বেঙ্গালুরু: মাতৃত্ব একটা সুখকর অনুভূতি। তবে মা হওয়ার এই সফরে ক্রমাগত ওঠা-পড়া থাকেই। তাই অনিশ্চয়তার সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকা বাঞ্ছনীয়। ভারতে ২০-৩০ শতাংশ মহিলাকেই উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ প্রেগন্যান্সির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। ফলে আজ এই বিষয়টি এবং এর প্রতিরোধের উপায় নিয়ে আলোচনা করছেন বেঙ্গালুরুর কাবেরী হাসপাতাল (ইলেকট্রনিক সিটি)-এর কনসালট্যান্ট-ওবেস্টেট্রিকস এবং গাইনিকোলজির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. দিব্যা আর।
হাই-রিস্ক প্রেগন্যান্সি কী?
এটা এমন এক ধরনের প্রেগন্যান্সি, যেখানে মা অথবা ভ্রূণ কিংবা উভয়ই উচ্চ ঝুঁকির আওতায় পড়েন। এটা এক ধরনের শারীরিক জটিলতার কারণে হয়।
কাদের ঝুঁকি বেশি?
এর জন্য মূলত জীবনযাপনের ধরন বা লাইফস্টাইলই দায়ী।
ধূমপান
অতিরিক্ত ওজন (বিএমআই ৩০-এর বেশি)
মাদক সেবন
মদ্যপান
মায়ের বয়স এবং পারিবারিক ইতিহাসও এই জটিলতার জন্য দায়ী।
জিনগত সমস্যার পারিবারিক ইতিহাস
মাল্টিপল প্রেগন্যান্সির পারিবারিক ইতিহাস
বয়স ৩৫ বছর কিংবা ১৮ বছরের নিচে
স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা থাকলেও ঝুঁকি বেশি।
উচ্চ রক্তচাপ
থাইরয়েড
ডায়াবেটিস
অ্যাজমা
মৃগীরোগ
অটো-ইমিউন রোগ
ক্যানসার
অঙ্গপ্রতিস্থাপন
যৌনবাহিত সংক্রমণ
ওজন কমানোর সার্জারি
প্রথম প্রেগন্যান্সির জেরে জটিলতাও দায়ী।
প্রি-এক্ল্যাম্পশিয়া
জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস
প্রিটার্ম লেবার অথবা ডেলিভারি
জন্মসংক্রান্ত ত্রুটি
সন্তানের বাড়-বৃদ্ধিতে সমস্যা
মাল্টিপল প্রেগন্যান্সি
প্রতিরোধের উপায়:
প্রিকনসেপশন কাউন্সেলিং:
মহিলাদের প্রেগন্যান্সি পরিকল্পনার ক্ষেত্রে সবার আগে এক জন ওবেস্টেট্রিসিয়ানের কাছে গিয়ে প্রিকনসেপশন কাউন্সেলিং করাতে হবে। বিশেষজ্ঞ হবু মা-বাবা ও তাঁদের পরিবারের পারিবারিক ইতিহাস, অসুস্থতা এবং আরও নানা বিষয় জেনে নেবেন। জীবনযাপনের ধরন পরিবর্তন করতে হবে কি না, সেই বিষয়েও আলোচনা করে নিতে হবে।
আরও পড়ুন: গর্ভবতী বলে রঙ খেলতে ভয়? নিশ্চিন্তে দোলে মাতুন এই নিয়মগুলি মেনে
প্রি-নেটাল জেনেটিক টেস্টিং:
বহু পরিবারেই জিনগত সমস্যা থাকে। এর জন্য জেনেটিক টেস্টিং করা বাঞ্ছনীয়। সন্তানের ঝুঁকি কিংবা ডাউনসিন্ড্রোমের মতো সমস্যা রয়েছে কি না, সেই বিষয়টাই জানা যাবে একাধিক পরীক্ষায়।
জীবনযাপনের ধরন পরিবর্তন:
ধূমপান এবং মদ্যপানের অভ্যেসে রাশ টানতে হবে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে এবং নিয়মিত এক্সারসাইজ করতে হবে। এ-ছাড়া প্রি-নেটাল ভিটামিন খেতে হবে।
চিকিৎসা:
সবার ক্ষেত্রে চিকিৎসা এক রকম নয়। আসলে চিকিৎসা কিংবা তার ধরন নির্ভর করে রোগের ধরনের উপরে। যার প্রভাব হবু মা এবং সন্তানের উপর পড়ে। বেশির ভাগ জটিলতাই প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করা সম্ভব। তাই নিয়মিত ভাবে প্রি-নেটাল কেয়ার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন: ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের দাপট দেশে! উপসর্গ দেখে চিনুন, কীভাবে সুরক্ষিত থাকবেন
সমস্যার বিষয়টা কখন বোঝা যাবে?
হাই-রিস্ক প্রেগন্যান্সির ক্ষেত্রে নিজের একটু বেশিই খেয়াল রাখতে হবে। নিম্নোক্ত সমস্যাগুলি দেখা গেলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া বাঞ্ছনীয়।
ভ্যাজাইনাল ব্লিডিং
মূত্রত্যাগের সময় যন্ত্রণা
বমি অথবা গা-বমি
ঝাপসা দৃষ্টি
তলপেটে যন্ত্রণা
অতিরিক্ত পরিমাণে সাদা ডিসচার্জ
জ্বর, ঠান্ডা লাগা, কাঁপুনি
নিজের ক্ষতি করার চিন্তা
আচমকাই হাত ও মুখে ফোলা-ভাব
রিস্ক ফ্যাক্টরগুলির বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। দেরি না-করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। এতে সমস্যা নির্ণয় করতেও সুবিধা হবে। আর মাতৃত্বের সফরও হবে সুন্দর।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Health, Health Care Tips, Pregnancy