advertisement

কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া (মার্ক্সবাদী)

কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া (মার্ক্সবাদী)

ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী) সংক্ষেপে সিপিআই (এম), সিপিআইএম বা সিপিএম নামে পরিচিত। মার্ক্সবাদী, লেনিনবাদী কমিউনিস্ট দল। সদস্যপদ এবং নির্বাচনী আসনের দিক থেকে এরাই ভারতের বৃহত্তম কমিউনিস্ট পার্টি এবং ভারতের প্রধান জাতীয় দলগুলির অন্যতম। ১৯৬৪ সালের ৭ নভেম্বর সিপিআই ভেঙে তৈরি হয় সিপিআই (এম)। ২০২২ সালের হিসেবে সিপিআই(এম) তিনটি রাজ্যে ক্ষমতাসীন জোটের একটি অংশ – কেরলে বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট, বিহারে মহাগঠবন্ধন এবং তামিলনাড়ুতে ধর্মনিরপেক্ষ প্রগতিশীল জোট। ৯টি রাজ্যের বিধানসভায় সিপিআইএমের বিধায়ক রয়েছে।

সর্বভারতীয় পার্টি কংগ্রেস হল ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) এর সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব। দুই কংগ্রেসের মধ্যবর্তী সময়ে কেন্দ্রীয় কমিটি হল সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী বডি। কেন্দ্রীয় কমিটি তার সদস্যদের মধ্য থেকে সাধারণ সম্পাদক-সহ পলিটব্যুরো নির্বাচন করে। পলিটব্যুরো তার দুটি অধিবেশনের মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটির কাজ পরিচালনা করে। কেন্দ্রীয় কমিটি রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রাখে।

ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি ভেঙে সিপিআইএম তৈরি হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এঁরা ত্রিপুরা তেলঙ্গানা এবং কেরলে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করে। তবে খুব শীঘ্রই সশস্ত্র পথ ছেড়ে তারা সংসদীয় কাঠামোয় কাজ শুরু করে। স্বাধীনতার পর জওহরলাল নেহরুর নেতৃত্বে ঘনিষ্ঠ এবং কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তোলে ভারত। এর ফলে সোভিয়েত সরকার মনে করেছিল, ভারতের কমিউনিস্টরা তাঁদের পক্ষ নেবে এবং কংগ্রেস সরকারকে সমর্থন করবে। কিন্তু সিপিআই-এর একটি বড় অংশের দাবি ছিল, ভারত এখনও আধা সামন্ততান্ত্রিক দেশ, তাই সোভিয়েতের সঙ্গে বাণিজ্য এবং বিদেশনীতির স্বার্থে শ্রেণী সংগ্রামকে পিছিয়ে দেওয়া যাবে না।

সিপিআইএম-এর ব্যুৎপত্তি: সিপিআই-এর সঙ্গে সিপিআইএম-এর সংঘাত মূলত মতাদর্শগত। সোভিয়েত না কি চিন, কার মতাদর্শে পার্টি চলবে এই নিয়েই বিবাদ। পার্টির অভ্যন্তরে কথিত ‘ডানপন্থীরা’ সোভিয়েতের পথ অনুসরণ করতে চেয়েছিল। কিন্তু ‘বামপন্থী’দের মত ছিল চিনা নীতি অনুসরণ করার পক্ষে। এই মতাদর্শগত পার্থক্যই ক্রমশ তীব্র আকার ধারণ করে। এবং আন্তর্জাতিক স্তরে সোভিয়েত-চিনা বিভক্তির সঙ্গে মিলে শেষ পর্যন্ত সিপিআইএম-এর জন্ম দেয়।

১৯৬২ সালে সিপিআই-এর সাধারণ সম্পাদক অজয় ঘোষ মারা যান। তাঁর মৃত্যুর পর এসএ ডাঙ্গেকে পার্টির চেয়ারম্যান এবং ইএমএস নাম্বুদিরিপদকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এভাবে দুপক্ষকে শীর্ষপদ দিয়ে একটা সমঝোতা অর্জনের চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু টেকেনি। ১৯৬৪ সালের ১১ এপ্রিল সিপিআই-এর জাতীয় কাউন্সিলের সভা থেকে ৩২ জন কাউন্সিল সদস্য ওয়াকআউট করেন।

৩১ অক্টোবর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত দক্ষিণ কলকাতার ত্যাগরাজ হলে অনুষ্ঠিত হয় কলকাতা কংগ্রেস। সেই সময়ই বম্বেতে পার্টি কংগ্রেসের আয়োজন করে সিপিআই। সিপিআইএম তাঁদের নিজস্ব রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল। পি সুন্দরাইয়া দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। কলকাতা কংগ্রেসে মোট ৪২২ জন প্রতিনিধি অংশ নেন। অন্য দিকে, সিপিআইএম দাবি করে, তারা ১০৪,৪২১ সদস্যের প্রতিনিধিত্ব করছে। যা মোট পার্টি সদস্যতার ৪০ শতাংশ।

কলকাতা কংগ্রেসে ভারতের রাষ্ট্র চরিত্রের শ্রেণী বিশ্লেষণ করা হয়। বলা হয়, ভারতের বুর্জোয়ারা সাম্রাজ্যবাদের সহযোগিতা করছে। পরিমল দাসগুপ্তের বিকল্প খসড়া কর্মসূচি কলকাতা সম্মেলনে প্রচার করা হয়নি। দার্জিলিংয়ের অতিবাম সৌরেন বসু প্রশ্ন তোলেন, অন্যান্য কমিউনিস্ট নেতাদের সঙ্গে কেন মাও সে তুংয়ের প্রতিকৃতি রাখা হল না? বিপুল করতালি দিয়ে তাঁর দাবিকে সমর্থন করেন উপস্থিত কমরেডরা।

আরো দেখুন …

সব খবর

advertisement
advertisement