মালদহ শহরের চিন্তামণি চমৎকার প্রাথমিক বালিকা স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এমন ভাবনা বাস্তবে রঙ পাচ্ছে। স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা ও পড়ুয়াদের যৌথ সাহায্যে, সেজে উঠছে স্কুলের পুরানো,জরাজীর্ণ দেওয়াল।মালদহ শহরে ১৯৩২ সালে স্থাপিত ইংরেজবাজার শহর-১চক্রের অন্তর্গত, চিন্তামণি চমৎকার বালিকা প্রাথমিক স্কুল।
শহরের প্রাচীন এই স্কুলকে নতুনভাবে সাজিয়ে তোলার ভাবনাটা শুরু হয়েছিল কিছুদিন আগেই। শুরু হয় পরিকল্পনা, হিসেব নিকেশ, দেখা যায় কোন পেশাদার শিল্পীদের দিয়ে এই কাজ করাতে গেলে বহু অর্থ ব্যয় হবে।একটা ছোট প্রাথমিক স্কুলের পক্ষে এই ধরনের ব্যয় বহন করা কার্যত অসম্ভব। এখানেই শিক্ষকরা কিছুটা হতাশ হয়ে যান। কিন্তু হঠাৎই এই অন্ধকারের মধ্যেই একটা রুপালি রেখার মতো আশা নিয়ে এগিয়ে আসে, স্কুলের খুদে পড়ুয়ার। তাদের আবদার স্কুলের দেওয়ালে তারাও ছবি আঁকবে। ওরা সবুজ, নতুন প্রাণ উৎসাহ উদ্দীপনায় টগবগ করছে। তাই তাদের এই আবেগ জড়ানো আবদারকে উপেক্ষা করতে পারেনি স্কুল কর্তৃপক্ষ।'
advertisement
শহরের কিছু সহৃদয় শিল্পীরাও এগিয়ে আসেন সাহায্যের জন্য। পড়ুয়া থেকে শিক্ষক- শিক্ষিকা ও শিল্পীদের যৌথ প্রচেষ্টায় শুরু হয় স্কুল সাজানোর কাজ। ধীরে ধীরে বদলে যেতে থাকে, স্কুলের প্রাচীন জরাজীর্ণ দেওয়াল গুলি। রং ওঠা প্লাস্টার ঘষা দেওয়াল গুলির জায়গা নেয় রংবে রঙের বাহাড়ি ছবি।আর এই ছবিকে মাধ্যম করে উঠে আসে সমাজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বার্তা।'গাছ লাগাও প্রাণ বাঁচাও', 'প্রচন্ড গরমে পশুপাখিদের জলদান', 'জলের অপচয় রোধ', 'বন্ধুদের সঙ্গে বিবাদ নয় চাই সহমর্মিতা',মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি জীবন্ত হয়ে ধরা দেয় শিশুদের সামনে। যা সহজেই দাগ কেটে যায় শিশুমনে।
প্রধান শিক্ষক সন্দীপন দেবনাথ জানিয়েছেন,আমাদের স্কুলে অনেক পুরনো দেওয়ার ছিল। সেগুলিকে রং করার পরিকল্পনা একটু অন্যভাবে করার চিন্তা ভাবনা করি। সেখান থেকেই এই পরিকল্পনা।পুরনো স্কুল ভবন নতুন রূপে সেজেছে।খুশি শিশুরাও।আনন্দদায়ক পাঠদানের মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন কঠিন বিষয় গুলিকে স্কুলের শিক্ষকরা যেভাবে প্রকাশ্যে তুলে এনেছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়।এমনকি শিশুদের পক্ষেও ভালো।
হরষিত সিংহ