পুরীতেও এত সমারোহে স্নানযাত্রা উৎসব পালিত হয় না। এখানকার স্নানযাত্রার যে জল সেই জল আসে রিষড়ার কুমোর পরিবার থেকে। তারা গঙ্গায় যে ষাঁড়াষাঁড়ি বান হয সেই জল সারা বছর ধরে মাটির ঘড়া ভরে সংগ্রহ করে রাখেন। সুগন্ধি দিয়ে কলাপাতায় মুড়ে সেই আটাশ ঘড়া জল এবং দেড় মণ দুধ দিয়ে প্রভু জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রা রানীকে স্নান করানো হয়। এবারও প্রথা মেনে তা হয়েছে। আগামীকাল থেকে জগন্নাথ দেবের মন্দির পনেরো দিনের জন্য বন্ধ থাকবে । এই সময়টাকে বলা অনবসর সময় ।
advertisement
এই সময় মন্দিরের ঘন্টা উলুধ্বনি কিছুই ধ্বনিত হবেনা। ইশারাতে ই প্রভুর পুজো হয়। শুধু তাই নয় রীতি অনুযায়ী স্নান এর পরে মহাপ্রভুর জ্বর আসে। ঘাটাল, মেদিনীপুর এবং আরামবাগের বিভিন্ন জায়গা থেকে বৈদ্যরা এসে প্রভুর চিকিৎসা করেন, এবং পাচন সেবন করান। এর সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে যায় জগন্নাথ দেবের অঙ্গরাগ ।আমাদের এখানকার মহাপ্রভু ছয়শ ছাব্বিশ বছরের প্রাচীন ।পুরীতে যেমন বারো বছর অন্তর বিগ্রহ তৈরি হয়। আমাদের এখানে জগন্নাথ দেব কিন্তু এই ছয়শ ছাব্বিশ বছর একই বিগ্রহ নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে পূজিত হয়ে আসছেন।
আরও পড়ুনঃ যাত্রী বোঝাই বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চাষ জমিতে! আহত প্রায় ৪০
অঙ্গরাগের সময় প্রভুকে নুতনভাবে রং করা হয় ।এবং তা হয় সম্পূর্ণ ভেষজ রঙ্গে। তেঁতুল বীজ থেকে আঠা, কাজল লতার কালি, ভুসোকালি থেকে কালো রং,পুনম থেকে লাল রং শঙ্খ গুঁড়ো থেকে সাদা রং এগুলি ব্যবহার করা হয় । পনেরো দিন পর ২৯ শে জুন আবার মন্দির খুলবে, এবং দুদিন মহা ধুমধামের সঙ্গে মন্দিরে নবযৌবন উৎসব পালিত হবে। তার পরের দিন সোজা রথে প্রভু মাসির বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন। এই ভাবেই যুগ যুগ ধরে ঐতিহাসিক মাহেসের স্নানযাত্রা এবং রথযাত্রা উৎসব পালিত হয়ে আসছে।
Rahi Haldar