কালিম্পংয়ের হোটেলগুলিতে এখন এয়ার কন্ডিশনার পর্যন্ত চালাতে হচ্ছে। যা আগে অকল্পনীয় ছিল। হোটেল মালিকদের কথায়, “পর্যটকেরা অভিযোগ করছেন। ফ্যান চালিয়েও গরম কমছে না। তাই অনেক হোটেলেই এখন এসি লাগানো হচ্ছে।”
advertisement
পর্যটক অজয় বাড়িয়া জানালেন, “শিলিগুড়িতে প্রচণ্ড গরম ছিল, তাই ভেবেছিলাম পাহাড়ে কিছুটা স্বস্তি মিলবে। কিন্তু ষষ্ঠী থেকে নবমী—প্রতিদিনই গরমে নাজেহাল অবস্থা।” কলকাতার পর্যটক সুতীর্না চৌধুরীও বলেন, “ছোট থেকে বহুবার পাহাড়ে এসেছি। কিন্তু দুর্গাপুজোর সময় পাহাড়ে এত গরম কোনোদিন অনুভব করিনি। একেবারে হতাশ হয়ে গেছি।”
আসলে পুজোর ঠিক আগে উত্তরবঙ্গে টানা বৃষ্টিতে আতঙ্ক ছিল পর্যটন ব্যবসায়ীদের। অনবরত বৃষ্টিতে আশঙ্কা হচ্ছিল—এই মরশুমে হয়তো পাহাড় ফাঁকাই থাকবে। কিন্তু ষষ্ঠী থেকেই আবহাওয়া হঠাৎ বদলে যায়। ঝলমলে আকাশ, বৃষ্টির ভয় নেই। ফলে পর্যটক ভিড় জমল পাহাড়ি শহরগুলিতে। তবে ঠান্ডা না পাওয়ার আক্ষেপ এবার মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কালিম্পংয়ের এক হোটেল মালিকের কথায়, “গত কয়েক বছর ধরেই দেখছি পাহাড়ে ধীরে ধীরে গরম বাড়ছে। পুজোর মরশুমেও ফ্যান চালাতে হচ্ছে, এবার তো এসিও চালাতে হচ্ছে। আবহাওয়া আর আগের মতো নেই।” স্থানীয় বাসিন্দা শর্মিলা লেপচা জানালেন, “গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর প্রভাব পাহাড়েও পড়ছে। আগে যে সময়ে কুয়াশা আর ঠান্ডার জন্য পর্যটকরা পাহাড়ে আসতেন, এখন সেই পরিবেশ ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে।”
পাহাড় মানেই স্বস্তির হাওয়া, শীতল আবহাওয়া—এই চিরাচরিত ধারণাটাই যেন ভেঙে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। ঠান্ডার খোঁজে পাহাড়ে আসা পর্যটকরা গরমের দাপটে কার্যত হতাশ। পর্যটন ব্যবসায়ীদেরও চিন্তা বাড়ছে, কারণ যদি এই পরিবর্তন চলতেই থাকে, তবে ভবিষ্যতে পর্যটকের সংখ্যা কমে যেতে পারে।
পুজোর ভিড় জমলেও এবার পাহাড়ে ঠান্ডার স্বাদ পাননি কেউই। বরং গরমে কাহিল পর্যটক ও স্থানীয়রা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটাই গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর প্রভাব। পাহাড়ের মনোরম পরিবেশ, ঠান্ডা আবহাওয়া যদি হারিয়েই যায়, তবে ভবিষ্যতে পাহাড়ি পর্যটনের ছবিটা কেমন দাঁড়াবে—সেই প্রশ্নই এখন ঘুরছে সকলের মনে।