বাড়ির এক সদস্যের কাছ থেকে জানা যায়, সেই সময়ে দীপান্বিতা অমাবস্যার রাতে মশাল, মোমবাতি, হ্যাজাক এর আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে উঠত সেই ভয়ঙ্কর ভক্তিভরা দেবী কালির মৃন্ময়ী মূর্তি আর সারা জমিদারি দালানটা এবং ঢাকের তালে মেতে উঠতো সারা পাড়া। আর সঙ্গে থাকত ভক্তদের প্রার্থনা ও মনস্কামনা পূরণের ইচ্ছা।
আরও পড়ুন: টাটাকে তাড়িয়েছে সিপিএম, পঞ্চায়েতের আগে মমতার দাবিতে সুচারু কৌশল!
advertisement
দে বাড়ির কালি পূজার অনেক নিয়ম রীতি রয়েছে। রথের দিন মা'এর পাট পুজো করার পর কুমোর বাড়িতে দিয়ে আসা হয়। পুজোর আগের দিন রাতের বেলায় বাড়ির বড় বউ কে বরণ করার ডালা সাজাতে হয়। এ বাড়ি তে মা বারবেলা অর্থাৎ দুপুর ১২ টা বেজে গেলে বেদি থেকে উঠতে চান না। পূজার দিন সকালে ঢাকি বরণ করার পর 'শ্রী' আনয়ন করা হয়। দক্ষিণা স্বরূপ কুমোর কে ভুজ্য দান করা হয়। বাড়ির বয়োজ্যেষ্ঠ বউ আগমনের বরণ করেন প্রথম।
আরও পড়ুন: বিরাট আশঙ্কা! কালীপুজো এবার তছনছ হতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে, জারি হচ্ছে বড় নিষেধাজ্ঞা
পঞ্চশষ্য ছিটিয়ে বেদীতে তোলা হয় মা কে। রাতের বেলায় মা এর পুজো শুরু হওয়ার আগে লক্ষী পুজো করা হয়। এর মানে অলক্ষীকে বিদায় দিয়ে লক্ষ্মীকে ঘরে আনা। মায়ের আরতিও দেখার মতো। আরতির সময় ১০৮টি মাটির প্রদীপ জ্বালিয়ে আরতি নিবেদন করা হয়। মনস্কামনা পূরণের ইচ্ছায় হোম - ধূঁনা পোড়ানো ইত্যাদি সব ক্রিয়া-কর্ম করা হয়।
উল্লেখ্য যে এই মাকে কোনো রকম অন্নভোগ নিবেদন করা, বলি দেওয়া হয় না। ফল,নানাবিধ মিষ্টান্ন, চিড়ের সামগ্রী এছাড়াও নানারকম ফল দিয়ে তৈরি সুদৃশ্য ১০৮ নৈবেদ্য আরও অনেকরকম নৈবেদ্য মা কে নিবেদন করা হয়।
পরদিন বিকালে বাড়ির সকল বউয়েরা মৎসমুখী করে মাকে বিদায় বরণ করে এবং সিঁদুর খেলা হয়। এরপর মা বাড়ির সকলের মন বিষণ্ণ করে নিরঞ্জনের উদ্দেশ্যে রওনা হন। অপেক্ষায় থাকে গোটা এক বছরের পরিবারের সদস্যরা।
মৈনাক দেবনাথ