বীরভূমের সিউড়ি থানার অন্তর্গত ছয় নম্বর ওয়ার্ডের মল্লিকগুনো পাড়ার সৃজনী বিশ্বাস নামে ওই কলেজছাত্রী এমন প্রতারণার সম্মুখীন হয়েছেন। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি সাইবার সেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। সাইবার সেল (Cyber Cell) পুলিশ ইতিমধ্যেই এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে সূত্র মারফত।
advertisement
আরও পড়ুন Mother missing: 'মা-কে খুঁজে দিন...' হন্যে হয়ে অভাবী ছেলে খুঁজে চলেছেন দিনের পর দিন
ঘটনা সম্পর্কে প্রতারিত ওই কলেজ ছাত্রীর থেকে জানা গিয়েছে, তার কাছে একটি পুরাতন দু'টাকার নোট ছিল। পুরাতন নোট কেনাবেচা হয় এমন একটি ওয়েবসাইটে ওই নোটের ছবি তুলে বিক্রির জন্য পোস্ট করেন। ওই ওয়েবসাইটে এমন নোট কেনাবেচার (Old Rupee Sell) জন্য পোষ্ট করার ক্ষেত্রে ইমেল সহ বিভিন্ন তথ্য দিতে হয়। ওই কলেজছাত্রী তার কাছে থাকা নোটের দাম রাখেন ভারতীয় মুদ্রায় এক লক্ষ টাকা।
এই পোস্ট করার কিছুক্ষণের মধ্যেই তার ইমেল আইডিতে আমেরিকার নামের সাথে সামঞ্জস্য থাকা কোন এক ব্যক্তি তাকে মেল করেন। জিজ্ঞেস করা হয় ওই নোটটি তার কাছে এখন রয়েছে কিনা? ওই কলেজ ছাত্রী জানান, তার কাছে ওই নোটটি রয়েছে এবং সেটি নিতে হলে এক লক্ষ টাকা দিতে হবে। মেল করা ওই ব্যক্তি রাজি হন এবং ওই ব্যক্তি তার একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর দিয়ে সেখানে সেই নোটের ছবি তুলে পাঠাতে বলেন।
এত দূর পর্যন্ত সব ঠিকঠাক থাকলেও ওই কলেজ ছাত্রী নোটের ছবি তুলে পাঠানোর পর মেল করা ব্যক্তি ব্যাঙ্ক অফ আমেরিকার কোন রসিদের এক লক্ষ পাঁচ হাজার টাকার একটি স্ক্রিনশট পাঠান এবং বলেন এই পাঁচ হাজার টাকাটা আপনাকে পাঠাতে হবে। কারণ হিসাবে ওই ব্যক্তি দাবি করেন, মার্কিন ডলার ভারতীয় মুদ্রায় রূপান্তরিত করার জন্য আগেই পাঁচ হাজার টাকা দিতে হবে।
প্রতারণার শিকার (Fraud) হওয়া ওই কলেজ ছাত্রী এই কথা শুনে সেই টাকা ইউপিআই-এর মাধ্যমে পাঠিয়ে দেন। এরপর ধাপে ধাপে নানান বাহানায় ওই কলেজ ছাত্রীর থেকে টাকা লুট করার প্রক্রিয়া শুরু হয় বলে অভিযোগ। পরবর্তীতে ৮১০০ টাকা দাবি করা হয়। এরপর ১৫৩০০ টাকা, এরপর ২২,০০০ টাকা সহ আরও কিছু টাকা চাওয়া হয়। বিভিন্ন চার্জ বাবদ এই সকল টাকা চাওয়া হয় এবং প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিশ্বাসযোগ্যতার জন্য ব্যাঙ্ক অফ আমেরিকার নামের মেল থেকে মেল আসতে থাকে ওই কলেজ ছাত্রী ইমেলে। শেষমেষ ওই কলেজছাত্রীর থেকে ৩৭,০০০ টাকা দাবি করা হয়। যদিও সেই টাকা ওই কলেজ ছাত্রী দিতে পারেননি বলে জানিয়েছেন। এই সকল প্রতিটি অঙ্কের টাকা দেওয়ার সময় বলা হয়, পুরাতন নোটের মূল্য আসার সময় সমস্ত টাকা ফেরত আসবে।
মোটের ওপর ওই কলেজ ছাত্রীকে একপ্রকার ফাঁদে ফেলে এমন বিপুল অঙ্কের টাকা নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। তবে বিশেষজ্ঞরা এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার বার্তা দিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, "কোন জায়গা থেকে টাকা পাওয়ার জন্য কেন আগে থেকে টাকা পাঠাতে হবে? এমন ঘটনার সম্মুখীন হলেই জানবেন প্রতারণার ঘটনা ঘটতে পারে।"
মাধব দাস