গ্রাম ঢোকার ঠিক মুখেই চন্দ্রভাগা নদীর ধারে রয়েছে একটি কালী মন্দির। এই কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কালীচরণ সিংহ। যিনি ছিলেন মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা এবং পরে বীরভূমের এই মল্লিকপুর গ্রামে আসেন। তার প্রতিষ্ঠিত মা কালীর নাম 'ঝলকা রানি'। তাকে কেন্দ্র করেই জড়িয়ে রয়েছে এই গ্রামে ডাকাতদের হানা না দেওয়ার কারণ।
আরও পড়ুনঃ পথ একেবারেই দুর্গম নয়, স্বস্তিতেই পায়ে হেঁটে ঘুরে আসুন কেদারধাম
advertisement
সিংহ পরিবারের উত্তরসূরীদের তরফ থেকে জানা গিয়েছে, কালীচরণ সিংহ একদিন ভোরবেলায় মায়ের মন্দির পরিষ্কার করার জন্য যান। সেখানে পাশে থাকা একটি ডোবায় তিনি দেখেন কয়েকজন পড়ে রয়েছে। সেখানে যারা ছিলেন তারা কেউ চোখে দেখতে পাচ্ছিলেন না। এমন সময় তাদের চোখে জল দিলে তারা দৃষ্টিশক্তি ফিরে পান এবং কালীচরণ সিংহ তাদের জিজ্ঞাসা করেন, কেন তারা এখানে এসেছিলেন? উত্তরে ওই ব্যক্তিরা জানান, গ্রামে তারা ডাকাতির উদ্দেশ্যে এসেছিলেন এবং হঠাৎ এই জায়গায় এসে দৃষ্টিশক্তি হারান। এরপর ওই ডাকাত দল প্রতিজ্ঞা করেন আর কোনওদিন গ্রামে ডাকাতি করতে আসবেন না।
আরও পড়ুনঃ বেনাগ্রাম কি সত্যিই ভৌতিক? নাকি নেপথ্যে থেকে অন্য কাহিনী? সাক্ষী ডাকাত কালী
আনুমানিক ৪০০ বছর আগের এই ঘটনার পর থেকে এখনও পর্যন্ত গ্রামে কোনওদিন ডাকাতির ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন সিংহ পরিবারের উত্তরসুরিরা। পাশাপাশি আনুমানিক ৫০ বছর আগে একবার ডাকাতির চেষ্টা চালানো হলেও তা সম্ভব হয়নি।
এখানকার এই ঝলকা রানি কালী মায়ের পুজো দীপান্বিতা অমাবস্যায় হয়। বিভিন্ন জায়গা থেকে পুণ্যার্থীদের আগমন হয় পুজোর দিন। পুজোর দিন সন্ধ্যাবেলায় গঠন মন্দির থেকে প্রতিমা তৈরীর কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পর মূল মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়। মূল মন্দিরে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তিনবার গঠন মন্দির থেকে মূল মন্দির যাওয়া আসা করার পর চতুর্থবারে মন্দিরে তোলা হয়। এর পাশাপাশি পুজোর দিন এখানে মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে।
Madhab Das