এখানে নতুন প্রজন্মের হাতে আবারও ফিরে এসেছে পুরনো ঐতিহ্য। কালীপুজোকে সামনে রেখে গ্রামের খুদে পড়ুয়াদের হাতেই তৈরি হচ্ছে মাটির প্রদীপ। কোশিগ্রামের গড়াইপাড়ায় কিছু বড় দাদারা ছোটদের এই কাজে উৎসাহ জোগাচ্ছেন। দাদাদের কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে ভালোবেসে প্রদীপ তৈরি করছে ছোট ছোট পড়ুয়ারা।
advertisement
উদ্যোক্তা শুভেন্দু সাহা বলেন, “স্বদেশি চিন্তাধারা ফিরিয়ে আনা এবং পাড়ার ছোট ছোট ভাই বোনেদের মোবাইল আসক্তি কমিয়ে তাঁদের শিল্পীসত্ত্বাকে উদ্বুদ্ধ করার জন্যই এই উদ্যোগ।” যে সময়ে বর্তমান প্রজন্মের অধিকাংশ শিশু মোবাইল গেম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় মগ্ন, ঠিক সেই সময় কোশিগ্রামের গড়াইপাড়ার কয়েকজন দাদার উৎসাহে এই ছোট ছেলেমেয়েরা মাটির প্রদীপ তৈরিতে ব্যস্ত। পড়াশোনার ফাঁকে তাঁরা হাতে তুলে নিয়েছে মাটি ও জল, নদীর ধার থেকে সংগ্রহ করছে মাটি। সেই মাটিকে নানা পদ্ধতিতে প্রদীপের আকার দেওয়া হচ্ছে। পরে সেগুলি শুকিয়ে রাঙানো হচ্ছে উজ্জ্বল লাল রঙে।
একাদশ শ্রেণীর পড়ুয়া পূজা সাহা জানায়, “মোবাইল ছেড়ে আমরা মাটির প্রদীপ তৈরি করছি, এতে আমাদেরও ভাললাগছে। এই প্রদীপ বিক্রির টাকা আমরা পুজোর কাজেই লাগাব।” প্রদীপ তৈরির পর সেগুলি স্থানীয় বাজার এবং অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে। পড়ুয়াদের কথায়, প্রদীপ বিক্রির টাকা তাঁরা আসন্ন কালীপুজোর নানা কাজে ব্যবহার করবে। খুদেরা মোবাইল ছেড়ে এহেন কাজ করার জন্য পড়ুয়াদের অভিভাবকরাও বেশ খুশি।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
এই প্রসঙ্গে অভিভাবক রূপালী সাহা বলেন, “আমাদের ছেলেমেয়েরা মোবাইল ছেড়ে আনন্দের সঙ্গে এই কাজটা করছে দেখে সত্যিই ভাললাগছে। ওরা আরও অনেক এগিয়ে চলুক, আমরা পাড়া-প্রতিবেশী সকলেই পাশে থাকব।” সব মিলিয়ে, কোশিগ্রামের গড়াইপাড়ার এই উদ্যোগ শুধু হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনছে না, বরং শিশুদের মোবাইল আসক্তি কাটিয়ে শিল্পচর্চায় যুক্ত করছে। মাটির গন্ধে মিশে থাকা তাঁদের এই সৃজনশীলতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতা আজ হয়ে উঠেছে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, যেখানে ঐতিহ্য, শিল্প ও নতুন প্রজন্ম একসঙ্গে বুনছে আশার আলো।