Smoking: পরোক্ষে ধূমপানেও নজিরবিহীন অসুস্থতা; দেশের অর্থনৈতিক বোঝার সমীক্ষা আতঙ্ক জাগাবে!
- Published by:Siddhartha Sarkar
- news18 bangla
Last Updated:
গোটা দেশ জুড়ে সাম্প্রতিক সমীক্ষায় উঠে এল এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। এমনকী, ধূমপায়ী ব্যক্তি ধূমপানের সময় আঁচ করতে পারেন না পরোক্ষে সামাজিক ক্ষতির পরিমাণ।
#কলকাতা: ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কিংবা বিড়ি অথবা সিগারেট যখন আপনার তাহলে ধোঁয়া আপনার কাছেই রাখুন- স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে বিজ্ঞাপনের অন্ত নেই। তার পরেও সরকারি নির্দেশিকা কিংবা স্বাস্থ্য সচেতনতার বিজ্ঞাপনকে পাত্তা না দিয়ে পাবলিক প্লেসে কিংবা বাড়িতে ধূমপান করেন হাজার হাজার মানুষ। পরিণাম ভয়ঙ্কর জেনেও বিন্দুমাত্র সচেতনতার কোনও লক্ষণ নেই। কিন্তু সরাসরি ধূমপানের কারণে ধূমপায়ীর যতটা ক্ষতি হয় তার থেকেও ধূমপানের সময় ওই ধূমপায়ীর সামনে থাকা মানুষের ক্ষতির পরিমাণ ঢের বেশি।
গোটা দেশ জুড়ে সাম্প্রতিক সমীক্ষায় উঠে এল এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। এমনকী, ধূমপায়ী ব্যক্তি ধূমপানের সময় আঁচ করতে পারেন না পরোক্ষে সামাজিক ক্ষতির পরিমাণ। ফলে ধূমপান করে নিজের ক্ষতির বদলে পরোক্ষে হাজার হাজার মানুষের স্বাস্থ্যকে শেষ করে দেন ধূমপানকারী।
advertisement
advertisement
সম্প্রতি রাজগিরি কলেজ অফ সোশ্যাল সায়েন্সের গবেষকরা একটি সমীক্ষা চালিয়েছেন গোটা দেশ জুড়ে। গবেষকদের ওই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ভারতে সরাসরি ধূমপানের তুলনায় তামাকের ধোঁয়ায় ক্যানসার, শ্বাসকষ্ট-সহ একাধিক রোগের শিকার হচ্ছেন লক্ষ লক্ষ অধূমপায়ী মানুষ। সাম্প্রতিক ওই সমীক্ষায় আরও দেখা গিয়েছে, পরোক্ষে ধূমপানের ধোঁয়ায় বা সেকেন্ড হ্যান্ড স্মোকিংয়ের (SHS) কারণে স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়ায় বর্তমানে দেশের বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্রে গিয়ে অধূমপায়ীদের শারীরিক চিকিৎসা বাবদ খরচের পরিমাণ ৫৬৭ কোটি টাকা। সম্প্রতি এই সমীক্ষাটি প্রকাশিত হয়েছে নিকোটিন অ্যান্ড টোব্যাকো রিসার্চ জার্নালে।
advertisement
ভারতে প্রতি বছর পরোক্ষে ধূমপানের কারণে চিকিৎসা বাবদ খরচের পরিমাণ কত?
