বারাসতের তিন যুবক সিকিমে বেড়াতে যান। তখনও জানতেন না চোখের সামনে দেখতে হবে সেই বীভৎস ঘটনা। নিজেরা হয়তো প্রাণে বেঁচে বাড়ি ফিরেছেন, কিন্তু চোখের সামনে একাধিক মানুষের সেই মৃত্যুর মুহূর্ত যেন আজও তাঁদের দু'চোখের পাতা এক হতে দিচ্ছে না। সেই সময়ের অভিজ্ঞতা তাড়া করে বেড়াচ্ছে তাঁদের। টানা প্রায় আধঘণ্টা বরফের নীচে চাপা পড়ে থেকে কোনও এক ঐশ্বরিক শক্তিতে বেঁচে ফিরেছেন বলেই মনে করেন ওই তিন যুবক। তাঁদের মধ্যে একজন পুরোপুরি বরফের তলায় চাপা পড়ে গিয়েছিলেন।
advertisement
আরও পড়ুন: অফিসের অবসরে বেড়াতে গিয়েই সব শেষ, সিকিমে তুষারধসে সৌরভের মৃত্যু! চোখের জলে বিদায়...
প্রায় আধ ঘন্টারও বেশি সময় ওই দম বন্ধ করা পরিস্থিতিতে থাকতে হয়েছিল। বাকি দুজনের শরীরের অধিকাংশ অংশ বরফের তলায় থাকলেও, স্থানীয় মানুষদের চেষ্টায় উদ্ধার করা হয় তাঁদের। ওই পরিস্থিতিতে কী করবেন তা বুঝে উঠতে পারছিলেন না তাঁরা। দীর্ঘক্ষণের প্রচেষ্টায় অবশেষে উদ্ধার করা হয় তৃতীয় যুবককেও। মৃত্যুর মুখোমুখি হয়ে ফিরে এসে সেই ঘটনার কথাই তুলে ধরলেন ক্যামেরার সামনে। এখনও চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট।
আরও পড়ুন: সাইকেল চুরির কিনারা করতে গিয়ে এগুলি কী উদ্ধার হল? নবদ্বীপে তোলপাড়
বারাসত শহরের তিন যুবক সুমিত দাস, তথাগত রায়চৌধুরী ও অরিন্দম দাশগুপ্তরা সেদিন ছিলেন সিকিমের ১৭ মাইলে। অন্য পর্যটকদের মতোই একটি ঝর্ণার পাশে ছবি তুলছিলেন ওই তিন বন্ধু-সহ গাড়ির সহযাত্রীরা। হঠাৎ করেই কেঁপে উঠল গোটা এলাকা। মুহূর্তেই কিছু বুঝে ওঠার আগে, ভয়ঙ্কর বরফের চাঁই নেমে এসে তাঁদের কিছুটা ঠেলে নিয়ে গিয়ে ঢেকে দেয়। বরফের তলায় চাপা পড়তেই চারদিক অন্ধকার হয়ে যায়, জ্ঞান হারান সুমিত দাস। জ্ঞান হারানোর কারণেই হয়তো আজ সুমিত বেঁচে রয়েছেন বলেই মত বাকি বন্ধুদের।
না হলে, ওই পরিস্থিতিতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। সেনা জওয়ানদের তৎপরতায় প্রাণে বাঁচেন সুমিত। বেলচা দিয়ে বরফ কেটে বের করে আনা হয় সুমিতকে। আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে যেতে জ্ঞান ফেরে তাঁর। এখনও তাঁর চিকিৎসা চলছে ট্রমা কাটাতে। এখন প্রতিবেশীরাও দেখতে আসছেন তাঁদের, সেই মুহূর্তের কথা শুনে শিউরে উঠছেন অনেকেই। তবে সুস্থ শরীরে বাড়ি ফেরায় খুশি পরিবার।
রুদ্র নারায়ণ রায়