চোখ ধাঁধানো মনোরম এই দুর্গা প্রতিমা দুটি তৈরি হচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাঁতন দু নম্বর ব্লকের সাউরি একারুখি গ্রামে। এই অভিনব কারুকার্যমণ্ডিত দুর্গাপ্রতিমা গুলি গড়ে তুলেছেন মৃৎশিল্পী পবন দে। তাঁর এই কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় তাঁর ছেলে পবিত্র দে। বর্তমান সাউরি ভোলানাথ বিদ্যামন্দির স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে পাঠরত পবিত্র। পড়াশোনার পাশাপাশি শিল্পচর্চায় মন থাকায় বাবার কাজে উৎসাহিত হয়ে বাবার সঙ্গে এই মূর্তি গড়ার কাজে সহযোগিতার হাত বাড়ায় সে।
advertisement
প্রসঙ্গত, বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দু্র্গাপুজো। ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে দেশ, রাজ্য তথা জেলার বিভিন্ন স্থানে। প্রতিমা গড়তে কুমোরটুলি গুলিতেও দেখা গেছে সেই ব্যস্ততার চিত্র। আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা রোদ বৃষ্টির মাঝে দুর্গা প্রতিমা তৈরি করে চলেছেন কারিগরেরাও। আর তেমনই চিত্র দেখা গেল পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন দু নম্বর ব্লকের সাউরি একারুখি গ্রামে মৃৎশিল্পী পবন দের কুমারটুলিতে। শিল্পী পবন দে জানান, এ বছর তিনি তিনটে দুর্গা প্রতিমা তৈরি করছেন, যেগুলি থিম নির্ভর। সারা বছর বিভিন্ন ধরনের প্রতিমা গড়েন তিনি।
আরও পড়ুনঃ অষ্টম দিনে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করল SBSTC-র মেদিনীপুর ডিপোর অস্থায়ী কর্মীরা!
প্রায়ই থিমের ওপরে নির্ভর করে তিনি প্রতিমা গড়ান। সেইমতো এবারেও এই অভিনব থিমের ভাবনা। আর এই থিম নির্ভর দুর্গা প্রতিমা গড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয় ঠিক এক বছর আগে থেকে। অর্থাৎ এক বছর পুজো হয়ে যাবার পর পরের বছর পুজো কেমন হবে সেই থিমের চিন্তা এখন থেকে শুরু করে দেন শিল্পী নিজে। যদিও তিনি জানান, বর্তমান চলতি বছরে থিমের অর্ডার খুবই কম আসছে। কারণ গত করোনা পরিস্থিতির পরে মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ফলে তার প্রভাব গিয়ে পড়েছে পুজো উদ্যোক্তাদের ওপর।
আরও পড়ুনঃ ঝাড়গ্রামের মাতঙ্গিনীকে বাড়ি ফেরাল মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানা
এবারের এই কাঁচ ও পাটের অলঙ্কারে অলঙ্কৃত দুর্গা প্রতিমা তৈরির পেছনের কারণ হিসাবে তিনি জানান, বর্তমান সমাজ ও সংস্কৃতির অবক্ষয়ের দিকটিকে স্বচ্ছতার মাধ্যমে তুলে ধরতে এই কাঁচের দূর্গা প্রতিমা তৈরির ভাবনা। অর্থাৎ আয়না হচ্ছে প্রতিচ্ছবি তুলে ধরার বাহক। সেইমতো কাচের মাধ্যমে সমাজের স্বচ্ছতার দিক তুলে ধরতে চেয়েছেন শিল্পী পবন দে। অপরদিকে ক্ষয়িষ্ণু পাটশিল্পকে বর্তমান সরকার যেভাবে বাঁচিয়ে রাখার উদ্যোগ নিয়েছে, তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পাটের গুণাগুণ ও কারুকার্য তুলে ধরেছেন তিনি প্রতিমার অলংকার ও বস্ত্রের মাধ্যমে।
Partha Mukherjee