এই ঘটনা ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল ব্লকের অজবনগর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের হরশঙ্কর গ্রামে। যদিও ঘটনার সমস্ত কথা অস্বীকার করে গ্রামের মতব্বরেরা। তবে তারা জানায়, গ্রামকে অপমান করা করেছে ওই পরিবার। একাধিক বার গ্রামের মিটিংয়ে ডাকা হলেও আসেনি তারা,তাই গ্রামের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ওদের দোকানে কেউ মালপত্র খাবে না,যে ওদের দোকানে যাবে তার পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে।
advertisement
আরও পড়ুন: কেউ উঠেছেন বাসের মাথায়, কেউ ঝুলছেন বাসের পিছনে! ব্যাপক ভিড় দিঘা যাওয়ার বাসে
এমন কথা ক্যামেরার সামনে অকপট ভাবে স্বীকারও করে নিয়েছে বয়কটের অভিযোগ তোলা গ্রামের কয়েকজন মাতব্বর। দীর্ঘ কয়েক দিন ধরে মুদির দোকানে তালা, দোকান বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েছে রেবা মণ্ডল ও তার ছেলে সঞ্জিত। অবশেষে কোন সুরাহা না পেয়ে স্থানীয় প্রশাসনের দ্বারস্থ হয় তারা।
দোকান বন্ধ হওয়ায় রেবা মন্ডল ও তার ছেলে, দ্রুত তাদের দোকানটি খুলে দেওয়া হোক এমনই আবেদন জানায় প্রশাসনের কাছে। ঘাটাল ব্লকের হরশংকর গ্রামের বাসিন্দা রেবারানী মন্ডল ও তার ছেলে সঞ্জিত মন্ডলের অভিযোগ,তাদের মুদির দোকানে তালা দিয়ে দিয়েছে গ্রামের কয়েক জন মাতব্বর বাসুদেব মন্ডল ও গোপাল মন্ডল।
আরও পড়ুন: দাঁতালের দাপটে নষ্ট ফসল! আতঙ্কে এলাকাবাসি
জানা যায় বেশ কিছু দিন আগে গ্রামের সহদেব মন্ডল ও মহাদেব মন্ডল দুই ভাইয়ের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিবাদ চরমে ওঠে তা হাতাহাতি পর্যন্ত গড়ায়। সেই ঘটনা ঘটনায় ঘাটাল থানায় অভিযোগ জানায় মহাদেব মন্ডল। ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ। আর সেই তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতেই সাক্ষী হিসাবে নাম উঠে আসে রেবা মন্ডলের ছেলে সঞ্জিত মন্ডলের। তারপরে বাধে যত গন্ডগোল।
গ্রামের কিছু বাসিন্দাদের অভিযোগ সঞ্জিত কেন এই ঘটনায় মহাদেবের হয়ে সাক্ষী দেবে যেখানে গ্রামের মানুষজন বিষয়টি দেখছে বা পুলিশকে গ্রামের অন্য কেউ সাক্ষী দেয়নি। তারপরেই সাক্ষী দেওয়ার অপরাধে গ্রামে একাধিকবার সালিশি সভা ডাকা হয়, সেখানে সঞ্জিত ও তার মা রেবা মন্ডলকেও ডাকা হলে গ্রামের সেই সভায় না যাওয়ার ফলেই বেশ কিছু গ্রামের মানুষজন সিদ্ধান্ত নেয় যে গ্রামকে অপমান করেছে সঞ্জিত তাই তাদের দোকানে কেউ যাবে না। যে তাদের দোকানে যাবে তার পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। তারপরেই গ্রামের মাতব্বরেরা সঞ্চিতের দোকানে তালা দিয়ে দেয় বলে অভিযোগ।
রেবার ছেলে দোকানে তালা ভেঙে ঢুকলেও গ্রামের মানুষরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশের সামনেই চলে উভয়পক্ষের উপর আরোপ পাল্টা আরোপ।ঘাটাল থানার পুলিশ দাঁড়িয়ে থেকে রেবা মন্ডলের ছেলে সঞ্জিতকে দিয়ে দোকানের তালা ভেঙে দোকান খোলার ব্যবস্থা করে। যদিও এ বিষয়ে ঘাটাল ব্লকের ভিডিও সঞ্জীব দাস বলেন, "বিষয়টি শুনেছি ইতিমধ্যে গ্রামে পুলিশও গিয়েছে।এখনও বয়কটের মতো ঘটনা মেনে নেওয়া হবে না কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।গ্রামে কোনও বিবাদ থাকলে গ্রামের মানুষদের নিয়ে তা মেটানো হবে।" শুধুমাত্র পড়শীর হয়ে সাক্ষী দেওয়ার অপরাধে একটি পরিবারকে এভাবে বয়কট করে রাখার ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে ঘাটালে।
সুকান্ত চক্রবর্তী