সুনীল গাভাসকর: জীবন, কেরিয়ার, রেকর্ড এক ঝলকে
পুরো নাম: সুনীল মনোহর গাভাসকর
জন্ম: ১০ জুলাই, ১৯৪৯
উচ্চতা: ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি
জাতীয়তা: ভারতীয়
ক্রীড়াবিদ: ডান-হাতি ব্যাটসম্যান, রাইট আর্ম মিডিয়াম, ক্রিকেট বিশ্লেষক
পরিবার
পিতা: মনোহর গাভাসকর
মাতা: মিনাল গাভাসকর
স্ত্রী: মার্শনেল গাভাসকর
বোন: কবিতা বিশ্বনাথ
পুত্র: রোহন গাভাসকর
সুনীল মনোহর গাভাসকর হলেন এক জন প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার। ১৯৪৯ সালের ১০ জুলাই তৎকালীন বম্বে তথা বর্তমান মুম্বই শহরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৭০ এবং ১৯৮০-র দশকে ভারতীয় টপ অর্ডারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন সুনীল গাভাসকর। ক্রিকেটের ময়দানে তিনি ‘লিটল মাস্টার’ নামেও খ্যাত।
কেরিয়ারের সূচনা:
১৯৬৬ সালের মাত্র ১৭ বছর বয়সে গাভাসকর ‘ভারতের সেরা স্কুলবয় ক্রিকেটার’ হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৬৬-৬৭ সালের বার্ষিক মঈন-উদ-দৌল্লাহ গোল্ড কাপ টুর্নামেন্টে দুঙ্গারপুর একাদশের বিরুদ্ধে ওয়াজির সুলতান কোল্টের একাদশের হয়ে ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে অভিষেক হয় তাঁর।
১৯৬৭ সালে ইরানি কাপে বম্বে রঞ্জি স্কোয়াডে জায়গা করে নেন তিনি। ১৯৬৯-৭০ সালের রঞ্জি ট্রফিতে মাইসোরের বিরুদ্ধে তাঁর অভিষেক হয়। প্রথম ম্যাচে শূন্য রানে আউট হলেও পরের ৩টি ম্যাচেই সেঞ্চুরি হাঁকান গাভাসকর।
আন্তর্জাতিক মঞ্চে উত্থান:
১৯৭১ সালের মার্চ মাসে পোর্ট অফ স্পেনের দ্বিতীয় টেস্টে আন্তর্জাতিক ময়দানে অভিষেক ঘটে গাভাসকরের। তাঁর ৬৫ রান এবং অপরাজিত ৬৭ রানের ইনিংসের কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ভারত প্রথম টেস্টে জয়লাভ করে। অভিষেক সিরিজে ৪ ম্যাচেই ৭৭৪ রান এখনও একটি রেকর্ড হয়ে রয়েছে।
১৮৭৪ সালের জুলাই মাসে হেডিংলিতে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাঁর ওডিআই অভিষেক ঘটে। এই ম্যাচে গাভাসকর ২৮ রান করেছিলেন।
আবার ১৯৭৬-৮০ সালে তিনি নিজের দক্ষতার পরিচয় দেন। নিজের কেরিয়ারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া এবং পাকিস্তানের সিরিজে গড় ৬২.২৮ রান ছিল। ১৯৭৯ সালে ইংল্যান্ড সফরে তিনি ওভালে ২২১ রানের একটি অসাধারণ ইনিংস খেলেন। গাভাসকর নিজের কেরিয়ারের সেরা টেস্ট ইনিংস চেন্নাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে খেলেছিলেন। এই ম্যাচে তিনি অপরাজিত ২৩৬ রান করেছিলেন। এক বছরে ১০০০ টেস্ট রান করার রেকর্ড মোট ৪ বার (১৯৭৬, ১৯৭৮, ১৯৭৯, ১৯৮৩) গড়েছিলেন লিটল মাস্টার।
কেরিয়ারে বাধা:
অভিষেকে দুর্দান্ত খেলার পর গাভাসকরের গড় পরের ৪ বছরে ২৮ রানের নিচে নেমে যায়। ১৯৮৪ সালে ইংল্যান্ড সফরে ৮ ইনিংসে মাত্র ১৪০ রান করেছিলেন।
অধিনায়কত্ব:
১৯৭৬ সালে গাভাসকর অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পান। অধিনায়ক হিসেবে তাঁর সবচেয়ে সেরা মুহূর্ত হল ১৯৮১ সালে মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়াকে পরাজিত করা। মোট ৪৭টি ম্যাচে তিনি অধিনায়কত্ব করেছিলেন, যার মধ্যে ৯টি জিতেছিলেন এবং ৮টি ম্যাচে পরাজিত হয়েছিলেন। ১৯৮০ সালে তিনি ওডিআই অধিনায়কত্ব পান।
গাভাসকরের রেকর্ড:
সচিনের আগে গাভাসকরই একমাত্র ভারতীয় খেলোয়াড় ছিলেন, যিনি ১০,০০০ রান করেছিলেন। যার মধ্যে ৩৪টি ছিল সেঞ্চুরি। ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ জয়ী দলের হয়ে খেলেছিলেন তিনি।
অবসর:
১৯৮৭ সালের মার্চ মাসে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তিনি ৯৬ রান করা সত্ত্বেও ভারত ওই টেস্ট ইনিংসে হেরে যায়, আর ওটাই ছিল তাঁর কেরিয়ারের শেষ টেস্ট ইনিংস। ১৯৭৭ সালের নভেম্বর মাসে বিশ্বকাপে ভারতের মাটিতে ভারত সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে যায়। এর পরেই গাভাসকর ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।
পুরস্কার:
১৯৮০ সালে তৎকালীন ভারতীয় রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পদ্মবিভূষণ পুরস্কার গ্রহণ করেছিলেন সুনীল গাভাসকর।