তাঁর এই কাজের সূত্রপাত হয় তার কর্মজীবনের মাঝে একটি ঘটনার মাধ্যমে। স্কুলের শিক্ষকতা করার সময় তিনি তাঁর ক্লাসের একটি ছাত্রকে হাতের মধ্যে গাছের একটি ডাল নিয়ে কিছু একটা বানাতে দেখেন। তখন তিনি সেই ছেলেটিকে প্রশ্ন করেছিলেন যে তুমি এটা নিয়ে কি করছ? 'তখন সেই ছেলেটি উত্তরে বলেছিল আপনি এটা বুঝবেন না স্যার।' সেই ছেলেটির এই কথা একপ্রকার জেদ ঢুকিয়ে দেয় তাঁর মনের মধ্যে। সেই থেকেই তার এই 'কাটুম কুটুম শিল্পী' হিসেবে যাত্রাপথ শুরু।
advertisement
আরও পড়ুন - Madhyamik Exam 2023 Tips: মাধ্যমিক ইতিহাসের ২ নম্বরের প্রশ্নের উত্তর লেখার সঠিক উপায়
এখনও পর্যন্ত বহু জায়গায় তিনি তার এই হস্ত শিল্প 'কাটুম কুটুম' গুলিকে নিয়ে প্রদর্শনী করেছেন। এবং তাঁর এই শিল্প গুলি প্রচুর মানুষের বাহবা কুড়িয়েছে। তবে তাঁর এই সকল পাওনা গুলির মধ্যে অন্যতম হিসেবে তিনি জানান, ২০২১ সালে একটি ইন্টারন্যাশনাল এক্সিবিশন এর ডাক আসে দিল্লি থেকে। সেখানে প্রায় ৪০টি দেশের প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাদের সকলের মধ্যে তাঁর একটি মডেল লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চি গোল্ড অ্যাওয়ার্ড পায়। এছাড়াও তিনি অসমের ললিত কলা অ্যাকাডেমি থেকে ইন্টারন্যাশনাল রাজা রবীন্দ্র বর্মা সিলভার আওয়ার্ড পান। এরপর উত্তরপ্রদেশের মণিকর্ণিকা আর্ট গ্যালারি থেকে তাঁকে ন্যাশনাল কলা ভূষণ সম্মানে সম্মানিত করা হয়েছে।"
আরও পড়ুন - ওরাকল স্পিকস ৫ ফেব্রুয়ারি: দেখে নিন ভাগ্যফল, জেনে নিন কোন চিহ্ন বয়ে আনছে সৌভাগ্য!
তবে বলতেই হয় বর্তমানে তার নাম শুধুমাত্র ভারতেই নয় ভারতের বাইরেও প্রচার পেতে শুরু করেছে। তিনি তাঁর এই কাটুম কুটুম হস্ত শিল্পের বিষয়ে আরও জানিয়ে বলেন, ‘‘ কাটুম কুটুম শিল্পের স্রষ্টা অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তবে আমি তিনি তাঁর এই শিল্পের মধ্যেও নিজস্ব ঘরানা তৈরি করেছেন। কারণ, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজের শিল্প কর্মে জোড়া ব্যবহার করতেন। তবে উৎপল বাবু যে ডাল কিংবা গাছের শেকড় গুলি দিয়ে কাজ করেন সেগুলিকে তিনি জোড়া দেন না। যেসব গাছের ডাল দিয়ে কাজ করেন সেগুলো পাহাড়ে বা নদীর থেকে নিয়ে আসা কাঠ। শুধুমাত্র সেগুলিকে দিয়েই তাঁর চিন্তা ভাবনার মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন আঙ্গিক ফুটিয়ে তোলেন।" তবে ভবিষতে আরও দূরে এগিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে রয়েছে উৎপল চক্রবর্তীর।
এবং এই চেষ্টায় কোন খামতিও রাখছেন না তিনি। তবে সরকারি অনুদান কিংবা সাহায্য ছাড়া এই শিল্প বাঁচিয়ে রাখা অসম্ভব। উৎপল চক্রবর্তী জানান, আগে তিনি চাকরি করতেন। তার ফলে তিনি বাইরে ঘুরতে যেতে পারতেন। এবং নদী ও পাহাড় থেকে কাঠ কুড়িয়ে নিয়ে আসতে পারতেন। তা দিয়েই কাটুম কুটুম এর বিভিন্ন মডেল তৈরি করতেন। কিন্তু বর্তমানে তিনি চাকরির থাকে অবসর হয়ে গিয়েছেন। তাই এখন আর আর্থিক দিক সেরকম ভালো না। মূলত সেই কারণেই তিনি বাইরে যেতে পারেন না। বাইরে না গেলে এই শিল্প বাঁচিয়ে রাখা অসম্ভব। তাই সরকারি অনুদান বা সাহায্য এর আর্তি জানাচ্ছেন তিনি। তবে এখনও পর্যন্ত সরকারি সাহায্য বা অনুদান মেলেনি কিছুই।
Sarthak Pandit