এরপরে বর্তমান তারাপীঠ মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন নাটোরের রানী। তবে থেকে এই দিনটি তারা মায়ের আবির্ভাব তিথি হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেছে। ফলে এই বিশেষ দিনে আজ অর্থাৎ শুক্রবার সকাল থেকেই তারাপীঠ মন্দিরে পুজো শুরু হয়েছে। বছর ভর মা তারা পূজিত হয়ে আসছেন উত্তরমুখী হয়ে তবে আজ আবির্ভাব তিথিতে মা তারা কে বসানো হয় পশ্চিমমুখে। বছরের এই একটি দিন এবং সোজা রথ এবং উল্টো রথে দুদিন মোট তিন দিন মা তারা গর্ভগৃহের বাইরে বের হন।
advertisement
বীরভূমের ঝাড়খন্ড লাগোয়া মুলুটি গ্রামে রয়েছেন মা তারার ছোটবোন মা মৌলিক্ষা। এদিন মৌলিক্ষা মন্দিরের দিকেই মুখ করে বসানো হয় মা তারা কে। ঐতিহাসিকদের মতে জানা যায় ১৭০১ সাল পর্যন্ত সারা বছরের মতো আবির্ভাব তিথিতে ও তারাপীঠের বিশ্রাম মন্দির এর পূর্ব দিকে মুখ করে পূজোয় বসতেন তান্ত্রিক ও পুরোহিতরা। পরবর্তীতে তৎকালীন তারাপীঠের প্রধান পুরোহিত স্বপ্নাদেশ পাওয়ার পর এই নিয়মের পরিবর্তন হয়।
আজ সূর্যোদয়ের আগে ঘুম ভাঙ্গিয়ে ভোর তিনটে নাগাদ মন্দিরের গর্ভগৃহ থেকে মায়ের শিলামূর্তি বের করে আনা হয়, বিরাম মঞ্চে মুলোটির মা মৌলাক্ষীর মন্দিরের অভিমুখে পশ্চিম দিকে বসানো হয় মা তারাকে। এরপর মা তারার মন্দিরের পাশেই অবস্থিত জীবিত কুন্ডু ঘাট থেকে জল এনে মা তারা কে স্নান করিয়ে রাজরাজেশ্বরী বেশে সাজিয়ে তোলা হয়। আবির্ভাব তিথির দিন মা তারা উপোস থাকেন তাই এদিন সারাদিন কোন ভোগ হয় না মা তারার মন্দিরে। মা তারা উপোস থাকেন বলে তারাপীঠ এলাকার সেবায়েত থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সকলেই সেদিন উপোস থাকেন। এই দিন অন্নের পরিবর্তে দেওয়া হয় ফল,লুচি, সুজি দিয়ে ভোগ। সন্ধ্যাবেলায় ফের মূল মন্দিরে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় মা তারাকে। সন্ধ্যাবেলায় মূল মন্দিরে নিয়ে যাওয়ার পর মা তারা কে স্নান করিয়ে নবরূপে সাজানো হয় দেবী মূর্তি। রাত্রিবেলায় খিচুড়ি,পোলাও,পাঁচ রকম ভাজা,শোল মাছ পোড়া,পাঁঠার মাংস দিয়ে ভোগ নিবেদন করা হয়।
সৌভিক রায়





