কিন্তু নাবালিকা মাকে ঘরে ফেরাতে চায় না পরিবার। আসলে ঘর বলতেও তো কিছু নেই। নাবালিকা মায়ের মা মারা গিয়েছেন মেয়েকে জন্ম দিতে গিয়ে। বাবা ছেড়ে চলে গিয়েছেন অনেক দিন আগে। আর সেই নাবালিকার ফুটফুটে কন্যা সন্তান জানে না নিজের পিতৃ পরিচয়। নাবালিকা মায়ের ঠিকানা এখন দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল।
প্রথমত অভিভাবকহীন। তার উপর কুমারী অবস্থায় মা হয়েছে। নিজের সন্তানের বাবার পরিচয় জানা নেই। নেই চালচুলো। মাসখানেক আগে জন্ম নেওয়া কন্যা সন্তান তাই হাসপাতালের নার্সদের স্নেহে পালিত হচ্ছে। কিন্তু এভাবে কত দিন চলবে? দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে খবর, ওই কুমারী মায়ের বাড়ি কাঁকসা থানা এলাকায়। এলাকায় মানসিক ভারসাম্যহীন বলেই পরিচিত ওই কিশোরী। কিন্তু কিভাবে সে মা হল, সে কথা কেউ জানেন না।
advertisement
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কুমারী মাকে নিয়ে বেশ বিপাকেই পড়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিল। যাতে ওই কিশোরীকে পরিবার ফিরিয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু তাতে সমস্যার সমাধান হয়নি আদিবাসী সম্প্রদায়ের ওই কুমারী মা বলছে, তার আত্মীয়রা নাকি আর তাকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চায় না। নেই মা-বাবাও। তাই তার ভরসার সম্বল এখন শুধু মহকুমা হাসপাতাল আর পুলিশ প্রশাসন।
আরও পড়ুন, সেপ্টেম্বরের শেষেই ভারতীয় রেলে উৎসবের মরশুম! দার্জিলিং মেল, পদাতিকে বড় খবর
আরও পড়ুন, কথা দিয়েছিলেন অভিষেক, ঘোষণা করে দিলেন মমতা! ধূপগুড়ির জন্য বিরাট আনন্দ সংবাদ
জানা গিয়েছে কিশোরীর বাড়ি কাঁকসা থানা এলাকায়। তার এক দাদাও রয়েছে বয়স ১৯ বছর। ছোটতেই তার মা মারা যায়। বাবাও কয়েক বছর পর ছেলে-মেয়েকে ফেলে পালিয়ে যায়। তারপরে কিশোরী বড় হয়েছে বীরভূমের একটি ধর্মশালায়। পরে তারই সম্পর্কের এক দাদু-ঠাকুমা তাকে বামুনারা এলাকায় ফিরিয়ে নিয়ে আসে। এলাকাবাসী বলছেন, ছোট থেকেই ওই কিশোরীর মধ্যে অস্বাভাবিক ব্যবহার, আচার-আচরণ দেখা যেত।
জানা গিয়েছে, যখন তখন কাউকে না বলে বাইরে চলে যেত ওই কিশোরী। তাই তাকে আগে লোহার শেকল দিয়ে বেঁধে রাখা হতো। কিন্তু ইদানিং কালে তা আর করা হত না। ফলে সে কখনও বসে থাকতো গাছের উপরে। কখনও আবার চলে যেত অন্য এলাকায়। এলাকাবাসীর ধারণা, সেই সুযোগ নিয়েই কারোর যৌন লালসার শিকার হয়েছে ওই কিশোরী।
জানা গিয়েছে গত মাসের প্রথম দিকে ওই কিশোরী প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়। তখন এলাকারই কয়েকজন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে দিয়ে যায়। ভর্তি করার দিনেই তার একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। যা এখন হাসপাতালে নার্সদের ভালোবাসায় বড় হয়ে উঠছে।
এই বিষয়ে মহকুমা হাসপাতালের সুপার ধীমান মন্ডল জানিয়েছেন, যেহেতু ওই কিশোরীর অভিভাবক নেই। তাই কন্যা সন্তান নিয়ে তাকে একা হাসপাতাল থেকে ছাড়া হবে না। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে। বুঝেশুনে পদক্ষেপ করা হবে।
Nayan Ghosh