পেটের টানে শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা ভোর তিনটেয় ঘুম থেকে ওঠেন শ্যামলবাবু। বর্ধমান থেকে খবরের কাগজ এনে এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দেন। দুপুর পর্যন্ত বাজারে ঘুরে, দোকানে দোকানে খবরের কাগজ ফেরি করেন। সেখান থেকে যা আয় হয় তা দিয়েই কোনরকমে চালিয়ে নেন সংসার। ভোর থেকে এই উদয়স্থ পরিশ্রমের পরেও সপ্তাহে চারদিন এলাকায় ছেলেমেয়েদের বিনামূল্যে অ্যাথলেটিক্সের প্রশিক্ষণ দেন। এছাড়াও ফুটবল মাঠে তাঁকে লাইনসম্যান, রেফারির ভুমিকায় দেখা যায়।
advertisement
আরও পড়ুন: জব কার্ড না থাকায় মেলেনি আবাস যোজনার ঘর, হতাশায় ডুবে মধুপুর
শ্যামলবাবুর কাছে প্রশিক্ষণ নিয়ে গলসির বহু ছাত্রছাত্রী জেলা ও রাজ্যে অ্যাথলেটিক্সে সাফল্য পেয়েছে। উজ্জ্বল করেছে এলাকার মুখ। যার নেপথ্য কারিগর হিসেবে থেকে গিয়েছেন এই সামান্য খবরের কাগজ বিক্রেতা। খেলার নেশাগ বারবার তাঁকে মাঠে টেনে নিয়ে যায় বলে জানান শ্যামল গোস্বামী। তিনি বলেন, ভোর ৩ টেয় উঠে প্রথমে আমি রোজগরের ধান্দায় বেড়িয়ে যাই। তারপর একটু বিশ্রাম নিয়ে বিকেলে ৩.৩০ নাগাদ মাঠে পৌঁছে যাই। এলাকার ছেলেমেয়েদের শরীর-স্বাস্থ্য ভালো রাখার বিষয়টায় নজর দেওয়ার জন্যই এইসব করা। ২০১০ সাল থেকে তিনি অ্যাথলেটিক্সের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছেন বলে জানান।
শ্যামল গোস্বামীরা আছে বলেই বোধহয় আজও গ্রাম বাংলায় খেলাধুলো টিকে আছে। এই নিঃস্বার্থ সৈনিকরাই আমাদের সমাজের গর্ব।