Hooghly News: পায়ে শক্তি নেই, মনে অগাধ জোর! মাধ্যমিক দিয়ে স্বপ্নপূরনের পথে পা ১৬ বছরের মহসিনের
- Published by:Sayani Rana
- news18 bangla
Last Updated:
নিজের পায়ে দাঁড়াতে না পারলেও পড়াশোনা শিখে পরিবারের হাল ধরতে চায় সে। ছোটবেলায় অসুস্থতার জন্য দুই পায়ে হাঁটার শক্তি হারিয়েছে সে। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায় বছর ১৬ এর মহসিন।
হুগলি: তার দুচোখ ভর্তি স্বপ্ন। নিজের পায়ে দাঁড়াতে না পারলেও পড়াশোনা শিখে পরিবারের হাল ধরতে চায় সে। ছোটবেলায় অসুস্থতার জন্য দুই পায়ে হাঁটার শক্তি হারিয়েছে সে। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায় বছর ১৬ এর মহসিন।
পরিবারের রয়েছে আর্থিক অসচ্ছলতা , নেই কোনও গৃহ শিক্ষক, এমনকি একা স্কুলেও যেতে পারেনা সে।পায়ের বদলে হাঁটু দিয়ে হাঁটতে হয় তাকে। প্রতিবন্ধকতা রয়েছে তার জীবনে হাজারো। তবে মনের জোরে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসছে পোলবার মহসিনা। তার এই লড়াই অনুপ্রেরণা যোগান দিচ্ছে তার মতন অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীদের।
advertisement
advertisement
পোলবার কাশ্বারার বাসিন্দা মহসিনা খাতুনের যখন ছয় বছর বয়স হঠাৎই একদিন জ্বর সর্দি হয়। চিকিৎসা করালেও পুরো সুস্থ হয়ে ওঠেনি সে। নিজের পায়ে দাঁড়ানোর ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। বাবা একটি কারখানার শ্রমিক মা পরিচারিকার কাজ করে যতটুকু উপার্জন করে তা দিয়ে কোনরকমে চলে সংসার। মেয়ের ভালো চিকিৎসা করাতে পারেননি। তবে মেয়ের পড়াশোনার জন্য কোনদিনও বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়নি তার বাবা-মায়ের আর্থিক অসচ্ছলতা। তারা উৎসাহ জুগিয়েছে মেয়েকে। নিজের জেদ আর লড়াই করে নিজেকে তৈরি করেছে মহসিনা।
advertisement
বর্তমানে আলিনগর ইয়াসিন মন্ডল শিক্ষানিকেতন স্কুলে পড়াশোনা করে। এবছর সে মাধ্যমিক পরীক্ষার দিচ্ছে। সুগন্ধা হাইস্কুলে তার সিট পরেছে। নিজের পায়ে হাঁটতে বা সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না ,তাই হাঁটু মুড়ে বাসে করে মায়ের সঙ্গে আজ মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্রে এসে পৌঁছয় মহসিনা । সে জানায়, মাধ্যমিক পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াবে।
advertisement
আরও পড়ুন- মাধ্যমিক পরীক্ষা সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যার সমাধানে কন্ট্রোল রুম, জেলাভিত্তিক নম্বরগুলি জানুন
তার মা ইসমাতারা বিবি জানান, ২০১০ সালে হঠাৎই একদিন প্রচন্ড জ্বর সর্দি হয় , সঙ্গে সঙ্গেই তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায় পরে আস্তে আস্তে মেয়ের পা দুটো বেঁকে যেতে থাকে। তখন থেকেই আর নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে ঠিক ভাবে হাঁটাচলা করতে পারেনা। হাঁটু মুড়ে হাঁটুতে ভর করেই স্কুলে যাতায়াত করে। কখনো তার বাবা কখনো মা মেয়েকে স্কুলে দিয়ে আসেন আবার নিয়ে আসেন। মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য কোন শিক্ষকও দিতে পারেনি পরিবার, নিজেই পড়াশোনা করে আজ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে সে। মেয়েকে দেখে আমাদের কষ্ট লাগে তবুও তার বাবা-মা চান ও নিজের পায়ে দাঁড়াক।
advertisement
পোলবা দাদপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তথা ইয়াসিন মন্ডল শিক্ষানিকেতন স্কুলের সভাপতি তানসেন আলী মন্ডল জানান, "জন্ম থেকে ছাত্রী প্রতিবন্ধী ছিল না,শরীর অসুস্থ হয়ে প্রতিবন্দী হয়। অনেক চিকিৎসা করিয়েও সুস্থ হয়ে উঠতে পারেনি। গরিব ঘরের মেয়ে হয়ে পড়াশোনা চালিয়ে গেছে। তার প্রচেষ্টাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। মাধ্যমিক পরীক্ষায় যেন সফলভাবে উত্তীর্ণ হয় এবং সরকারিভাবে যদি সাহায্য করা যায় সেটাও আমরা দেখব।"
advertisement
রাহী হালদার
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
February 23, 2023 8:19 PM IST