প্রসঙ্গক্রমে বলা যায় কাশ্মীরে ডাল লেকের ওপর বলিউড সিনেমা এখনও মনে পড়ে দর্শকদের। যেখানে হিরো-হিরোইন এর দৃশ্য শুট করা হয়। যেখানে পর্দা ফেলা শিকারার দৃশ্য। আর সেই মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্যে বিভোর হয়ে যান ভারতবাসীরা। অনেকেরই ইচ্ছা অন্তত একবার কাশ্মীরের সেই ডাল লেকে গিয়ে শিকারায় চেপে ঘোরার স্বাদ নেওয়া। কিন্তু সাধ্য না থাকলে স্বাদ পূরণ হয় না। অর্থনৈতিক কারণে অনেকেই কাশ্মীর যেতে পারেন না।
advertisement
আরও পড়ুন Murshidabad News: ফসল খেয়েছে ছাগল! অভিযোগে ধারাল অস্ত্রের কোপ দুজনকে মৃত ১
এবার সেই কাশ্মীরের সিকারার স্বাদ পাওয়া যাবে এই বার জঙ্গলমহল অধ্যুষিত পশ্চিম মেদিনীপুরের খোদ মেদিনীপুর ও খড়গপুর সংযোগস্থল কংসাবতীতে। এই মুহূর্তে ব্যাটারি চালিত একটি বড় শিকারা এবং পালবাহী সাতটি শিকারা নিয়েই পথচলা শুরু হয়েছে। এই ট্যুরিজমের নাম দেওয়া হয়েছে 'কংসাবতী এগ্রি অ্যাডভেঞ্চার পার্ক'। তারই একটি অঙ্গ এবং অংশ হল জলকে কেন্দ্র করে এই পর্যটক এর জন্য শিকারার ব্যবস্থা করা।
ছোট বড় শিকারাতে চেপে পর্যটকেরা এই কংসাবতীর নদীর মাঝখান গড়ে ওঠা তিনটি দ্বীপ যেমন পরিদর্শন করতে পারবে তেমনি থাকছে এই দ্বীপে গিয়ে রান্নাবান্না এবং বনভোজনের আনন্দ নেওয়ার ব্যবস্থা। এছাড়াও এই কংসাবতীর এক প্রান্তে প্রতিদিন যেভাবে পরিযায়ী পাখিরা আসে সেই পরিযায়ী পাখিদের দেখার সাধও মিলবে এই সিকারাতে। তবে এরই পাশাপাশি এখানে আগামী দিনে গড়ে তোলা হবে নদীবক্ষে জলের রাইড স্কুবা, স্পিডবোট, ব্যানানা, ড্রাইভিং এর মতন বিভিন্ন জল ক্রীড়ার ব্যবস্থা। সঙ্গে থাকছে এই শিকারার উপর চেপে রেস্তোরাঁ, হাউসবোট, বাস্তুতান্ত্রিক উদ্যান বিনোদন অঞ্চল, ফায়ার ক্যাম্প, অ্যাডভেঞ্চার সঙ্গে লাইট ও সাউন্ড শোর মজা নেওয়া।
শুধু জেলার না জেলার বাদে রাজ্য এবং রাজ্য বাদে দেশ ও বিদেশের পর্যটকদের জন্য ঝুমুর গান, কবিগান, ছৌ নাচ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা থাকছে। এরই পাশাপাশি ঠিক হরিদ্বার ও বারাণসীর আদলে নদীর তীরে সন্ধ্যা আরতি দেবেন স্থানীয়রা। মূলত এলাকার বিশেষ করে খড়গপুর ও মেদিনীপুরের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ২০০০ মহিলাদের ওপর নির্ভর করে গড়ে উঠতে চলেছে এই শিকারা পয়েন্ট। মহিলাদের সাহায্য করার জন্য পুরুষরা ও সদা বিদ্যমান থাকবে এই অ্যাডভেঞ্চারে। উদ্যোক্তাদের মতে আগামী পুজো থেকেই শুরু হয়ে যাবে এই অ্যাডভেঞ্চার।
আরও পড়ুন Birbhum News : লটারির টিকিট কেনার আগে সাবধান, ভুয়ো লটারিতে ছেয়ে গিয়েছে জেলায়
অ্যাডভেঞ্চারের উদ্যোগী অমর প্রসাদ পাত্র বলেন দীর্ঘদিন বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে এই নদী। তাই কাশ্মীর এবং আন্দামানের স্বাদ দিতে আমরা উদ্যোগী হয়েছি। প্রায় তিন একর জায়গা জুড়েই আমরা এই শিকারার ব্যবস্থা করব। শুধু তাই নয় বিপ্লবী শহর মেদিনীপুরের বহু পুরানো স্মৃতিকেই তুলে ধরবো আমরা এই অ্যাডভেঞ্চারে। এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ২ হাজার মহিলাদের আমরা এই সিকারাতে অন্তর্ভুক্ত করব সঙ্গে দ্বীপগুলোতে যাতে ফায়ার ক্যাম্প ও বনভোজনের স্বাদ নিতে পারে দেশ-বিদেশের পর্যটকেরা সেই ব্যবস্থাই করব। তবে ১০ কোটি টাকা দিয়ে আমাদের পথ চলা শুরু হলেও আমাদের এই অ্যাডভেঞ্চারে ১০০ কোটি টাকাও কম পড়ে যাবে।