সোমবার সকাল সকাল খড়গপুরের বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন দিলীপ। তার লোকসভার মধ্যে পড়া পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ে যান প্রথমে। এরপর দাঁতন-২, মোহনপুর, দাঁতন-১ ব্লকে গিয়ে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেন। সময় কম থাকায় দলীয় নেতাদের দ্রুত মনোনয়ন জমা করার নির্দেশ দেন। কারোর কোনও সমস্যা হচ্ছে কিনা সেই খোঁজ নেন। বিকেলে আবার অন্য মুডে দেখা যায় বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতিকে।
advertisement
আরও পড়ুন: মনোনয়ন জমা দিতে এসে ড্রোন ওড়ালো বিজেপি! নজিরবিহীন রাজনীতির সাক্ষী বাংলা
দাঁতন-১ ব্লকের এক দলীয় কর্মীর বাড়িতে গিয়ে ডাবের জল খান দিলীপ ঘোষ। দুপুরে পুকুর পাড়ে বসে কিছুক্ষণ হাওয়া খেতে খেতে জিরিয়ে নেন। উৎসাহী দলীয় কর্মীদের সঙ্গে সেলফিও তোলেন। তখন একেবারে অন্য দিলীপ। প্রতিপক্ষের উদ্দেশ্যে হুঙ্কার নেই, বরং পুরোপুরি বৈঠকি মেজাজে দেখা যায় মেদিনীপুরের সাংসদকে। বিকেলে আবার শাঁসওয়ালা ডাব কেটে তা থেকে নিজেই শাঁস বের করে খেলেন। দুপুর পর্যন্ত সময়ে মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে যাকে ব্যস্ত হয়ে উঠতে দেখা গিয়েছিল বিকালে তিনিই যেন একেবারে অন্য একটা মানুষ।
যদিও দিলীপ ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য বাকিদের থেকে দাদা ভোটটা ভালো করাতে জানে লোকসভায় লড়াই দিতে গেলে পঞ্চায়েতে ভালো ফল করতে হবে। সেই কারণেই দিলীপ ঘোষ নিজের কেন্দ্রের জমি আঁকড়ে পড়ে আছেন। ঘনিষ্ঠদের মতে, পঞ্চায়েত ভোটকে কার্যত সেমিফাইনাল হিসেবে ধরে নিয়েছেন বিজেপির এই অন্যতম সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি। তার জন্য সবার আগে নিজের কেন্দ্রে যত বেশি সংখ্যক পঞ্চায়েত আসনে বিজেপির মনোনয়ন নিশ্চিত করার চেষ্টা করছেন দিলীপ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বঙ্গ বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মধ্যে বরাবরই মাটির সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলতে পছন্দ করেন দিলীপ ঘোষ। পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে তাঁর তৎপরতাতেও সেই ছবিটাই ফুটে উঠেছে। কারণ জানেন, গ্রাম বাংলার দখল না পেলে বড় ভোটে খুব কিছু করা যাবে না। পাশাপাশি তাঁরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ২০১৯ এর লোকসভায় মেদিনীপুর থেকে জিতলেও ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে এখানকার সাতটি কেন্দ্রে বিশেষ কিছুই করে উঠতে পারেনি বিজেপি। একমাত্র খড়গপুর সদরে জিতেছিল তারা। তাও সেখানকার বিজেপির বিধায়ক হীরণ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দিলীপ ঘোষের ‘সুসম্পর্কের’ কথা সকলেরই জানা। এই অবস্থায় পঞ্চায়েত ভোটে শাসক দলকে লড়াই ছুঁড়ে দিয়ে লোকসভার জমি তৈরি করতে চাইছেন দিলীপ, এমনটাই ধারণা।
রঞ্জন চন্দ