সেই লক্ষ্মী পুজো আজও ভক্তি নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে আসছে গ্রামের মানুষ। কৃষকদের আর্থিক কষ্ট, অর্থাহার, অনাহার তখন ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী।
সেই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতেই গ্রামে প্রচলন করা হয়েছিল লক্ষ্মী পুজোর। এরপর জলঘর গ্রাম পঞ্চায়েতের গোপীনগর গ্রামে আজও অত্যন্ত আড়ম্বরের সঙ্গে পালন করা হয় লক্ষী পুজোর।
advertisement
এই গ্রামে দুর্গা পুজোর কোনও প্রচলন নেই, তাই লক্ষ্মীর পুজোতেই টানা তিন দিন মেতে থাকেন গ্রামবাসীরা। এমনকি লক্ষ্মীপুজোর অপেক্ষায় বাক্সবন্দি থাকে নতুন জামাকাপড়ও।
এই লক্ষ্মী পুজোয় বিশেষত্ব হল, লক্ষ্মীর মূর্তি বলতে রাম লক্ষনের সঙ্গে সীতা মূর্তিকেই বোঝানো হয়। অর্থাৎ লক্ষীর যে চিরাচরিত রূপ পদ্মের উপর বসে পেঁচা বাহন নিয়ে সেই রূপ কিন্তু দক্ষিণ দিনাজপুরের লোকাচার অনুযায়ী অনেক অঞ্চলে মেলেনা। এখানে রাম সীতা লক্ষণের মূর্তিকেই লক্ষ্মীর মূর্তি হিসেবে পুজো করা হয়।
গোপীনগর গ্রামেও একই ধরনের মুর্তি। গ্রামবাসীরা বিশ্বাস করেন ভগবানের আশীর্বাদে আর তাদের কোনও আর্থিক সমস্যা নেই। বরং আগের থেকে গ্রাম উন্নত হয়েছে। জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে। ফলে গ্রামবাসীদের আস্থা ও বিশ্বাস বেড়েছে লক্ষ্মী পুজোকে কেন্দ্র করে। তিন দিনের লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে এই গ্রামে রাতে বাউল, আলকাপ, পঞ্চরসের মত লোকগানের আসর বসে।
প্রত্যন্ত এ গ্রামের পুজো দেখতে ভিড় করেন আশপাশের আরও কয়েকটা গ্রামের মানুষ। পুজো উপলক্ষে বসে মেলাও। তবে এখানে আবার পুজো শেষে লক্ষ্মীর বিসর্জন হয় না। সারাবছর মন্দিরেই থাকে মূর্তি। পরের বছর পুজোর আগে পুরানো মূর্তি বিসর্জন দিয়ে নতুন প্রতিমা আনা হয়, এটাই এখানকার রীতি।
সুস্মিতা গোস্বামী