TRENDING:

True Strory: ১৭ বছর আগে অকালে ঝরে গিয়েছিল প্রাণ, নিজের ছেলেকে হারিয়ে আজ শত সন্তানের মা-বাবা এই দম্পতি পাশে দাঁড়িয়েছে রামকৃষ্ণ মিশন, কুর্নিশ করে সকলে

Last Updated:

Father and Mother Of several Children: নিজের একমাত্র ছেলেকে হারিয়েছেন, এখন শত ছেলের অভিভাবক বৃদ্ধ দম্পতি 

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
পশ্চিম মেদিনীপুর: আজ থেকে ১৭ বছর আগে, দুর্গাপুজোর পরপরই নিজেদের একমাত্র প্রিয় মেধাবী সন্তানকে হারিয়েছিলেন এই দম্পতি। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে ভেঙে পড়েছিলেন তারা। অপেক্ষা এবং চোখের জল ভরসা ছিল সন্তান হারা এই বাবা-মায়ের। তবে বাড়ির পাশে মেদিনীপুর রামকৃষ্ণ মঠ ও আশ্রম এসে বদলে যায় সবকিছু। একটি অনুষ্ঠানে পরিচিত হয় মঠের মহারাজদের সঙ্গে। এরপর থেকে আজ পর্যন্ত সন্তানহারা এই দম্পতি হয়ে ওঠেন একাধিক সন্তানের বাবা-মা।
advertisement

এখনও অপেক্ষা, চোখের জল, প্রতিবেশী, প্রিয়জনদের নানা কটূক্তি তাঁদের নিত্যসঙ্গী হলেও তাঁদের জীবন সঁপে দিয়েছেন এলাকারই পিছিয়ে পড়া পরিবারের ছেলেমেয়েদের মানুষ গড়ার কাজে। ছেলের মৃত্যুর পর রামকৃষ্ণ মিশনের সহযোগিতা নিয়ে নিজের বাড়িতে এলাকার পিছিয়ে পড়া ছেলেমেয়েদের রেখে তাদের রান্না করে খাওয়ানো, বিদ্যালয় পাঠানো, প্রাইভেট টিউশন এবং সর্বোপরি তাদেরকে মানুষের মত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলছে সন্তানহারা এই দম্পতি। তাদের এই উদ্যোগ এবং প্রায় সতেরো বছর ধরে তাদের পরিশ্রমকে কুর্নিশ জানিয়েছেন সকলে।

advertisement

আরও পড়ুন – Miracle Boy: খুদে বালকের দারুণ কাণ্ড, তার কচি হাতেই প্রাণ পায় প্রতিমা, মন্ত্রোচ্চারণে তুষ্ট হন দুর্গতিনাশিনী, চিনে নিন এই মিরাকেল বালককে

পিছিয়ে পড়া পরিবারের ছেলেমেয়েদের সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে এনে তাদের মানুষের মত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলছেন এই বৃদ্ধ দম্পতি। দুজনেই শারীরিক অসুস্থতাকে দূরে সরিয়ে রেখে পিছিয়ে পড়া পরিবারের ছেলেমেয়েদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত করে তাদের ছেলেকে খুঁজে পেয়েছেন শত ছেলের মাঝে। যে ছেলেরা হয়ত অসামাজিকতাকে নিজেদের পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিল, তাদেরকে স্রোতে ফিরিয়ে এনে প্রতিষ্ঠিত করে তুলেছেন এই দম্পতি।

advertisement

View More

পশ্চিম মেদিনীপুরের মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা সত্তরোর্ধ শৈলেন্দ্রনাথ মাইতি এবং তার স্ত্রী মঞ্জু মাইতি। শৈলেন্দ্র বাবু একটা সময় বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজে থাকলেও পরবর্তীতে আইআইটি খড়্গপুরের রুরাল ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টে ইন চার্জ হিসেবে নিজের দায়িত্ব সামলেছেন। সবই ঠিক চললেও, মুহূর্তে বদলে যায় সব কিছু। ১৩ বছর বয়সী একমাত্র ছেলের মৃত্যুর পর বদলে যায় সব কিছু।

advertisement

ছেলেকে হারিয়ে একাকীত্বে বাড়িতে সময় কাটতমঞ্জু দেবীর। এরপর বাড়ির পাশে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অনুষ্ঠানের একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে কথা হয় মহারাজ সহ বিশিষ্টজনেদের সঙ্গে। এরপর মেদিনীপুর মঠ ও মিশনে আবৃত্তি শেখানোর কাজ শুরু করেন মঞ্জু দেবী। ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি ভালোবাসা দেখে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন বেশ কয়েকজন পিছিয়ে পড়া পরিবারের বাচ্চাদের দেখাশোনা করার অনুরোধ করেন মঞ্জু দেবীর কাছে।

advertisement

এরপর তাদের আর্থিক সহযোগিতায় প্রথমে ছয় জন, পরে সতেরো জন, এভাবে প্রতি বছর ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়িতে রেখে সন্তান স্নেহে মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলেন এই দম্পতি। প্রতিদিন সকাল থেকে তাদের রান্না করার কাজ শুরু করেন মঞ্জু দেবী। নির্দিষ্ট সময়ে তাদের খাইয়ে বিদ্যালয় পাঠান। শুধু তাই নয় বাড়িতেই চলে প্রাইভেট টিউশন। বেশ কিছু জন শিক্ষক শিক্ষিকা তারা বিনা পারিশ্রমিকে তাদের শিক্ষা দেন। বেশ কয়েকজন ছেলে তার বাড়িতে থেকেই পড়াশোনা করে।

এভাবেই দীর্ঘ ১৭ টা বছর কাটিয়ে ফেলেছেন এই বৃদ্ধ দম্পতি।বিভিন্ন সময়ে সহযোগিতা করেছেন অশোক মাইতি, সুভাষ রঞ্জন মন্ডল, সিদ্ধার্থ পণ্ডা,শংকর পণ্ডা সহ একাধিক ব্যক্তি।বিভিন্ন সময়ে এসেছে নানান কটুক্তি, নানা বাধা। তবুও সংকল্প নিয়ে আজ থেকে প্রায় ১৭ বছর আগে ছেলের মৃত্যুর পর শুরু করেছিলেন যে কাজ, বাধা এলেও মুখ ফেরান নি এই তারা।

এখনও তার বাড়িতে থাকা বেশ কয়েকজন পিছিয়ে পরিবারের ছেলেরা বিভিন্ন জায়গায় প্রতিষ্ঠিত এবং নামিদামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষালাভ করছে। নিজের ছেলেকে নিয়ে যে স্বপ্ন দেখেছিলেন শৈলেন্দ্র বাবু এবং মঞ্জু দেবী, তা প্রতি বছর এই সমস্ত ছেলেদের সফলতা আরও মনে বেশি করে আশা যোগাচ্ছে। তবে প্রতিদিন এই দম্পতির দিনযাপন এবং তাদের উদ্যোগকে কুর্নিশ জানাতে হয়।

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
লালগোলাতে রাজরাজেশ্বরী রূপে পূজিতা হন মা কালী! দেওয়া হয় ইলিশের ভোগ
আরও দেখুন

Ranjan Chanda 

বাংলা খবর/ খবর/পশ্চিম মেদিনীপুর/
True Strory: ১৭ বছর আগে অকালে ঝরে গিয়েছিল প্রাণ, নিজের ছেলেকে হারিয়ে আজ শত সন্তানের মা-বাবা এই দম্পতি পাশে দাঁড়িয়েছে রামকৃষ্ণ মিশন, কুর্নিশ করে সকলে
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল