Bengal Bjp: দুর্নীতি ইস্যুতে হাতে গরম আন্দোলন ছেড়ে কিশোর স্মরণে বিজেপি, প্রশ্ন দলেরই অন্দরে

Last Updated:

Bengal Bjp: আজ শিল্পী কিশোর কুমারের ৯৩ তম জন্মদিনে টালিগঞ্জে শিল্পীর মূর্তিতে মাল্যদান ও শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের দলীয় কর্মসূচি রয়েছে বিজেপির।

কিশোর স্মরণে বিজেপি
কিশোর স্মরণে বিজেপি
#কলকাতা: শিক্ষা দুর্নীতি ইস্যুতে আন্দোলনের মধ্যেই বিজেপির 'কিশোর স্মরণ'। বৃহস্পতিবার, ৪ অগস্ট, ভারতীয় সঙ্গীত জগতের মহিরুহ, কিংবদন্তী শিল্পী বাঙালির চিরপ্রিয় কিশোর কুমারের ৯৩ তম জন্মদিন পালন করবে বিজেপি। যদিও, বিজেপির এই কর্মসূচি নিয়ে ইতিমধ্যেই দলের অন্দরে টীকা-টিপ্পনী শুরু হয়ে গেছে। রাজ্য দফতরে বিজেপির সাংস্কৃতিক সেলের ওই কর্মসূচির পোস্টার দেখিয়ে দলেরই এক রাজ্য নেতা  ঘনিষ্ঠকে বললেন, "আসলে আমরা তো রাস্তাঘাটে দারুণ আন্দোলন করে সর্বত্র সাড়া ফেলে দিয়েছি। তাই আমাদের নেতৃত্বকে দিল্লিতে ডেকে অমিত শাহ, নাড্ডারা 'দারুন প্রশংসা' করেছেন। আবার, দ্বিতীয় দফায় গা ঘামানোর আগে, তাই একটু জিরিয়ে নেওয়া আর কী!"
এ রাজ্যে  বিজেপির কপাল থেকে 'বড় বাজারের পার্টি'-এই অবাঙালি তকমাটা মোছা যাচ্ছে না। পর্যবেক্ষকদের মতে,  ২০১৪ থেকে সেই তকমা মোছার কাজ সচেতন ভাবে শুরু হলেও, বিজেপির সংস্কৃতির সঙ্গে তাকে মানানসই করে তোলা যায়নি। ভোট এলে রবীন্দ্র বন্দনা থেকে শুরু করে বাঙালি সংস্কৃতি নিয়ে বিজেপির যে লাফালাফি সেটা বিজেপির ৩৬৫ দিনের সংস্কৃতির সঙ্গে খাপ খায় না। তাই এবার বাঙালির পার্টি হতে মরিয়া রাজ্য বিজেপি কিশোর কুমার স্মরণে৷
advertisement
advertisement
আজ শিল্পী কিশোর কুমারের ৯৩ তম জন্মদিনে টালিগঞ্জে শিল্পীর মূর্তিতে মাল্যদান ও শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের দলীয় কর্মসূচি রয়েছে বিজেপির। যদিও, সেই কর্মসূচি নিয়ে ইতিমধ্যেই আশঙ্কা প্রকাশ করে রাজনৈতিক চাপান - উতোর শুরু হয়েছে। দক্ষিণ কলকাতার জেলা সভাপতি সংঘমিত্রা চৌধুরীর অভিযোগ, "রাজ্য সরকার চায় না আমরা টালিগঞ্জে কিশোর কুমারকে শ্রদ্ধা জানাই। আমাদের সাংস্কৃতিক সেলের তরফে রুদ্রনীল ঘোষ সহ আরও অনেকে বেলা ১১ টায় মূর্তিতে মালা দিতে যাবেন। দেখা যাক কী হয়!"  যদিও, তৃণমূলের তরফে এই অভিযোগকে পাত্তা দেওয়া হয়নি। দক্ষিণ কলকাতা তৃণমূলের সভাপতি দেবাশীষ কুমার বলেন, ''ওখানে প্রতি বারের মতো এ বারেও রাজ্য সরকারের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন ও স্মরণ অনুষ্ঠান রয়েছে। সেই সময়ের পরে যে কেউ শিল্পীকে শ্রদ্ধা জানাতেই পারেন। এটা নিয়ে অযথা রাজনীতি করছে বিজেপি। "
advertisement
যাইহোক,  সকালের এই কর্মসূচি বাদ দিলে বিকালে সল্টলেক পূ্র্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্রে ( ইজেডসিসি)   বিজেপির কিশোর স্মরণ উপলক্ষে বড় মাপের আয়োজন।  সব ঠিকঠাক থাকলে, বলিউড কাঁপানো  বিনোদ রাঠোর ও তার সঙ্গী একঝাঁক শিল্পীদের মঞ্চে তুলে আসর বাজিমাৎ করতে চান অনুষ্ঠানের অন্যতম কারিগর বিজেপির সাংস্কৃতিক সেলের আহ্বায়ক রুদ্রনীল ঘোষ। যাকে সম্প্রতি, শিক্ষা দুর্নীতি ইস্যুতে কেন্দ্রীয় মিছিলের দিন রানি রাসমণির সভামঞ্চে,  'ও বুদ্ধিজীবী.. " নামক স্বরচিত কবিতা - গান গাইতে দেখা গেছে। সেই রুদ্রনীলই কিশোর কুমারের জন্য "কী উপহার সাজিয়ে দেব " শীর্ষক অনুষ্ঠানে তৃণমূলের  'বহিরাগত'  তকমা দেওয়া বিজেপিকে  বাঙালিয়ানায় সাজিয়ে  তোলার চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন।
advertisement
এটা ঠিক,  বাম আমলে  গণনাট্য, আইপিটিএ'র মত বামপন্থী শিল্পীদের পৃথক শাখা সংগঠন ছিল। বামপন্থী রাজনৈতিক মতাদর্শ প্রচারে, প্রতিবাদ, বিরোধীতায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইস্যুকে সামনে রেখে তাদের স্বতন্ত্র উপস্থাপনা ছিল বছরভর। কিন্তু, রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর  রাজ্যের সরকার পোষিত সংস্কৃতিতে আমূল পরিবর্তন এসেছে বলে মনে করেন রাজ্যের বুদ্ধিজীবীদের একাংশ। বিরোধীদের মতে, যা এক কথায় খেলা, মেলা, মোচ্ছবের সংস্কৃতি।
