শান্তিপুরের গৃহবধূ মধুমিতা গোস্বামী সেন যশোদানন্দ প্রামাণিক এলাকায় চালু করলেন বিশেষভাবে চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য এক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। সেই উপলক্ষে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল সোমবার সকালে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বেশ কিছু বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু এবং তাদের অভিভাবকেরা। মূলত শান্তিপুর শহরের বুকে এই ধরনের শিক্ষা কেন্দ্র চালু হওয়ায় খুশি প্রত্যেকেই।
advertisement
আরও পড়ুন: বৃষ্টি থেমে রোদ উঠতেই পচন শুরু সবজিতে, পুজোর আগে আরও দাম বাড়বে
শান্তিপুরের গৃহবধূ মধুমিতা গোস্বামী সেনের সন্তানও বিশেষভাবে সক্ষম। তবে হেরে যাননি তিনি। এই লড়াই চালাবেন বলে নেননি দ্বিতীয় সন্তান। সেই লড়াইয়ের ফলোষও পেয়েছেন। নিজের বিশেষভাবে সক্ষম সন্তানকে ইতিমধ্যেই মাধ্যমিক পাস করিয়েছেন তিনি। এবার তাঁর লক্ষ্য আর্থিক কারণে বিশেষভাবে সক্ষম যে শিশুরা সঠিক প্রশিক্ষণের সুযোগ পায় না তাদের কাছে আধুনিক প্রশিক্ষণের সুবিধা পৌঁছে দেওয়া।
শান্তিপুরের যশোদানন্দ স্ট্রিটে নিজের পৈত্রিক বাড়ি রয়েছে শান্তিপুরের বাসিন্দা বিজলী খাঁ’র। বাবা-মা এর মৃত্যুর পর বাড়িটি খালিই পড়েছিল। তাঁর ইচ্ছে ছিল এই বাড়িটি কোনও সমাজসেবামূলক কাজে ব্যবহার করার। ঠিক তখনই মধুমিতাদেবী যোগাযোগ করেন তাঁর সঙ্গে। প্রস্তাব দেন তার এই বাড়িটিতে বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র করার। এক কথাতেই বিজলীদেবী রাজি হয়ে যান। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বাড়িটি তাঁদেরকে দিয়ে দেন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য।
উদ্বোধনের দিনই বিশেষভাবে চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের একাধিক অভিভাবক আসেন তাঁদের সন্তানদের নিয়ে। কুটিরপাড়া থেকে শুভ্রা প্রামানিক এসেছিলেন তাঁর সন্তান প্রিয়াংশি প্রামাণিককে নিয়ে। শান্তিপুরে গোপালপুর এলাকা থেকে সামিনা হুসেন তাঁর দুই সন্তান রিয়া হোসেন ও জিতু হোসেনকে নিয়ে আসেন এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। প্রত্যেকেই এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে তাদের সন্তানদের সঠিক শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য আগ্রহী বলে জানালেন।
সপ্তাহে একদিন করে আসবেন একজন স্পেশাল এডুকেটর হাকিব বিশ্বাস। যিনি ২০০৮ সাল থেকে এই পেশার সঙ্গে যুক্ত। এই সমস্ত শিশুদের শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে যথেষ্টই আর্থিক খরচ হয় বাবা-মায়ের। তাঁদের কথা মাথায় রেখেই ন্যূনতম খরচে চালু করা হয়েছে এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। মাসিক দেড় হাজার টাকার বিনিময়ে সপ্তাহে তিন দিন ক্লাস করতে পারবে যেকোনও বিশেষভাবে সক্ষম শিশু। সপ্তাহে একদিন করে আসবেন একজন স্পেশাল এডুকেটর এবং বাকি দুদিন তাঁরই সহকারী শিক্ষকরা সেই সমস্ত শিশুদের প্রশিক্ষণ দেবেন বলে জানা গিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই শান্তিপুরের বুকে এধরনের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খোলায় খুশি অভিভাবকরা। এখানে অটিজিম, স্পিচ থেরাপি, এডিএইচটি, বিভিন্ন ধরনের মানসিক সমস্যা সমাধানের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
মৈনাক দেবনাথ