Bankura News: মল্লগড়ের শিল্পীর হাত ধরে আত্মপ্রকাশ নবাবী বালুচরী শাড়ি 'অরুণিমা'-র
- Published by:Soumabrata Ghosh
Last Updated:
বিষ্ণুপুরের বিখ্যাত এবং জনপ্রিয় শাড়ি হলো বালুচরী শাড়ি। এবার দুর্গাপুজোয় বালুচরী শাড়ীর নতুন সম্ভার নিয়ে হাজির 'অরুণিমা'। এই শাড়ির মধ্য দিয়ে সমাজকে বিশেষ বার্তা দিচ্ছেন বর্তমান প্রজন্মের বিষ্ণুপুরের বিখ্যাত বালুচরী শিল্পী অমিতাভ পাল।
#বাঁকুড়া : বিষ্ণুপুরের বিখ্যাত এবং জনপ্রিয় শাড়ি হলো বালুচরী শাড়ি। এবার দুর্গাপুজোয় বালুচরী শাড়ীর নতুন সম্ভার নিয়ে হাজির 'অরুণিমা'। এই শাড়ির মধ্য দিয়ে সমাজকে বিশেষ বার্তা দিচ্ছেন বর্তমান প্রজন্মের বিষ্ণুপুরের বিখ্যাত বালুচরী শিল্পী অমিতাভ পাল। এই বালুচরী শাড়ির সুতোর বয়নে বিভিন্ন প্রাকৃতিক জীব যেমন বাজপাখি, বার্তা প্রেরক পায়রা,বনের হরিণ এগুলিকে সুন্দরভাবে ব্যক্ত করা হয়েছে। বালুচরী পশ্চিমবঙ্গের প্রসিদ্ধ শাড়ি এবং জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত শিল্পকর্ম। এই শাড়ি ভারতের ভৌগোলিক অস্তিত্বের ইঙ্গিত দেয়। বালুচরী শাড়ির নামের মধ্যেই রয়েছে আভিজাত্য। এই শাড়ির প্রতিটি সুতোর টানে যেন নিজস্ব একটা কথন আছে, কোথাও ফুটে উঠেছে টেরাকোটার কারুকাজ তো কোথাও মহাভারতের গল্প কোথাও আবার আদিবাসী নৃত্য৷
বাঙালির শাড়ির সম্ভারে বছরের পর বছর ধরে স্বমহিমায় বিরাজমান এই বালুচরী শাড়ি নবাবী এই শাড়িগুলি করতে সময় লাগে কখনো পনেরো দিন আবার কখনো এক মাস। এক একটা শাড়ির দাম ছয় হাজার টাকা থেকে শুরু করে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত রয়েছে। জানা যায় এই বালুচরী শাড়ির জন্ম হয়েছিল মুর্শিদাবাদ জেলার জিয়াগঞ্জের নিকটবর্তী অধুনালুপ্ত বালুচর নামক স্থানে। যদিও বালুচরের সঠিক অবস্থান নিয়ে ভিন্ন মত রয়েছে। জিয়াগঞ্জেরই পূর্বনাম ছিল বালুচর সেই বালুচর নাম থেকেই এসেছে বালুচরী নাম৷ সেই সময় নবাবরা তাঁদের বেগমদের জন্য শাড়ি বানাতেন বালুচরের শিল্পীদের দিয়ে। কালক্রমে গঙ্গাগর্ভে হারিয়ে যায় এই বালুচর প্রদেশ ৷
advertisement
এরপর কালের নিয়মে হারিয়ে যায় বালুচরী শাড়ি, মাঝে পেরিয়ে যায় অনেকটা সময়। দীর্ঘদিন পর এর কিছু নকশা শুভ ঠাকুরের হাত ধরে বিষ্ণুপুরের বিখ্যাত কারুকার্য শিল্পী অক্ষয়দাস পাঠরাঙার হাতে আসে ৷ তার পর বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের মল্ল রাজাদের পৃষ্টপোষকতায় বালুচরী শিল্পের নবজাগরণ ঘটে। প্রতিবছরের মতো এবছরও দুর্গাপূজোয় মহিলাদের নবাবী সাজে সাজাতে বালুচরী শাড়ির নতুন ডিসাইন 'অরুণিমা' নিয়ে হাজির বর্তমান প্রজন্মের বিষ্ণুপুরের বিখ্যাত বালুচরী শিল্পী অমিতাভ পাল। তিনি এই শাড়ির সখ করে শাড়ির নাম রেখেছেন 'অরুণিমা'।
advertisement
advertisement
আরও পড়ুনঃ কঙ্কাল উদ্ধারকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য গ্রামে
এই শাড়িতে সুতোর কাজ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক অবক্ষয় বন্ধ করার আবেদন করা হয়েছে। পাখিকে খাঁচায় বন্দী,সাপ খেলা দেখানো,গাছ কাটা,বাঁদর খেলা দেখানো এই চারটি সামাজিক কালিমাকে দূর করতে আবেদন জানিয়েন শিল্পী। এর পাশাপাশি এই 'অরুণিমা' শাড়িতে সুন্দর করে সুতোর বয়নে বিভিন্ন প্রাকৃতিক জীব যা অবলুপ্তির পথে যেমন বাজপাখি,বার্তা প্রেরক পায়রা,বনের হরিণ এগুলির কোথাও সুন্দরভাবে ব্যক্ত করা হয়েছে।
advertisement
আরও পড়ুনঃ গ্রামে ঢুকে রীতিমত তান্ডব দাতাল হাতির! আতঙ্কে নিদ্রাহীন গ্রামবাসীরা
শাড়িটির বর্তমান বাজার মূল্য কুড়ি হাজার টাকা নির্ধারন করা হয়েছে। শুধু তাই নয় সাধারণ মানুষদের জন্য বালুচরী ৭২০০ টাকা থেকে শুরু করে তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত। শিল্পীর নিপুন হাতের ছোঁয়ায় যেন প্রাণ এই বালুচরী শাড়ি। ইতিমধ্যেই বিষ্ণুপুর মল্লগড়ের এই বালুচরী শাড়ি রাজ্যের গণ্ডি পারিয়ে বিদেশেও পাড়ি দিয়েছে। চাহিদাও রয়েছে বর্তমান বাজারে এই নবাবী শাড়ির ব্যাপ্তি যদি যাতে আরো সুদীর্ঘ হয় এই আশায় বুক বাঁধছেন শিল্পীরা।
advertisement
Joyjiban Goswami
view commentsLocation :
First Published :
September 19, 2022 6:29 PM IST