advertisement
রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের এক প্রাক্তন আমলার মতে, রবীন্দ্রনাথ থেকে উত্তম কুমার।  বিধানচন্দ্র রায়, থেকে আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্রের জন্মদিন পালন এবং স্মরনকে ঘিরে সরকারি অনুষ্ঠান ক্রমশই গুরুত্ব হারচ্ছে জনমানসে।  আর, বিজেপির এই নয়া উদ্ভাবনীতে বাঙালি চেতনার বিকাশ ভুলে বাঙালি সাজার মরিয়া চেষ্টাই স্পষ্ট হচ্ছে ক্রমশ।
রাজ্য বিজেপির সঙ্গে দলের মোর্চা ও শাখা সংগঠনগুলির সমন্বয় বরাবরই ভাল নয়। একমাত্র যুব মোর্চা ও মহিলা মোর্চাকেই বিজেপি  তার দলীয় কর্মসূচিতে গুরুত্ব দেয়। সাংস্কৃৃতিক সেলের মতো এই শাখা সংগঠনগুলিকে সাধারণত দোল, দুর্গোৎসবের মত বিজেপির ধর্মীয় ভাবধারার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ উৎসবের সময় দেখা যায়। এই সব কর্মসূচিকে দলীয় কর্মসূচি বলা হবে ক না তা নিয়েও বারবার ধন্দ প্রকাশ্যে এসেছে। তবে, এবার, সেই অবকাশ বা বিতর্ক অন্তত নেই। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের মতে,  ''রাজনৈতিক নেতা, কর্মীরা কি সারাদিন শুধু আন্দোলনই করবে?  তাদেরও তো জীবনে বিনোদন বলে কিছু থাকা দরকার আছে। সেটা যদি শিল্পী কিশোর কুমারকে স্মরণ করে হয়, তাতে ক্ষতি কী? "
advertisement
কিন্তু, দলেরই একাংশ বলছে, পার্থ ও শিক্ষা দুর্নীতির মতো হাতে গরম ইস্যু পেয়েও, সরকার বিরোধী আন্দোলনে তেমন দাগ কাটতে পারছে না দল। দিল্লিতে অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার সঙ্গে সুকান্ত মজুমদারের বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের এই মনোভাব ইতিমধ্যেই প্রকাশ পেয়েছে। শাহের সঙ্গে বৈঠকে অসন্তোষের আঁচ পেয়েই নাকি তড়িঘড়ি কলকাতায় রানি রাসমনি রোডে, ৭ দিন ব্যাপি ধর্না শুরু করতে নির্দেশ দেওয়া হয় রাজ্যকে।
advertisement
এই ধর্ণায় রাজ্য বিজেপির  বিধায়কদের উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দেন বিধানসভায় বিজেপির পরিষদীয় দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সংসদের বাদল অধিবেশন শেষ হলে, স্বাধীনতা দিবসের পরেই এই ইস্যুকে হাতিয়ার করে ব্লক স্তর থেকে জেলায় জেলায় জোরদার আন্দোলনে দলের সব সাংসদ ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে অংশ নিতে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। তার মধ্যে বিজেপির এই কিশোর স্মরণকে ঘিরে কার্যত বড় মাপের সান্ধ্য জলসার আসর সাজিয়ে বসা  দলের যুবকদের কতটা আন্দোলনমুখী করতে পারল, সেটা সময় বলবে।
Click here to add News18 as your preferred news source on Google.
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷  News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে  ক্লিক করুন এখানে ৷ 
view comments
বাংলা খবর/ খবর/কলকাতা/
Bengal Bjp: দুর্নীতি ইস্যুতে হাতে গরম আন্দোলন ছেড়ে কিশোর স্মরণে বিজেপি, প্রশ্ন দলেরই অন্দরে
Next Article
advertisement
MGNREGA: মনরেগাকে ধ্বংস করেছে মোদি সরকার! কোটি কোটি কৃষক শ্রমিকদের স্বার্থে আঘাত, কেন্দ্রের নয়া ‘কালো আইনের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক সনিয়ার
মনরেগাকে ধ্বংস করেছে মোদি সরকার! ‘কালো আইনের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক সনিয়ার
  • মনরেগা প্রকল্পের নাম বদল নিয়ে এবার মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সরব সোনিয়া গান্ধি

  • কংগ্রেসে নেত্রীর দাবি, মনরেগা প্রকল্পকে কার্যত ধ্বংস করে দিল বিজেপি

  • প্রকল্পকে বদলের আইনকে ‘কালো আইন (ব্ল্যাক ল)’ বলে উল্লেখ্য সোনিয়ার৷

VIEW MORE
advertisement
advertisement