পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৩রা জানুয়ারি দিল্লি সিবিআই সদর দফতর থেকে অ্যামাজন সেলার সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেড সংস্থার অথরাইজড রিচা বক্সির একটি অভিযোগ বিধান নগর সাইবার ক্রাইম থানায় ফরওয়ার্ড করা হয়। তাতে তিনি জানান তাদের অ্যামাজন সংস্থার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন কাস্টমার মিস লইস রোমানো অ্যামাজনের ফ্রড ডিপার্টমেন্টে অভিযোগ করেন যে এক ব্যক্তি তাকে ভয়েজ ওভার ইন্টারনেট প্রটোকলের মাধ্যমে ফোন করে, তার অ্যামাজন অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা হয়েছে এমন তথ্য দেয়। সেটি ঠিক করার জন্য তাকে ইমেল মারফত একটি লিংক পাঠায় ওই ব্যক্তি। এই লিঙ্কের মাধ্যমে ওই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকের মোবাইলে টিমভিউয়ার অ্যাপ ডাউনলোড করানো হয়। এরপরে এই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকের অ্য়াকাউন্ট থেকে ৪০ হাজার ইউএস ডলার যা ভারতীয় মুদ্রায় আনুমানিক ৩৩ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারকের দল।
advertisement
অ্যামাজনের আন্টি ফ্রড ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে তদন্ত শুরু করলে জানা যায় সেই ফোন কল এসেছিল কলকাতার সেক্টর ফাইভ অঞ্চল থেকে। এরপরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যামাজন সংস্থার পক্ষ থেকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দিল্লিতেবিষয়টি জানানো হয়। দিল্লির অ্যামাজনের হেড অফিসের পক্ষ থেকে দিল্লি সিবিআই এর কাছে অভিযোগটি জানানো হলে। এই অভিযোগটি বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় ফরওয়ার্ড করা হয়।
ঘটনা তদন্ত শুরু করে যে এড্রেস বা লোকেশন অ্যামাজনের পক্ষ থেকে প্রোভাইড করা হয়েছিল পুলিশ সেই লোকেশানে গিয়ে জানতে পারে সেখানে কোন ধরনের অফিস নেই। এরপরেই প্রতারকের ইমেইল আইডি এবং মোবাইল লোকেশন ট্র্যাক করে পুলিশ জানতে পারে। সল্টলেক সেক্টর ফাইভ ডি এন ব্লকে একটি অফিস চালানো হচ্ছে। এদিন সূত্র মারফত খবর পেয়ে সেক্টর ফাইভ এর ডি এন ২১ অফিসের ছয় তলায় হানা দেয় বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। পুলিশ সেখানে গিয়ে জানতে পারে ওই অফিসে বর্ডারলেসা সল্যুশন এবং আর জেড ওয়েব মিডিয়া নামক দুটি ভুয়ো কল সেন্টার চালানো হচ্ছে। যার মাস্টারমাইন্ড মোহাম্মদ রিজওয়ান। যিনি এই অ্যামাজন প্রতারণার চক্রের মূল অভিযুক্ত। এরপরেই সেই অফিসে হানা দিয়ে এই চক্রের মূল পান্ডা মোঃ রেজওয়ান সহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ।
তাদের কাছ থেকে একটি কম্পিউটার, দুটি ল্যাপটপ, সাতটি মোবাইল ফোন, একটি রাউটার, একটি ফিউচার, একটি অ্যাটেন্ডেন্স রেজিস্টার, একটি রাবার স্ট্যাম্প, একটি ব্য়াঙ্ক চেক বই, একটি প্যান কার্ড এবং প্রচুর পরিমাণ নথি উদ্ধার করে পুলিশ। অভিযুক্তদের বিধাননগর আদালতে তোলা হয়। এই চক্রের সঙ্গে আরও কারা জড়িত আছে সে বিষয়ে তদন্ত করে দেখছে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ।
অনুপ চক্রবর্তী