচ দিনের কথা বলে বিহারে নিয়ে গিয়ে তাঁদের ৯ দিন কাজ করিয়েছেন শিলিগুড়ির জয় তালুকদার। তারপরও কাজ শেষে পেমেন্ট দেননি। এরপরই শিলিগুড়ির ওই ব্যক্তিকে বিহার থেকে গাড়িতে করে রিষড়ায় এনে একটি ক্লাবে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে ওই তিন ফটোগ্রাফারের বিরুদ্ধে।
সেখানে পাওনা টাকা নিয়ে জয় তালুকদারের সঙ্গে ওই তিন ফটোগ্রাফারের বিস্তর ঝামেলা হয় বলে জানা গিয়েছে। এরপর স্থানীয়রাই বিষয়টি পুলিশকে জানান। পুলিশ এসে চারজনকেই থানায় নিয়ে যায়। ইতিমধ্যে তাঁর স্বামীকে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে পুলিশের দ্বারস্থ হন জয় তালুকদারের স্ত্রী সোমা তালুকদার। তিনি শিলিগুড়ি থানায় এফআইআর করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার সন্ধেয় শিলিগুড়ির পুলিশ হুগলির রিষড়ায় এসে ওই তিন ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফারকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
advertisement
আরও পড়ুন: গরমে কালো হাঁড়ির ঠান্ডা জল ফ্রিজকেও হার মানায়, পাওয়া যায় একমাত্র কদমরসুল পিরের মেলায়
যদিও পুলিশের সঙ্গে শিলিগুড়ি যাওয়ার আগে শুভঙ্কর দাস, ইন্দ্রজিৎ রায় ও সমীর মণ্ডলরা জানান, তাঁরা জয় তালুকদারের সঙ্গে কোনরকম খারাপ ব্যবহার করেননি। তাকে আটকে রাখা হয়নি, বরং ভালো করে খেতে দেওয়া হয়েছে। শুধু বলা হয়েছিল টাকা মিটিয়ে দিলেই তিনি বাড়ি চলে যাবেন। তাঁদের অভিযোগ, বিহারে পাওনা টাকা চাইলে জয় বলেছিলেন পার্টি পেমেন্ট দেয়নি। কিন্তু যাদের বিয়ে বাড়ি কভার করতে গিয়েছিলেন তাঁরা পরিষ্কার জানিয়ে দেন সমস্ত পেমেন্ট দিয়ে দেওয়া হয়েছে। দাবি, টাকা না দেওয়ায় জয় তালুকদারকে রিষড়ায় আসতে বলেন। তাতে শিলিগুড়ির ওই ব্যক্তি স্বেচ্ছায় রাজি হন।
এই ঘটনা জানাজানি হতেই শিলিগুড়ির ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আরও অনেক ফটোগ্রাফারের টাকা না দেওয়ার অভিযোগ সামনে এসেছে। বিভিন্ন ওয়েডিং প্রজেক্টের কন্ট্রাক্ট নিয়ে এইভাবেই নাকি ফটোগ্রাফারদের প্রতারণা করেন। কাউকেই ঠিক করে পেমেন্ট দেন না। কদিন আগেই নেপালের এক ফটোগ্রাফারের সঙ্গে একই রকম কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: বাবা গাছ কাটার কাজ করেন, মা গৃহবধূ, দারিদ্র্যকে সঙ্গী করে জয়ী খুদে তৃষা
এদিকে সোমা তালুকদারের বক্তব্য, টাকার বিষয়ে তিনি কোনও কিছুই জানেন না। বিহারে ফটোগ্রাফি প্রজেক্ট কভার করতে যাওয়ার পর তাঁর স্বামী বাড়ি না ফেরায় তিনি চিন্তিত হয়ে পড়েন। ফোন করলে অন্য একজন সেই মোবাইলে কথা বলে। জানান, টাকা না দিলে ছাড়া হবে না। এরপরই তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন।
যদিও জানা গিয়েছে, জয় তালুকদার নামে ওই ব্যক্তি নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে স্ট্যাটাস দিয়ে জানিয়েছিলেন, 'টাকা দিতে না পারায় তিনি স্বেচ্ছায় ওই তিন ফটোগ্রাফারের সঙ্গে রিষড়ায় যাচ্ছেন। টাকা দিয়ে দিলেই আবার ফিরে আসবেন।' ফলে তাঁর স্ত্রীর অপহরণের অভিযোগ নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
রাহী হালদার