রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হস্তশিল্পীরা পূর্ব বর্ধমানের অগ্রদ্বীপে এসেছেন তাঁদের নানা শিল্পকর্ম নিয়ে। সেখানেই ‘কাটুম-কুটুম’ শিল্পের চাহিদা বাড়ছে। আর এই শিল্পকেই এখন আঁকড়ে ধরেছেন নদীয়ার কলেজ পডুয়া। ‘কাটুম-কুটুম’ বলতে শুকনো গাছের শিকড়, ডাবের খোল, শুকনো তালের আঁটি, গাছের ডাল দিয়ে পশু-পাখি, নানা মডেলের নানা আকৃতি তৈরি করা হয়৷ এই শিল্পের নাম ‘কাটুম-কুটুম’। আর এই শিল্পকে কেন্দ্র করেই ক্রমশ স্বনির্ভর হচ্ছে প্রচুর মানুষ। ‘কাটুম- কুটুম’-এর চাহিদা এখন রাজ্য ও দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও পৌঁছেছে।
advertisement
আর পড়ুন- পুরুষরা সাবধান! ‘এই’ ৫ অভ্যাস আজই না ছাড়লে ‘সর্বনাশ’ তো হবেই, মাশুল গুনতে হবে সারাজীবন ধরে
আর পড়ুন- চুমুক দিলেই কমবে তলপেটের মেদ! সকালে ঠিক ‘এই’ ভাবে পান করুন ‘ম্যাজিক ওয়াটার’, রোগা হবেন ৭ দিনে
জানা গিয়েছে, নদীয়া জেলার চাকদহ এর বাসিন্দা সৈকত দাস ইতিহাস অনার্স নিয়ে বিএ পড়েন। বাবা কনক দাস বাঁশের নানা হস্তশিল্প তৈরি করেন৷ মা শিখা দেবী একজন গৃহবধূ। সৈকত তার বাবার কাছ থেকেই হস্তশিল্প শিখেছেন। কিন্তু কলেজে পড়ার খরচ বাবার কাছ থেকে কীভাবে নেবেন । স্বল্প আয়ে সংসার কোনওমতে চলে। তাই সৈকত ‘কাটুম-কুটুম’ শিল্পকেই বেছে নিয়েছেন। এই বিষয়ে সৈকত আরও জানায়, আমি গর্বের সঙ্গে বলতে পারি আমার নিজের পড়াশোনার খরচ আমি নিজে চালাই। বিভিন্ন মেলা থেকে উপার্জন করে আমি আমার যাবতীয় খরচ এবং পড়াশোনার যা খরচ লাগে, সবটাই মেটাই ।
আরও জানা গিয়েছে, বীরভূমের খোয়াইতে সোনাঝুরির হাটে নানা হস্তশিল্প বিক্রি হয়। পূর্ব বর্ধমানের অগ্রদ্বীপেও সেই হাটের নামেই হাট বসছে। আর শিল্পীদের এই হাট বসাতে সহযোগীতা করেছেন ক্রিয়েটিভ বেঙ্গল ফাউন্ডেশন। সংস্থার পক্ষ থেকে রাজর্ষি দাস জানান, বাংলার লোকশিল্প এবং হস্তশিল্পকে নিয়ে আমরা ২০২০ সালের করোনার সময় থেকে সোনাঝুরি হাট নামে মেলা শুরু করেছি । আমাদের শিল্পীদের হাতের তৈরি জিনিসের প্রচুর চাহিদা বিদেশ থেকেও এখন জিনিস কিনতে লোক আসছে। সোনাঝুরি হাট নাম দিয়ে আমি এই কাজ শুরু করেছি তার কারণ হস্তশিল্পীরা আমার কাছে সোনা এবং এই মেলা ছোট্ট একটা ঝুড়ির মত। সুপারি, গমের খোসা, তুস প্রভৃতি দিয়ে ‘কাটুম-কুটুম’ এর নানা মডেল তৈরি করে সোনাঝুরি হাটে নিয়ে এসেছে সৈকত। ঘর সাজানোর উপকরণ হিসাবে এর বিক্রিও হচ্ছে দেদার। ভবিষ্যতে এই শিল্পকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চায় সৈকত।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী