নয়ন ঘোষ, দুর্গাপুর, পশ্চিম বর্ধমান : ছট পুজো উপলক্ষে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। বিশেষ করে পশ্চিম বর্ধমান জেলা, পূর্ব বর্ধমান জেলার সদর শহর এবং পুরুলিয়া সহ বিভিন্ন জায়গায় চলছে ছট পুজোর আয়োজন। হিন্দি ভাষাভাষী মানুষজন ছট পুজোর আনন্দে মেতে উঠবেন এই দুদিন। রবিবার ছট পুজো উপলক্ষে দুপুরের পর থেকে বেরোবে শোভাযাত্রা। তারপর ব্রতীদের দেখা যাবে বিভিন্ন জলাশয় এবং নদীর ঘাট গুলিতে। কিন্তু জানেন কি এই ছট পুজো আসলে কী? প্রথমেই আপনাদের জানিয়ে রাখব যে, এই ছট শব্দটি আসলে একটি অপভ্রংশ শব্দ। কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠীতে ছট পুজো পালিত হয়। এই ষষ্ঠী শব্দ থেকেই ছট বা ছটী শব্দটি এসেছে।
প্রাচীন রীতি অনুযায়ী, ছট পূজা মূলত পালিত হয় সূর্যদেব এবং তার স্ত্রী ঊষার আরাধনার জন্য। এই উষার আর এক নাম ছটী মাঈ। এবং সেই থেকেই উৎপত্তি হয়েছে ছট পুজোর। বিহার, ঝাড়খন্ড, উত্তরপ্রদেশ-সহ বিভিন্ন রাজ্যের মানুষ এই ছট পূজা পালন করেন। নেপালের একটি বিস্তীর্ণ অংশের মানুষ অংশগ্রহণ করেন এই পুজোয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে আরও বেড়েছে এই পুজোর পরিধি। এই পুজোর আরাধ্য দেবতা সূর্যদেব এবং তার স্ত্রী ঊষা।
আরও পড়ুন : প্রয়াত অভিনেত্রী সোনালি চক্রবর্তী, বিনোদন জগতে শোকের ছায়া
কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে দীপাবলি পালন হওয়ার পর, চার দিনের জন্য পালিত হয় ছট পুজো। তবে এই পুজোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিথি হল কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী। তবে এই পুজো চলে সপ্তমীর সকাল পর্যন্ত। এই পুজোর সবচেয়ে কঠিন নিয়ম রয়েছে ব্রতীদের জন্য। ব্রতীদের এই পুজোর সময় নির্জলা উপবাস রাখতে হয়। আর ছটপুজোর অন্যতম আকর্ষণ ঠেকুয়া, বিতরণ করা হয় সপ্তমীর সকালে অর্ঘ্য নিবেদনের পরে। কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে এই ব্রত পালিত হওয়ার জন্য নাম রাখা হয়েছে ছট।
আরও পড়ুন : অভিনেত্রী সোনালি চক্রবর্তীর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের, সমবেদনা জানালেন পরিবারকে
চারদিনের এই ব্রতের প্রথম দিনে যিনি ব্রত পালন করেন, তিনি বাড়িঘর পরিষ্কার করে স্নান সেরে শুদ্ধাচারে নিরামিষ ভোজন করেন। পরদিন থেকে উপবাস শুরু হয়। দিনভর নির্জলা থেকে উপবাস পালনের পর সন্ধ্যায় পুজোর শেষে ক্ষীরের ভোগ গ্রহণ করতে হয়। এই জন্য এই রীতির নাম খরনা। তৃতীয় দিনে নিকটবর্তী নদী বা জলাশয়ের ঘাটে গিয়ে অন্যান্য ব্রতীদের সঙ্গে অস্তগামী সূর্যকে অর্ঘ্য অর্থাৎ দুধ অর্পণ করা হয়। ব্রতের শেষ দিনে গঙ্গা ঘাটে গিয়ে উদীয়মান সূর্যকে অর্ঘ্যপ্রদানের পর উপবাসভঙ্গ করে মিষ্টান্ন, ক্ষীর, ঠেকুয়া, নাড়ু এবং আখ, কলা, মিষ্টি লেবু প্রভৃতি ফল খেয়ে উপবাস ভঙ্গ করতে হয় ও পরিচিত সকলকে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Chhath puja 2022, Festival