#কলকাতা: বলা হয়, নারীর কাছে মাতৃত্ব একটা আশীর্বাদ। কিন্তু অনেক সময় বহু মহিলাই মা হওয়ার জন্য শারীরিক অথবা মানসিক ভাবে প্রস্তুত থাকেন না। ফলে প্রেগনেন্সি বা গর্ভাবস্থা তাঁদের কাছে আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই পিরিয়ড এক দিন দেরি হলেও চিন্তার শেষ থাকে না। আর আজকাল তো এটা খুব সাধারণ একটা বিষয় হয়ে উঠেছে। গর্ভধারণের সমস্ত সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেও বিলম্বিত মাসিক চক্র মনে ভয় ধরিয়ে দেয়। আর এই সমস্যার কারণ হতে পারে প্রিকাম (Precum) বা প্রাক বীর্যরস। কিন্তু এই বিষয়টা আসলে কী?
প্রিকাম আসলে একধরনের উৎসেচক বা এনজাইম, প্রোটিন ও মিউকাসের মিশ্রণ। এটা সাধারণত থাকে কুপার্স গ্ল্যান্ডে (Cowper’s Gland)। এটি এমন একটি বিষয়, যা গর্ভধারণের সম্ভাবনা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই বিশদে জেনে নেওয়া যাক, এই প্রিকামের বিষয়ে।
প্রিকাম আসলে কী?
প্রথমেই বলে রাখা ভাল যে, প্রিকাম বীর্য নয়। এটা প্রোটিন, উৎসেচক এবং মিউকাসের মিশ্রণ, যা পুরুষদের কুপার্স গ্ল্যান্ড বা বালবারেথ্রাল গ্ল্যান্ডে (Bulbourethral Gland) উপস্থিত থাকে। আর এই গ্ল্যান্ড অবস্থিত পুরুষদের মূত্রনালীতে। অনেক সময় যৌন সঙ্গম কালে এই প্রিকাম নির্গত হয়। যদিও এটা আদতে বীর্য নয়, তবুও কখনও কখনও এর মধ্যে বীর্য উপস্থিত থাকতে পারে। তবে কখন প্রিকামে বীর্য থাকবে, সেটাও নিশ্চিত ভাবে বলা মুশকিল।
প্রিকামের কাজ কী?
আপাতত আমরা প্রিকাম সম্পর্কে একটা মোটামুটি ধারণা পেয়েছি। কিন্তু এর কাজ ঠিক কী, তা নিয়ে সেভাবে স্পষ্ট ধারণা অনেকেরই নেই। প্রিকাম আসলে শুক্রাণুর রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে থাকে। মূত্র সাধারণত অ্যাসিডধর্মী হয়ে থাকে। আর মূত্রের অবশিষ্টাংশ শুক্রাণুর সঙ্গে মিশে যেতে পারে। তার ফলে বীর্যের পিএইচ মাত্রাতেও পরিবর্তন আসতে পারে। এর জেরে শুক্রাণুর কার্যকারিতাও কমতে পারে এবং গর্ভধারণের সম্ভাবনাও কমিয়ে দেয়। আর প্রিকাম এই অবশিষ্টাংশের সঙ্গে মিশে প্রথমে যোনিতে প্রবেশ করে, সেই সঙ্গে শুক্রাণুর প্রবেশের পথও প্রশস্ত করে।
আরও পড়ুন-সূর্যাস্তের পর নখ কাটতে বারণ করা হয় কেন ? এটা কি কুসংস্কার না অন্য কিছু ?
প্রিকামের কারণে কি গর্ভধারণ করা সম্ভব?
আসলে এই প্রশ্নের উত্তর নিশ্চিত ভাবে বলাটা খুবই মুশকিল। সাধারণ বীর্যপাতের ক্ষেত্রে অর্থাৎ যার মধ্যে ভাল মানের শুক্রাণু বর্তমান, সে ক্ষেত্রে গর্ভধারণের সম্ভাবনাও বেশি থাকে। তবে তার তুলনায় প্রিকামের ক্ষেত্রে সেই সম্ভাবনা প্রায় শূন্য বলেই ধরা হয়। কিন্তু আবার প্রিকাম থেকে প্রেগনেন্সির সম্ভাবনা পুরোপুরি উড়িয়েও দেওয়া যায় না। যেহেতু প্রিকামেও শুক্রাণু উপস্থিত থাকে, তাই গর্ভধারণের সম্ভাবনা কিছুটা হলেও থেকে যায়। আর এর নাম থেকেই স্পষ্ট যে, বীর্যপাতের পূর্বেই প্রিকাম ঘটে যায়। এমনকী, এটা ঘটার সময় বেশির ভাগ মানুষই এটা বুঝতে পারেন না।
এ ক্ষেত্রে কোন কোন পরিস্থিতিতে গর্ভসঞ্চার ঘটতে পারে?
প্রিকাম যদি লেবিয়া অথবা যোনিপথের কাছাকাছি অবস্থান করে, তাহলে গর্ভসঞ্চারের সম্ভাবনা একেবারে থাকে না বললেই চলে। কারণ এক্ষেত্রে শুক্রাণু সার্ভিক্যাল ক্যানাল অথবা যোনিতে প্রবেশ করতে অক্ষম হয়। আবার যদি ঋতুস্রাব বা পিরিয়ডস চলে, তাহলেও প্রিকাম থেকে প্রেগনেন্সির সম্ভাবনা ভীষণই ক্ষীণ। তবে মাথায় রাখতে হবে যে, প্রিকাম কিন্তু গর্ভসঞ্চার করতে যথেষ্ট সক্ষম। বিরলতম ক্ষেত্রে এর থেকে গর্ভসঞ্চার সম্ভব। তাই সব সময় এই বিষয়টা খেয়াল রেখে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Coronavirus