সাম্প্রতিক নিকোটিন অ্যান্ড টোব্যাকো রিসার্চ জার্নালে সমীক্ষা রিপোর্টে বলা হয়েছে, দেশের যত্রতত্র ধূমপায়ীদের ধূমপানের কারণে সরাসরি না হলেও ওই ধোঁয়া এবং তামাকের কুফলে মহিলা, শিশু এবং বয়স্ক মানুষেরাই বেশি স্বাস্থ্যহানির শিকার হচ্ছেন। তা ছাড়াও ওই রিপোর্টে গবেষক মহল দাবি করেছেন মূলত মহিলারাই বেশি স্বাস্থ্যহানির শিকার হচ্ছেন পরোক্ষে ধূমপান বা সেকেন্ড হ্যান্ড স্মোকিংয়ের কারণে। পরোক্ষে ধূমপান বা সেকেন্ড হ্যান্ড স্মোকিংয়ের জন্য স্বাস্থ্যহানির কারণে গোটা দেশে চিকিৎসার জন্য প্রতিবছর যে খরচ করা হয় তার বেশিরভাগটাই বহন করতে হয় মহিলাদের পিছনে। সমীক্ষকরা জানিয়েছেন, মহিলাদের চিকিৎসার জন্য এই খরচের পরিমাণ প্রায় ৭১ শতাংশ। খরচের তালিকায় শিশু, বৃদ্ধ থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক অধূমপায়ী মানুষও রয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। পাশাপাশি বাড়ি এবং কর্মক্ষেত্র মিলিয়ে প্রায় ৬৮ শতাংশ প্রাপ্ত বয়স্ক অধূমপায়ী মানুষ পরোক্ষে ধূমপানের ক্ষতির শিকার হন বলে জানানো হয়েছে।
advertisement
ধূমপানের কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ কমাতে কী করা উচিত?
এ বিষয়ে এর নেতৃত্বে রাজগিরি কলেজ অফ সোশ্যাল সায়েন্সের গবেষকমহলের বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ এবং স্বাস্থ্যনীতি বিশ্লেষক ডা. রিজো এম জন বলেছেন, ধূমপানে অব্যাহত এক্সপোজারের কারণে ক্ষতির মূল্যয়ন করতে অধূমপায়ীদের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা বাবদ খরচ পরিমাপ করতে কয়েক লক্ষ মানুষের মধ্যে এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ভারতে আইনের ফাঁক গলে রেস্তোরাঁ, বার, হোটেল এবং বিমানবন্দরের মতো পাবলিক প্লেস নির্বিঘ্নে ধূমপানের জন্য বেছে নিয়েছেন ধূমপানকারীরা। এতে সরকারি উদাসীনতাকেই দায়ী করেছেন তিনি। এ বিষয়ে তাঁর মত, দেশের ধূমপানবিরোধী আইন আরও কঠোর এবং শক্তিশালী হলে তবেই এই প্রভাব কমবে। এতে চিকিৎসা বাবদ অহেতুক খরচ কমে গিয়ে মানুষের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও মজবুত হবে বলেই দাবি করেছেন তিনি।
advertisement
ধূমপানের মাত্রা কমাতে ভারত সরকারের পদক্ষেপ কী হওয়া উচিত?
এ বিষয়ে প্রখ্যাত চিকিৎসক ডা. রিজো জন বলেছেন ভারতকে তার বিপুল সংখ্যক ধূমপায়ী এবং তামাক-সম্পর্কিত রোগের চিকিৎসার অর্থনৈতিক বোঝা কমাতে শক্তিশালী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তামাকজাত দ্রব্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি ধূমপান কমানোর সবচেয়ে কার্যকর উপায়গুলির মধ্যে একটি বলেও দাবি করেছেন তিনি। তবুও বিগত চার বছরে গোটা দেশে তামাকজাত পণ্যের উপর সে অর্থে উল্লেখযোগ্য কর বৃদ্ধি পায়নি বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, বর্তমানে গোটা দেশে তামাকজাত দ্রব্যের থেকে ভারত সরকার যে শুল্ক পায়, তার তুলনায় তামাকের কারণে ক্ষতির শিকার হয়ে স্বাস্থ্য পরিসেবায় খরচের পরিমাণ অনেক গুন বেশি। পাশাপাশি তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার বন্ধে সরকারকে আরও কঠোর হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
advertisement
এ বিষয়ে ডা. জনের মতে পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে কনসোর্টিয়াম ফর টোব্যাকো ফ্রি কর্নাটকের (CFTFK) আহ্বায়ক এস জে চন্দ বলেছেন, “যদিও গোটা দেশে তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার কমাতে ভারত সরকার ইতিমধ্যেই একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, তথাপি সরকারকে আরও শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন তৈরি করে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কঠোর আইন প্রণয়ন করে যে কোনও পাবলিক প্লেস থেকে ধূমপান অপসারণ করার পাশাপাশি সকল প্রকার তামাকজাত দ্রব্যের উপর শুল্ক বাড়িয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। ভারতীয়দের তামাক বর্জন করার ডাকও দিয়েছেন চন্দ।
Location :
First Published :
March 23, 2022 1:08 PM IST