কালের নিয়মে বয়ে গেছে বহু ঝড় ঝাপটা। তবে সেকাল থেকে একাল শুলাটি রথের মেলা জমজমাট। রথ উপলক্ষে শুলাটি মাঠে মেলার আসর বসে ন’দিন যাবত। পুরনো ছন্দে জিলিপি, পাপড়, পেয়াজি, পাকা কাঁঠাল সেই সঙ্গে ছেলেবেলার মূল আকর্ষণ মাটির পুতুল মাটির খেলনা। শুলাটি রথে বিখ্যাত মাটির খেলনা এবং চারা গাছ।
advertisement
এই মেলায় ছোট বড় প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ টি দোকান বসে। তবে কয়েক বছর আগে পর্যন্ত মাটির খেলনা বা চারা গাছের পসরা বসত অনেক। বর্তমানে ৮-১০ জন মাটির জিনিস নিয়ে আসেন মেলায়। কয়েক জন আসেন চারা গাছ নিয়ে। মেলায় পসরা সাজিয়ে বিকেল থেকে শুরু হয় বেচাকেনা। পুরুষ মহিলা উভয়ে মেলায় এসে মাটির জিনিস বিক্রি করেন। মাটির হাড়ি, করাই, পাত্র, উনুন, শিল, নোড়া, হাতা, খন্তি, বোকাভার, মাটির পুতুল এবং মাটির তৈরি মূর্তি। এই সমস্ত জিনিস মেলার বেশ কিছুদিন আগে থেকে তৈরি করতে শুরু করেন বিক্রেতারা।
আধুনিক যুগে নানা রকমের রঙ বেরঙের খেলনার মাঝেও এই মেলায় ছোটোদের নজর কাড়ছে মাটির খেলনা। সারা বছরে এই মেলার অপেক্ষায় থাকেন বিক্রেতারা। বিক্রেতা গৌতম পাল যিনি প্রায় পঞ্চাশ বছর এই মেলায় আসছেন। মাটির জিনিস নিয়ে। গৌতম বাবু জানান, তখন এক হাঁটু জল কাদা পার করে বাবার সঙ্গে মেলায় আসতাম দোকান দিতে। তখন চাহিদাও ছিল বেশ।বিক্রেতা ছবি পাল জানান, নিজে হাতে মাটির খেলনা তৈরি করে নিয়ে এসেছি। প্রায় কুড়ি পঁচিশ বছর মেলায় আসছি। তিনি আরও জানান, যেমন আগে চাহিদা ছিল বর্তমানেও প্রায় একই রয়েছে চাহিদা।
আরও পড়ুন: মাছ ধরার ফাঁসে আটকে বিষধর কেউটে, জালে গন্ধগোকুল, তারপর…
শৈশবের মাটির খেলনা স্মৃতি খুঁজতে অনেকেই এই রথের মেলায় আসেন বলেও জানালেন কেউ।এ প্রসঙ্গে ঘোষ জমিদার বাড়ির সদস্য পিন্টু ঘোষ জানান, শুলাটি ঘোষ বাড়ির রথের মেলার ঐতিহ্য হল মাটির খেলনা এবং চারা গাছ। এই রীতি ২০০ বছর ধরে চলে আসছে। যে সমস্ত জিনিস অন্য কোথাও মেলে না তা এখানে মিলে তার টানেই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এসে হাজির হন মেলায়।
রাকেশ মাইতি