বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন করার মেসেজ মোবাইলে পাঠিয়ে প্রতারণার ফাঁদ প্রতারকদের। কোচবিহার জেলার সীমান্তবর্তী মহকুমা শহর মেখলিগঞ্জের ঘটনায় উদ্বিগ্ন জেলা পুলিশ। কৌশল পরিবর্তন করে প্রতিদিন নানাভাবে প্রতারণার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রতারকরা। প্রতারকরা কিছু মোবাইল নম্বর থেকে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের মেসেজ পাঠিয়ে শেষ বিদ্যুতের বিল পরিশোধ করা হয়নির বার্তা দিচ্ছে। মেসেজ পাঠানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হবে। নয়তো বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।
advertisement
আরও পড়ুনঃ হু হু করে বাড়ছে লটারি ও অনলাইনে গেমে আসক্তের সংখ্যা, ভয়াবহ পরিণতি রঘুনাথপুরে!
স্বাভাবিকভাবেই হঠাৎ করে আসা এই মেসেজের জন্য কিছু সময়ের জন্য হলেও ঘাবড়ে যান অধিকাংশ মানুষ। বিদ্যুৎ গ্রাহকের মোবাইলে পাঠানো মেসেজের সঙ্গে বিদ্যুৎসংযোগ যাতে বিচ্ছিন্ন না করা হয়, সেই বিষয়ে কথা বলতে নির্দিষ্ট নম্বর দিয়ে সেই নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে উপভোক্তাকে। বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কথা শুনে অনেকেই ফোন করছেন সেই নম্বরে। এরপরেই সেই নম্বর থেকে ফোন কল রিসিভ করে গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সংযোগের কনজিউমার আইডি চেয়ে সঙ্গে সঙ্গে বাকি থাকা বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ জানানো হচ্ছে। তারপর মেসেজের মাধ্যমে একটি লিঙ্ক পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে মোবাইল নম্বরে।
নির্দিষ্ট অ্যাপের মাধ্যমে বিলের মোট টাকা এবং সার্ভিস চার্জ বাবদ কিছু টাকাও পেমেন্ট করতে বলা হচ্ছে। ওই পদ্ধতিতে গ্রাহকেরা নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা পেমেন্ট করলেই মুহূর্তে ফাঁকা হয়ে যাবে গ্রাহকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে সমস্ত টাকা।
এই ঘটনা দক্ষিণবঙ্গে বিক্ষিপ্তভাবে চলে আসছে অনেকদিন থেকেই। অনেকেই এ ভাবে খুইয়েছেন নিজের কষ্টার্জিত লক্ষাধিক টাকা। আবার অনেকেই স্থানীয় বিদ্যুৎ দপ্তরে অফিসে যোগাযোগ করে নিজের উপস্থিত বুদ্ধির জোরে রক্ষা পেয়েছেন এই প্রতারণা চক্রের ফাঁদ থেকে। কোচবিহার জেলার অ্যাডিশনাল এসপি মাথাভাঙ্গা রেঞ্জের অমিত ভার্মা বলেন, "বিদ্যুৎ উপভোক্তাদের এই ধরনের মেসেজ সব সময় এড়িয়ে যাওয়া উচিত। অথবা এই বিষয়ে সন্দেহ হলে সাইবার ক্রাইমে অভিযোগ নথিভুক্ত করাতে পারেন। পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগ এই বিষয়ে তদন্ত করবে। তবে নিজে থেকে কোনও পদক্ষেপ নিলে সমস্যা হতে পারে।"
মেখলিগঞ্জের চ্যাংরাবান্ধা বিদ্যুৎ অফিসের স্টেশন ম্যানেজার সায়ন্তন মল্লিক জানান, "বিদ্যুৎ দফতর বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন করার এই ধরনের কোনও মেসেজ ফোনে পাঠায় না। সুতরাং এই ধরনের মেসেজ উপভোক্তাদের এড়িয়ে যাওয়া উচিত। যদি কোনও জিজ্ঞাস্য থাকে তবে সরাসরি অফিসে এসে যোগাযোগ করতে পারেন। অথবা অফিসের ল্যান্ডফোনে ফোন করতে পারেন। কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জের একটি বেসরকারি স্কুলের তরফে এই ধরনের মেসেজ আসার বিষয় গোটা ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত হয়েছে বিদ্যুৎ অফিস। স্কুল কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে বিদ্যুৎ দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাদেরকে সচেতন করে দেওয়া হয়।"
Sarthak Pandit