ভিতরে সন্দেশ তার উপরে ডিমের খোলসের মতন চিনির আবরণ। যা মুখে দিলেই একেবারে গলে যাবে। এই সন্দেশ খেয়েই তৎকালীন এক ইংরেজ সাহেব বলেছিলেন এই মিষ্টি তার মন হরণ করেছে তার থেকেই নাকি নাম হয়েছে মনোহরার। এই মনোহরা তৈরির কথিত ইতিহাস প্রায় ২০০ বছরের পুরাতন।
আরও পড়ুন: দুই বোন প্রেমে পড়ে একই ছেলের! ত্রিকোণ প্রেমের গল্প ‘সন্ধ্যাতারা’! জলসায় ফিরছেন অন্বেষা হাজরা!
advertisement
কথিত ইতিহাস অনুযায়ী, তৎকালীন জনাইয়ের জমিদার কালীপ্রসাদ মুখোপাধ্যায ছিলেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির এক বড় দেওয়ান । ইংরেজ সাহেবদের তাঁর বাড়িতে আনাগোনা থাকতো প্রায়শই। সাহেবদের জন্য জমিদার কালীপ্রসাদ এক বিশেষ মিষ্টি বানানোর নির্দেশ দেন যার মধ্যে থাকবে রসের বাঁধন অথচ মিষ্টি হবে শুকনো। এমনকি যে মিষ্টি দিন সাত-আট রাখার পরেও নষ্ট হবে না। সেই মতন ডাক পরে স্থানীয় এক মিষ্টান্ন কারিগর ন্যাড়া ময়রার।
আরও পড়ুন: রাতের অন্ধকারে মৃত হরিণের মাংস ছিঁড়ে খাচ্ছে নগ্ন দুই মহিলা! ভাইরাল সিসিটিভি ফুটেজ
আনুমানিক সাল হবে তখন ১৮৭০ সেই সময় জমিদারের অনুরোধে এক বিশেষ মিষ্টি তৈরি করেন ন্যাড়া ময়রা। ভিতরে নরম সন্দেশের উপরে পুরু চিনির আস্তরণ। এই চিনির আস্তরণ দেওয়ার বিশেষ কারণ হল এই আস্তরণই ভেতরের সন্দেশটিকে অনেকদিন পর্যন্ত ভাল রাখতো। সেই সময় ফ্রিজ বা সেই রকম সংরক্ষণের কোন ব্যবস্থা ছিল না বলেই এই অভিনব মিষ্টি বানিয়ে ছিলেন জনাই এর ময়রা। তখনো পর্যন্ত নাম ঠিক হয়নি কি নাম দেওয়া হবে মিষ্টির। ইংরেজ সাহেবের পাতে এই মিষ্টি পড়তেই মিষ্টির স্বাদে মন কেড়ে নিয়েছিল সাহেবের। সেই থেকেই নাম হয় মনোহরা।
আরও পড়ুন:
এই বিষয়ে এক মিষ্টান্ন বিক্রেতা স্বপন কুমার দাস তিনি জানান, জিওগ্রাফিকাল আইডেন্টিফিকেশন বা জিআই ট্যাগ জনাই এর মনোহারায় যেটা এসেছে তার পিছনে কৃতিত্ব তাদের পূর্বপুরুষের। কারণ জনাইয়ের ন্যাড়া ময়দার দোকান বর্তমানে কমলা মিষ্টান্ন ভান্ডার। তিনি আরও বলেন দশ টাকা থেকে শুরু করে ৫০ টাকা পর্যন্ত মনোহরা বিক্রি হচ্ছে তাদের দোকানে।
শীত গ্রীষ্ম বর্ষার সমস্ত সময়তেই মনোহরার চাহিদা থাকে মানুষজনদের মধ্যে। তবে এই মনোহরা খাওয়ার উপায় পুরোটাই যে খাচ্ছে তার উপর নির্ভরশীল। অনেক মানুষ আছেন যারা মনোহরার উপরের যে চিনির আস্তরণ থাকে তাকে ডিমের খোসার মতন ছাড়িয়ে ভিতর থেকে নরম সন্দেশ খেয়ে থাকেন। আবার অনেক খাদ্য রসিক আছেন যারা চিনির আস্তরণ সমেত খেয়ে ফেলেন। অতীব সুস্বাদু এই মনোহরা সন্দেশ জন্ম লগ্ন থেকেই মানুষের মন কেড়েছিল। বর্তমান সময়তে দাঁড়িয়েও সেই মন হরণ করো সন্দেশের স্বাদ লেগে রয়েছে সমস্ত খাদ্য রসিক মানুষের মুখে।
রাহী হালদার