বাম আমলে ২০০৯ সালে নিউটাউনের একশন এরিয়া তিন এ ভাঙড়ের চাঁদা কাঁঠালবেড়িয়া মৌজাতে ৫০ একর জমি দেওয়া হয় বিখ্যাত তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা উইপ্রোকে। ৭৫ কোটি টাকার বিনিময়ে ৫০ একর জমি পায় উইপ্রো। ঠিক হয় ৯৯ বছরের জন্য লিজ পাওয়া জমির ৭৫ শতাংশ জায়গা জুড়ে তথ্যপ্রযুক্তি বা সেই সম্পর্কিত কাজ করতে হবে। ২০১০ সালে উইপ্রো জমি লিজের প্রথম কিস্তি হিসাবে ১৮.৯ কোটি টাকা দেয় হিডকোকে। এরপর রাজ্যে পালাবদল হলে ২০১৪ সালে তৃণমূল সরকারের আমলে বকেয়া ৫৮.৯ কোটি টাকা দেয় হিডকোকে।যদিও সব টাকা পরিশোধ করলেও কাজ শুরু করতে গড়িমসি করে উইপ্রো। উইপ্রোর পাশে জমি পায় আরও দুটি বড় সংস্থা ইনফোসিস ও আইটিসি ইনফোটেক। ওই দুটি সংস্থা কাজ শুরু করলেও নীরব থাকে উইপ্রো। রাজ্য সরকারের কাছে উইপ্রো দাবি করে, তাদেরকে স্পেশাল ইকনোমিক জোন বা এসইজেডের তকমা দিতে হবে। তা না হলে তারা কাজ শুরু করবেনা।
advertisement
রাজ্য সরকার পরিষ্কার জানিয়ে দেয় এসইজেডের মত সমস্ত সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে কিন্তু এসইজেড করা যাবে না। ২০২০ সালের মাঝামাঝি ঠিক হয় উইপ্রো ও ইনফোসিসকে লিজহোল্ডের পরিবর্তে ফ্রিহোল্ড দেওয়া হবে। এর ফলে তারা মোট জমির ৪৯ শতাংশ জায়গা জুড়ে নন আইটি অর্থ্যাত আইটির সঙ্গে সম্পর্কিত নয় এমন কিছু শিল্প করতে পারবে, যেজন্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তর থেকে আলাদা করে কোন অনুমতি নিতে হবেনা। অনেক আগেই এ রাজ্যে সলটলেক সেক্টর ফাইভে তাঁদের প্রথম ক্যাম্পাস তৈরি করে উইপ্রো। যেখানে ইতিমধ্যেই সাড়ে ছ’হাজার তথ্য প্রযুক্তি কর্মী কাজ করেন। রাজারহাট নিউটাউনে নতুন ক্যাম্পাসের জন্য প্রায় এক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে বলে জানিয়েছে উইপ্রো। শুরুতে এখানে পাঁচশো সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার কাজ পেলেও ভবিষ্যতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে কয়েক হাজার বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হবে।
অন্যদিকে, কলকাতা বিমানবন্দর থেকে দশ মিনিটের দূরত্বে নিউটাউন ইকো পার্কের চার ও পাঁচ নম্বর গেটের উল্টোদিকে ২০০ একর জমির ওপর বেঙ্গল সিলিকন ভ্যালি তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। ২০১৮ সালের ১৩ আগষ্ট এই ভ্যালির উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, প্রয়োজনে উইপ্রো, ইনফোসিস কে আরও জমি দেব। কিন্তু দ্রুত কাজ শুরু করতে হবে। সম্প্রতি সিলিকন ভ্যালিতে ৪০ একর জমির ওপর কাজ শুরু করেছে রিলায়েন্স জিও। হিডকোর ম্যানেজিং ডিরেক্টর দেবাশিস সেন বলেন, উইপ্রো যাতে দ্রুত কাজ শুরু করে সেজন্য ওঁদেরকে বলা হয়েছে।হিডকোর চিঠি পাওয়ার পরই বাউন্ডারি পাঁচিল রঙ করার পাশাপাশি মূল গেটে নতুন হোডিং লাগিয়েছে উইপ্রো।