বর্ধমান জেলাও মেতে ওঠে উৎসবের আনন্দে। তবে বর্ধমান এক ব্লকে বর্ধমান শহর লাগোয়া মির্জাপুর গ্রামে এই সময় কোনও রকম দুর্গাপুজোর আয়োজন করা হয় না। প্রাচীনকাল থেকে গ্রামের প্রথা অনুযায়ী এই নিয়ম চলে আসছে। গ্রামে জয় দুর্গা মন্দির প্রতিষ্ঠিত রয়েছে। তাই আলাদা করে কোনও মূর্তি পুজো করা যাবে না। পুজোর চারদিন গ্রামেই অধিষ্ঠাত্রী দেবীকেই পুজোর করা হয় এই গ্রামে।
advertisement
এই গ্রামে শুধুই পূজিত হন অধিষ্ঠাত্রী দেবী জয় দুর্গা। গ্রামে রয়েছে তার মন্দিরও। প্রতি বছর আষাঢ় মাসে রথের ১৪ দিন পর জয় দুর্গার পুজো হয় গ্রামে। পুজোর সময় জয় দুর্গাকে মন্দির থেকে আনা হয় তার উৎপত্তিস্থল অর্থাৎ ঘোষপাড়া পাড়ায়। এরপর সেখান থেকে রথে করে দেবীকে মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়। আলো, বাজনা আড়ম্বরের সঙ্গে দেবীর পুজো শুরু হয়। গ্রামের মানুষ ধুমধাম করেই করেন এই পুজো।
আরও পড়ুন : বহরমপুরে নবোদয় বিদ্যালয়ে র্যাগিংয়ের অভিযোগ! স্কুল ছাড়ল দুই ছাত্র
যেমন দুর্গা পুজোর সময় অতিথিরা আসেন বাড়িতে ঠিক তেমনই এই জয় দুর্গা পুজোকে কেন্দ্র করে এই গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে আসেন অতিথি। এই জয় দুর্গা পুজো হল গ্রামের প্রধান ও একমাত্র উৎসব। এমনকি ক্লাবেও কোনও পুজো হয়না। জয় দুর্গা দেবীর মন্দিরেই নিয়ম মেনে দুর্গা পুজোর চারদিন সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীর পুজোর আয়োজন করা হয়। নবমীর দিন দেবীর শিলামূর্তি মাসির বাড়ি অর্থাৎ দেবীর উৎপত্তিস্থল নিয়ে যাওয়া হয়।
আরও পড়ুন : প্লাস্টিক বর্জন করার বার্তা নিয়েই সাজছে হাওড়ার এই মণ্ডপ
গ্রামের বাসিন্দা রানা ভট্টাচার্য জানান, ‘‘প্রায় ৩০০ থেকে ৩৫০ বছর আগে এই জয় দুর্গা পুজোর শুরু হয়। পূর্ব গ্রামেরই ঘোষ পাড়ায় একটি পুকুর থেকেই দেবীর পাথরের মূর্তি পাওয়া যায়। সেই থেকেই দেবীর পুজো শুরু হয়। দেবীর স্বপ্নাদেশ অনুসারে উপত্তিস্থলে কোনও মন্দির নির্মাণ করা না। সেখানে একটি বেদিতে দেবীকে বসানো হয়। মির্জাপুর গ্রামেরই ব্রহ্মন পাড়ায় রয়েছে দেবীর মন্দির। সেখানেই সারা বছর থাকে দেবীর মূর্তি। সেখানেই নিত্য সেবা করা হয় দেবীর। দুর্গাপুজোর চারদিন এই মন্দিরেই পুজোর আয়োজন করা হয়।’’