তবে এই গ্রামে দেবী লক্ষ্মী কবে অধিষ্ঠিতা হয়েছিলেন তা সম্পর্কে সঠিকভাবে কেউ বলতে পারেন না। মনে করা হয় হর্ষবর্ধনের আমলে কামদেব ব্রহ্মচারী নামে কোন এক সাধক গ্রামে এসেছিলেন দেবী লক্ষ্মীর সাধনার জন্য। এরপর তিনি রাঢ় অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গা ঘুরতে ঘুরতে এসে পৌঁছান ময়ূরেশ্বর এক নম্বর ব্লকের অন্তর্গত একচক্র ধাম বীরচন্দ্রপুর গর্ভবাসে।
advertisement
আরও পড়ুনঃ পুরন্দরপুরে বিরাট চমক! ২২ ফুটের লক্ষ্মী প্রতিমায় হল পুজো
কথিত আছে বর্ষার ভরা নদী সাঁতরে তিনি পৌঁছেছিলেন ঘোষ গ্রামে। সেখানে পৌঁছানোর পর রাত হয়ে যাওয়াই একটি নিম গাছের তলায় তিনি বিশ্রাম নেওয়ার সময় ঘুমিয়ে পড়েন। এরপর সেই নিম গাছের তলাতেই তিনি সাধনা শুরু করেন এবং দীর্ঘ সাধনার পর দেবী লক্ষ্মীর সাক্ষাৎ পান। সে সময় তাকে স্বপ্নাদেশে দেবী লক্ষ্মী জানান, যেখানে তিনি সাধনা শুরু করেছিলেন সেখানেই মূর্তি বানিয়ে পুজো শুরু করার।
তাকে মূর্তি এবং মন্দির বানানোর জন্য সাহায্য করবেন এলাকার চাষী সজল ঘোষ। একদিন সজল ঘোষ তার ছেলে দয়াল ঘোষকে নিয়ে চাষের কাজে যান। সেখানে ছেলে দয়াল ঘোষ পাশের এক কাঁদরে একটি শ্বেত পদ্ম দেখে বায়না ধরেন সেই ফুল নেওয়ার। ছেলের বায়না পূরণ করতে সজল ঘোষ যতবার সেই শ্বেত পদ্ম তুলতে যান ততবার তা দূরে সরে যায়। শেষমেষ তিনি ব্যর্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন।
এরপর সজল ঘোষ রাতে স্বপ্নাদেশ পান এবং সেই স্বপ্ন দেশে বলা হয় কোন এক সিদ্ধ পুরুষ সেই শ্বেতপদ্ম তুলতে পারবেন। এরপর ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে তিনি কামদেব ব্রহ্মচারীর কাছে যান এবং তিনি ওই কাঁদর থেকে শ্বেত পদ্ম এবং ভাসমান নিম কাঠ তুলে আনেন। কোজাগরি লক্ষ্মীপুজোর দিন তুলে আনা ওই শ্বেত পদ্ম এবং নিম কাঠে গঙ্গার মাটি দিয়ে লক্ষ্মীর প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়।
আরও পড়ুনঃ একদিকে মুষলধারে বৃষ্টি! অন্যদিকে জয়তারা উৎসবে মাতল দুবরাজপুর
এরপর থেকেই প্রতিবছর এখানে ধুমধাম করে কোজাগরী লক্ষ্মীপূজো করা হয়ে থাকে। জানা যায়, মুর্শিদাবাদের কান্দির রাজা কৃষ্ণচন্দ্র খবর পেয়ে এখানে মন্দির প্রতিষ্ঠা করান। মন্দিরের সেবায়েত নন্দকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, কোজাগরি লক্ষ্মীপুজোর দিন এখানে ধুমধাম করে সারাদিন পূজো হয় এবং সন্ধ্যার সময় গ্রামের মানুষ পুজো দেন ও প্রসাদ গ্রহণ করেন। দূর দূরান্ত থেকে বহু মানুষের সমাগম হয়।
Madhab Das