দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতার মালা গ্রামের দেবসরকার বাড়ির প্রতিটি ইট, কাঠ, পাথর এখানে ইতিহাসের স্বাক্ষী। দেবী দুর্গার আরাধনায় ইতিহাসকে সাক্ষী রেখে সেই বনেদিয়ানার পরিচয় এখনও প্রজন্মের পর প্রজন্ম বহন করে চলেছে দেবসরকার পরিবার। পুজো উপলক্ষে দেবীর আবাহনের প্রাক প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে।একটা সময় দেবসরকারদের জমিদারি ছিল কলকাতা থেকে সুদূর সুন্দরবনের লাট অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত।
advertisement
কলকাতার সম্ভ্রান্ত ব্যবসায়ী পরিবারের সদস্য বিহারীলাল দেব প্রথম ফলতার মালা গ্রামে আসেন ব্যবসায়িক প্রয়োজনে। লাটসাহেবদের সঙ্গেও ছিল দারুণ সখ্য। সেই সুবাদে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি একসময় দেব পরিবারকে সরকার উপাধিতে ভূষিত করে। এ নিয়ে দেবসরকার বাড়ির সদস্য সজল দেবসরকার জানান, ব্যবসায়িক কাজে কলকাতা থেকে মালা গ্রামে এসে গ্রাম্য প্রকৃতির মায়ায় আবদ্ধ হন বিহারীলাল দেব। মালা নিবাসী নাগ বংশের কন্যার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এর পর মালা গ্রামেই পাকাপাকিভাবে বসবাস শুরু করেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ “আর কিছু নাম উঠে এলে তাদেরও…!” যাদবপুরের ছাত্রীর মৃত্যুর তদন্তভার নিয়েই যা জানালেন হোমিসাইড শাখা
আরও পড়ুনঃ নয়ডা নয়, বিভাস অধিকারীর প্রতারণা চক্রের বীজ বপন শুরু হয় বাংলার এই জায়গা থেকে! চাঞ্চল্যকর তথ্য
গ্রামে নিজের তৈরি রাজপ্রাসাদের মতো বাড়িতে বসে জমিদারি ও ব্যবসার কাজ দেখাশোনা করতেন বিহারীলাল। প্রথমে এখানে মন্দির নির্মাণ করে কুলদেবতা শ্রী শ্রী লক্ষ্মীজনার্দন জিউর মূর্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। এমনই এক পরিবারে বাংলার ১১৫২ সালে প্রথম শুরু হয় উমার আরাধনা। বিহারীলালের পুত্র কালীকৃষ্ণ দেবসরকার জমিদার বাড়িতে প্রথম আয়োজন করেন দুর্গাপুজোর। প্রথমদিকে ইংরেজ সাহেবরাও নিমন্ত্রিত থাকতেন দেবসরকার বাড়ির দুর্গোৎসবে। বর্তমানে সেই পুরোনো ঐতিহ্য মেনে দেব সরকার বাড়ির বর্তমান সদস্যরা ঝাঁপিয়ে পড়েছেন উমার আরাধনায়। প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী এই পুজো দেখতে আপনাকে আসতেই হবে ফলতাতে।