পুজোর সময় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা জুড়ে হইচই পড়ে যায় নাবালিকা নিখোঁজ ঘিরে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রেমিক পুরুষের হাত ধরে বাড়ি ছাড়ে নাবালিকারা। বিভিন্ন জায়গা থেকে ওই নাবালিকাদের উদ্ধার করে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ বাড়ি ফিরিয়ে দেয়। সেরকমই একটি ঘটনা ঘটেছিল ময়না থানার অন্তর্গত পশ্চিম নৈছনপুর গ্রামে! বাড়ি থেকে ঠাকুর দেখতে যাওয়ার নাম করে প্রেমিক পুরুষের হাত ধরে পালিয়ে যায় ১৬ বছর বয়সী এক নাবালিকা। বাড়ির লোক বিস্তর খোঁজাখুঁজি করেও খোঁজ পায়নি। শেষে ২০ অক্টোবর ময়না থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করে ওই নাবালিকার বাবা। সেই নিখোঁজ সংক্রান্ত মামলার তদন্ত শুরু করে ময়না থানার পুলিশ।
advertisement
হঠাৎ করেই খোঁজ মিল ছিল না মেয়ের। কোন উপায়ে না পেয়ে ময়না থানায় অভিযোগ দায়ের করে নাবালিকার বাবা। যদিও নাবালিকার বাবা তার মেয়ে কিডন্যাপিং হয়েছে এরকম বিষয়ই পুলিশের কাছে জানায়। ময়না থানার পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, ২০ অক্টোবর থানায় একটি মিশিং ডায়েরি করেন নিখোঁজ কন্যার পিতা। অবশ্য সেখানে উল্লেখ রয়েছে মেয়ের কিডন্যাপিং হয়েছে। এর পরেই ময়না থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করে। টাওয়ার লোকেশন করে ময়না থানার পুলিশ জানতে পারে মেয়েটি মুম্বই শহরের রয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রকাশ্যে জুয়া খেলছে মহিলা-পুরুষ! পাহারায় পুলিশ! মালদহের ঘটনায় বিরাট চমক
ময়না থানার সাব ইন্সপেক্টর চন্দন মাইতি মুম্বাই গিয়ে ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করে। তদন্ত ভার যতই এগোতে থাকে ততই পুলিশের কাছে স্পষ্ট হয় ওই মেয়েটি তার প্রেমিকের সাথে প্রেমের টানেই মুম্বই শহর পাড়ি দিয়েছিল। মুম্বইয়ের মালাটে প্রেমিকের সঙ্গেই একটি বস্তি এলাকায় ছিল ওই নাবালিকা মেয়েটি। সেই সূত্র ধরেই পুলিশ প্রথমে হানা দেয় ওই শহরে, তবে খোঁজ মেলেনি সেখানে। অবশেষে অন্ধেরি নামের এক এলাকার বস্তি থেকে উদ্ধার করা হয় দু'জনকে। অন্ধেরির ফাঁকা ফ্ল্যাট থেকেই আটক করা হয় প্রেমিক সহ মেয়েটিকে। যেহেতু মেয়েটি এখনও অপ্রাপ্তবয়স্ক, তাই নিয়মানুযায়ী কোর্টে তোলার আগেই করা হয় মেডিকেল টেস্ট।
ওই নাবালিকার পরিবার সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে তাদের বাড়িতে যাতায়াত ছিল প্রেমিকের। সেখান থেকেই সম্পর্ক তৈরি হয়। ওই নাবালিকা এর আগেও একবার প্রেমিক পুরুষের হাত ধরে বাড়ি ছেড়েছিল। ময়না থানার পুলিশ উদ্ধার করে বাড়ির লোকের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছিল। তবে এবার আগে থেকেই আটঘাট বেঁধে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিয়েছিল ওই নাবালিকা ও তার প্রেমিক। কিন্তু মুম্বাইতে গিয়েও হল না শেষ রক্ষা। আপাতত ওই নাবালিকার প্রেমিকের ঠাঁই হয়েছে পুলিশকে হেফাজতে এবং নাবালিকার ঠাঁই হয়েছে সরকারি হোমে।
Saikat Shee