২০১৯ সালে উত্তর ২৪ পরগনার টিটাগড় পুরসভায় চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেখে আবেদন করেন চুঁচুড়া ষন্ডেশ্বরতলার চয়নিকা আঢ্য। জাতীয় স্তরের যোগাসন চ্যাম্পিয়ান ভালো অ্যাথলিট চয়নিকা প্লেয়ার্স কোটায় সেই চাকরির পরীক্ষা দিয়ে ইন্টারভিউ এ ডাক পান। ইন্টারভিউ এর পর চাকরি হয়ে যায় তার। ১১ নভেম্বর ২০১৯ সালে জয়েনিং লেটারও দেওয়া হয় পুরসভার তরফে।
advertisement
আরও পড়ুন: শুধু স্ত্রী নন, পরিবারের ১৩ জনের সরকারি চাকরি, সুজনকে নিয়ে আরও বিস্ফোরক অভিযোগ
তবে সেই চাকরি আর করা হলও কই! চয়নিকা বলছেন, এক পুলিশ কর্মী একদিন তাঁর বাড়িতে গিয়ে বলেন অয়ন শীলের অফিসে দেখা করতে। চাকরির ব্যাপারে কথা আছে। কথা মত চয়নিকা তাঁর বাবাকে নিয়ে চুঁচুড়া জগুদাসপাড়ায় অয়ন শীলের অফিসে গিয়ে দেখা করেন। অয়ন তাদের বলেন চাকরির জন্য পাঁচ লাখ টাকা দিতে হবে। চয়নিকা জানান তিনি তো অয়ন শীলের ক্যান্ডিডেট নন তাহলে কেন টাকা দেবেন। আর অত টাকা তার কাছে নেই। সেদিন ফিরে আসার পর অয়ন শীলের লোক তার সঙ্গে আবার যোগাযোগ করে এবং সল্ট লেকের অফিসে যেতে বলে। সল্টলেকের অফিসে বাবাকে নিয়ে গিয়েও ছিলেন চয়নিকা কিন্তু বেশ কয়েক ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকেও দেখা না পেয়ে ফিরে আসেন।
নিয়োগ তালিকায় তার ২২০ নম্বরে নাম ছিল চয়নিকা। রাতারাতি সেই তালিকা পরিবর্তন করে যারা ছিল না তাদের নাম ঢু্কিয়ে দেওয়া হয়। সন্দেহ, যারা টাকা দিতে পেরেছিল তাদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। আর চয়নিকার মতো যাঁরা নিজেদের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছিলেন তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অয়ন শীলের প্রায় একশো কোটির সম্পত্তির হদিশ। ইডি সূত্রে দাবি, এখনও পর্যন্ত অয়ন শীলের নামে-বেনামে একাধিক সম্পত্তির নথির সন্ধান মিলেছে, যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১০০ কোটি ছুঁই ছুঁই বলে দাবি ইডির। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ইতিমধ্যেই ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছে বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের ঘনিষ্ঠ প্রোমোটার অয়ন শীল।
তল্লাশিতে যে সমস্ত তথ্য সামনে এসেছে, তাতে যা বোঝা যাচ্ছে, এই অয়নের সল্টলেকের অফিসই ছিল নিয়োগ দুর্নীতির অন্য়তম আখড়া। আর পার্থ-অর্পিতা, গোপাল-হৈমন্তীর মতো এখানেও চর্চায় উঠে এসেছে আরও এক নারী চরিত্র। নাম শ্বেতা চক্রবর্তী। যিনি পেশায় মডেল হলেও কামারহাটি পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার। এই শ্বেতার নামেও মিলেছে বিপুল সম্পত্তি। এছাড়াও, ইডির নজরে রয়েছে অয়ন শীলের বাবা ও ছেলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও।
রাহী হালদার